মনের সাফল্যই বড় সাফল্য

‘পৃথিবী বদলে গেছে, যা দেখি নতুন লাগে’ - প্রায় প্রতিদিনই সম্ভবত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এই গান গাইতে থাকেন।

‘পৃথিবী বদলে গেছে, যা দেখি নতুন লাগে’- প্রায় প্রতিদিনই সম্ভবত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এই গান গাইতে থাকেন। কেননা তাঁরা যেন বদলে যাওয়া ক্রিকেট দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে দৌড়াতে পারেননা। হোঁচট খান বারে বারে। টি-টোয়েন্টিতে এখন প্রায় ৩০০ রান হচ্ছে। অন্তত ২০০ রান নিয়মিত। বাংলাদেশ এখনও টেনেটুনে ১৫০ করতে পারলেই যেন খুশি।

বাংলাদেশের ব্যাটারদের স্ট্যান্ডার্ডটাই এমন। একটা তথ্য দেই, এই তো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৩০০ রানের মাইলফলক পার করেছেন তাওহীদ হৃদয়। লাল-সবুজ জার্সি গায়ে এমন কৃতীত্ব আছে আরও অনেকের, প্রায় ১৮ জনের। তাদের মধ্যে স্ট্রাইকরেট বিবেচনায় হৃদয় রয়েছেন দুই নম্বর পজিশনে।

হৃদয় ১৬ ম্যাচে ৩০১ রান করেছেন ১৩৩.৭৭ স্ট্রাইকরেটে। আর তার উপরে অবস্থান করছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।  ১৩৬.১০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট চালিয়েছেন মাশরাফি। তিনি যে ব্যাটার নন, তা বোধকরি না বললেও চলে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সংস্কৃতি। ব্যাটাররা যখন ১৩০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করবেন বলে মনস্থির করেছেন, তখন, বাকিরা ছুটছে ২০০ স্ট্রাইকরেটের দিকে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দলের টপ অর্ডাররা দায়িত্ব নিতে শুরু করেছে। তাঁরা এখন দলকে বিধ্বংসী শুরু এনে দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের টপঅর্ডার জিম্বাবুয়ের মত খর্ব শক্তির দলের বিপক্ষে খাবি খায় প্রতি নিয়ত। এমনকি দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর স্ট্রাইকরেট কিংবা ইম্প্যাক্ট-কে চাইলেই প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়।

৩৩ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা শান্তর স্ট্রাইকরেট ১১১.৩। দৃষ্টিকটু! বিষয়টা আরও বেশি অসহ্য ঠেকবে যখন আপনি জানবেন আসন্ন বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন স্ট্রাইকরেটের দ্বিতীয় অধিনায়ক তিনি। স্রেফ উগান্ডার অধিনায়ক রয়েছেন তার উপরে। বলে রাখা ভাল ব্রায়ান মাসাবা একজন বোলার। দুর্দশার চিত্র নিশ্চয়ই এখানেই থেমে থাকে না।

জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজ চলমান। সেই সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাটিং ধরণও বিতৃষ্ণার জন্ম দিয়েছে। এই সিরিজের জয়-পরাজয় মোটেও মুখ্য নয়। রীতিমত এটা হওয়া উচিত প্রস্তুতি সিরিজ। প্রতিপক্ষের শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকটাই। এমন এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও আগে ব্যাটিং করবার মত সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টকে।

বড় রান আদোতে বাংলাদেশের ব্যাটাররা করতে পারেননি কি-না তা পরখ করবার প্রচেষ্টাই করছে না বাংলাদেশ। দু’টো ম্যাচই জিতেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ১৫ ওভার দুই বলে ১২৬ অবধি পৌঁছায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৯ তম ওভারে গিয়ে জয় পায় শান্তর দল। সেদিন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩৯।

এই যে নিদারুণ বাজে ব্যাটিং প্রদর্শন- তার স্বপক্ষে আদোতে কোন যুক্তি দাড় করানো কি যায়? সম্ভবত যায় না। বাংলাদেশ দল এটাকেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ভেবে নিচ্ছে। এভাবেই বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ভাল কিছু করবার প্রত্যাশা করছে। সম্ভবত করছেও না, কেননা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত যে নিজের স্বপ্ন মনে মনেই রাখতে পছন্দ করেন। মনের সাফল্যই বড় সাফল্য।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...