নিউজিল্যান্ডের ‘আন্ডাররেটেড’ নায়ক

১৯৯২ বিশ্বকাপে দীপকের দায়িত্বটা ছিল মূলত প্রতিপক্ষের রানের চাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। সে দায়িত্ব তিনি পালন করেছিলেন অক্ষরে অক্ষরে। বল হাতে ৯ ম্যাচে মাত্র ৮ উইকেট পেলেও ওভার প্রতি রান দিয়েছিলেন মাত্র ৩.১ হারে! জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ‘ক্লোজ’ ম্যাচে ১০ ওভার বল করে মাত্র ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে জিতেছিলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

১৯৯২ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক মার্টিন ক্রোর হাত ধরে ওয়ানডে ক্রিকেটে এক নতুন ধারার সূচনা হয়েছিল। ওয়ানডেতে প্রথম বারের মত একজন স্পিনারকে দিয়ে বোলিং ওপেন করিয়েছিলেন তিনি। আধুনিক ক্রিকেটে সেটা এক বৈপ্লবিক ঘটনা।

ইতিহাস রচনাকারী সেই স্পিনারের নাম দীপক প্যাটেল। পুরো নাম দীপক নার্শিভাই প্যাটেল। তাঁর পরিচয় হল তিনি সাবেক অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার। ওই টুর্নামেন্টে বল হাতে ব্ল্যাক ক্যাপদের অন্যতম প্রধান ভরসার জায়গা ছিলেন যিনি। নাম  শুনেই বুঝতে পারছেন, এই ভদ্রলোক আদতে ভারতের গুজরাটের বংশদ্ভুত।

১৯৯২ বিশ্বকাপে দীপকের দায়িত্বটা ছিল মূলত প্রতিপক্ষের রানের চাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। সে দায়িত্ব তিনি পালন করেছিলেন অক্ষরে অক্ষরে। বল হাতে ৯ ম্যাচে মাত্র ৮ উইকেট পেলেও ওভার প্রতি রান দিয়েছিলেন মাত্র ৩.১ হারে! জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ‘ক্লোজ’ ম্যাচে ১০ ওভার বল করে মাত্র ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে জিতেছিলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

৭৪ ওয়ানডেতে ৪৫ আর ৩৭ টেস্টে ৭৫ উইকেটের ক্যারিয়ার পরিসংখ্যানটা সাদামাটা দেখালেও নব্বই দশকে নিউজিল্যান্ডের উত্থানের পেছনে এই মানুষটির অবদান কোন অংশে কম ছিল না। প্রায়ই বল হাতে ইনিংসের সূচনা করতেও দেখা যেত তাঁকে।

দীপক প্যাটেল ছিলেন মূলত লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান। সে হিসেবে তাঁর ব্যাটিং রেকর্ড মন্দ না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একবার ৫৮ বলে ৭১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন। ক্যারিয়ারে এই দু’বারই ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান তিনি।

প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৬ টি সেঞ্চুরির মালিক দীপকের টেস্ট গড় ২১। হাফ সেঞ্চুরি আছে পাঁচটি।

মজার ব্যাপার হল, টেস্টে ৯৯ রানে ‘রান আউট’ হওয়া বিরল দুর্ভাগা ব্যাটসম্যানদের একজন হলেন দীপক প্যাটেল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাবেক এই অফ স্পিনারের জন্ম ১৯৫৮ সালের ২৫ অক্টোবর। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

১৯৯৭ সালে অবসরের পর তিনি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ক্রিকেট কোচিংকে। পাপুয়া নিউগিনি জাতীয় দলের কোচ ছিলেন বেশ কিছুদিন। তিনি আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের স্পিন পরামর্শক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

দীপকের ভাই কৌশিক যমুনাদাস প্যাটেলও ক্রিকেটার ছিলেন। যদিও, বড় ভাইয়ের মত পরিচিত কোনো মুখ ছিলেন না তিনি। মাত্র দু’টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচেই থেমে যায় তাঁর ক্যারিয়ার। তবে, কৌশিক এখন গুজরাটের রাজনীতির পরিচিত মুখ। তিনি গুজরাটের বিধানসভার সদস্য ছিলেন তিন মেয়াদে।

তবে, দীপক-কৌশিকদের চাচাতো ভাই হার্ষাদ বল্লভভাই প্যাটেল খেলেছেন ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে। দল ছিল উস্টারশায়ার। একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ছাড়াও তাঁর ঝুলিতে ছিল ১৩ টি লিস্ট এ ম্যাচ। করেছেন দু’টি হাফ সেঞ্চুরি। তবে, নিউজিল্যান্ডের জিতান প্যাটেলের সাথে এই প্যাটেল ভাইদের  কোনো সম্পর্ক আছে, মনে করার কোনো কারণ নেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...