প্রায় এক দশক পর ফেরা। বাংলাদেশ ইশ সোধির রক্তের সাথে কোন ভাবেই সম্পৃক্ত নয়। তবুও যেন আত্মার এক টান রয়ে গেছে। যেখান থেকে শুরু সেখানটায় ফিরতে পারাটা নিশ্চয়ই প্রচণ্ড রোমাঞ্চকর। ইশ সোধির ক্ষেত্রেও হয়ত সেই রোমাঞ্চই কাজ করেছে।
২০১৩ সালে তিনি এসেছিলেন এই বাংলায়। তখন ক্যারিয়ারটা শুরু হয়নি তাঁর। তরুণ সোধি দু’চোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা করেছিলেন নিউজিল্যান্ড থেকে। তার অভিষেক হবে কিনা, সে নিশ্চয়তা ছিল না বিন্দুমাত্র।
বছর দশেক আগে এমনই কোন শরতের শুভ্রতার মাঝেই সাদা জার্সি গায়ে নেমেছিলেন ইশ সোধি। একেবারেই তরুণ এক লেগ স্পিনার তখন তিনি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেক তার। তবে হোম অব ক্রিকেটে নয়। চট্টলার মাটিতে একেবারে সমুদ্রের কোল ঘেষা স্টেডিয়ামে তার অভিষেক।
দূর দিগন্তে মিলিয়ে যাওয়া সমুদ্র থেকে ধেয়ে আসা হিমেল অক্সিজেনে ফুসফুস পরিপূর্ণ করেন। স্বপ্ন বিভোর চোখ জোড়া যেমন ছলছল করে, ঠিক তেমনই কিছুই হয়ত সেদিন অনুভূত হয়েছিল ইশ সোধির।
এই বাংলা অবশ্য কাউকেই নিরাশ করে না। অদৃশ্য এক মায়ার বাঁধনে বেঁধে ফেলে বিলেত থেকে আসা সকলকেই। তাইতো প্রতিটি প্রত্যাবর্তনই সৃষ্টি করে রোমাঞ্চকর কোন এক স্মৃতির। এদফা ইশ সোধির সাথে ঠিক তেমনটিই ঘটেছে। তিনি বাংলাদেশে ফিরতে পেরে যেন বেশ আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত।
তিনি তার ফেসবুক পেজে তেমনই তো ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘২০১৩ সালে অভিষেক হওয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশে ফেরত এলাম। আপনি যখন আনন্দে থাকেন তখন সত্যিই সময় উড়ে যায়।’
অভিষেকের পর থেকে যেন আনন্দের দিনই কেটেছে ইশ সোধির। যেখান থেকে আনন্দের শুরু, সেথায় ফেরাটাও যেন আন্দোলিত করে হৃদয়কে।
অভিষেক সেই টেস্টে মোট ৩ উইকেট শিকার করেছিলেন ইশ সোধি। প্রথম ইনিংসে নাসির হোসেন আর রুবেল হোসেনের উইকেট বাগিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে তার শিকারে পরিণত হন মার্শাল আইয়ুব। ঠিক সেখান থেকেই শুরু।
এরপর ১৬৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনি ব্ল্যাকক্যাপসদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নামের পাশে আছে ২৩৫টি উইকেট। বাংলাদেশের বিপক্ষে এবারের সিরিজটি আরও খানিকটা রঙিন করেই রাখতে চাইবেন তিনি।
তাইতো মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে অনুশীলনে মত্ত ইশ সোধি। দ্বিতীয় ফেরার স্মৃতিটা যেন পরের বার আরও রোমাঞ্চিত আর পুলকিত করতে পারে, সে চেষ্টাই হয়ত চালাবেন তিনি।
এবারের দলে তার দায়িত্বটাও বেশি। দলের নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনেকেই থাকছেন না বাংলাদেশের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজে। কারণটাও বেশ স্বাভাবিক। সামনেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ২৬ তারিখ শেষ ওয়ানডে শেষ হওয়া মাত্রই দু’দল রওনা হবে ভারতের উদ্দেশ্যে। সেখানে গিয়ে আবার খেলতে হবে প্রস্তুতি ম্যাচ।
তাছাড়া বিশ্বকাপে রয়েছে নয়টি ম্যাচ। ঠিক সে কারণেই উভয়ই দলের বেশ কিছু খেলোয়াড় রয়েছেন বিশ্রামে। তাইতো ইশ সোধিদের একটু বাড়তি দায়িত্বই নিতে হবে। অধিনায়ক লোকি ফার্গুসনের আস্থার প্রতিদান দিতে হবে। সর্বোপরি নিজের স্মৃতির পাতায় বর্ণিল এক পাতা যুক্ত করতে হবে ইশ সোধির।