আগেরদিনই একটা বোমা ফাটিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান, দেশজুড়েই আলোচনার বিষয়বস্তু বনে গিয়েছিল সাকিবের সেই সাক্ষাৎকার। সেটার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকবার পর্দায় হাজির হলেন তিনি; কথা বললেন কোন রাখঢাক ছাড়াই।
এই যেমন আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরাজয়ের কারণ হিসেবে সরাসরি আঙুল তুলেছেন তৎকালীন অধিনায়ক তামিম ইকবালের দিকে। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারার জন্য আমি ক্যাপ্টেনকেই দোষী করব। সিরিজের এক ম্যাচ খেলার পর কোন অধিনায়ক পদত্যাগ করে এমনটা আমি আগে কখনো দেখিনি।’
এছাড়া নতুন কাউকে সুযোগ না দেয়ার সমালোচনাও করেন সাকিব। তিনি জানান, ‘আমি বিশ্রাম এবং রোটেশন পলিসিতে বিশ্বাসী। আমাদের ওপেনিংয়ে সংকট রয়েছে; কিন্তু যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা জিম্বাবুয়ের মত দলের বিপক্ষে কম গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ খেলেছি তখন কি অন্যদের যাচাই করে দেখেছি?’
ওপেনার নিয়ে সমস্যায় থাকলেও বিশ্বকাপে অবশ্য তামিম ইকবালকে মিস করবেন না বলেই মন্তব্য করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তাঁর কাছে একমাত্র পেসার ইবাদতকে না পাওয়ায় দলের ক্ষতি হয়েছে। এই বাঁ-হাতি বলেন, ‘আমার দলে সবচেয়ে বড় শূণ্যতা ইবাদতের জন্য। আমার সবচেয়ে বড় অস্ত্র দলে নেই, এছাড়া আমার আর কোন ঘাটতি নেই।’
তামিমের অনুপস্থিতিতে টপ অর্ডারে বাড়তি দায়িত্ব থাকবে লিটনের কাঁধে। সেই লিটনের উপর প্রত্যাশাও বেশি অধিনায়কের। তাঁর বিশ্বাস, ‘লিটন নিজের ব্যাটিং উপভোগ করলে বাকিরাও করবে। সে এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হতে যাচ্ছে।’
যদিও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নয়, দলের সবার কাছ থেকে অবদান চান বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয়। তিনি বলেন, ‘রিয়াদ ভাইয়ের কাছ থেকে আলাদা কিছু পাওয়ার নেই। মুশফিক ভাই বা আমি সহ সবাই আমরা কি দিচ্ছি মাঠে সেটাই আসল।’
সতীর্থদের পাশাপাশি টিম ম্যানেজম্যান্টের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নিয়েও নিজের ধারণা প্রকাশ করেছেন সাকিব আল হাসান। কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহেকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘এত দ্রুত বিচার করা যাবে না। তাঁর (হাতুরু) মেয়াদ শেষ হলে তখন বলা যাবে। তবে আমার মনে হয় সে ভাল করবে। তাঁকে অনেক সমালোচনা করা হচ্ছে, তবে আপনি যখন সমালোচনা শোনেন তখন বোঝা যায় আপনি ভাল কিছু করছেন।’
এছাড়া কোচিং প্যানেলে নতুন সংযোজন শ্রীধরন শ্রীরামকে নিয়েও আশাবাদী ওয়ানডে কাপ্তান। শ্রীরামের অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে অনেক সাহায্য করবে।
অন্যদিকে নাজমুল হাসান পাপনকে নিয়ে খানিকটা হাস্যরস করেন সাকিব আল হাসান। তিনি বলেন, ‘পাপন ভাইয়ের সাথে আমার বেশ ভাল বোঝাপড়া আছে। উনার একটা ভাল দিক হলো, ক্রিকেটারদের জন্য উনি যেকোনো কিছু করতে পারেন। আর খারাপ দিক, উনার সাক্ষাৎকারগুলো (হাসি)।’
সবকিছুর উর্ধ্বে অবশ্য সাকিবের ভাবনায় কেবলই বিশ্বকাপ। ম্যাচ বাই ম্যাচ এগিয়ে যেতে চান তিনি। এই তারকার মতে, ‘আমি বিশ্বাস করি এই দল দারুণ কিছু করবে। আমি একটা একটা করে প্রত্যেক ম্যাচ জিততে চাই। যদি জিতে যাই তবে পরেরটাতে মনোযোগ দিব, যদি হেরে যাই তাও পরের ম্যাচ নিয়ে মনোযোগী হবো।’