নামটা একেবারেই অচেনা; জেইক ফ্রেজার–ম্যাগার্ক। ক্রিকেটের পাড় ভক্তদের কাছেও নামটা অচেনা রাজ্যেই থাকার কথা। তবে ২১ বছর বয়সী এ অস্ট্রেলিয়ানকে এখন থেকে ঠিকই মনে রাখতে হচ্ছে।
কারণ, তিনিই যে ২৯ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় একটা হুলস্থূল বাঁধিয়ে ফেলেছেন। আর এ সেঞ্চুরিতেই লিস্ট এ ক্রিকেটে এবি ডি ভিলিয়ার্সের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন অতীত।
২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৪ বলে ১৪৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। আর সেই ইনিংস খেলার পথে সাবেক প্রোটিয়া এ ব্যাটার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন ৩১ বলে। তবে দ্য মার্শ কাপে এসে এবার সেই রেকর্ডটিই নিজের করে নিলেন ম্যাগার্ক।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটিই ছিল ম্যাগার্কের প্রথম সেঞ্চুরি। আর সেই সেঞ্চুরিটিই তিনি রাঙিয়েছেন দুর্দান্ত আগ্রাসনে। তাসমানিয়ার বিপক্ষে লিস্ট এ ক্রিকেট রেকর্ড গড়ার দিনে ৩৮ বলে তিনি খেলেন ১২৫ রানের ইনিংস।
যে ৩৮ বলের মধ্যে ২৩টিতেই বাউন্ডারিতে পরিণত করেছিলেন তিনি। পুরো ইনিংসে ছক্কা মেরেছেন ১৩টি আর তাঁর ব্যাট থেকে চার এসেছে ১০টি।
তবে এমন আগ্রাসী ব্যাটিংয়েও দলকে শেষ পর্যন্ত জেতাতে পারেননি সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা এ ব্যাটার। কারণ তার আগে প্রথমে ব্যাটিং করে তাসমানিয়া তুলেছিল ৯ উইকেটে ৪৩৫ রান। যা অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ওয়ানডে টুর্নামেন্টের ইতিহাসেরই আবার সর্বোচ্চ রেকর্ডে নাম লেখায়।
তবে ঐ পাহাড়সম ৪৩৬ রান তাড়া করতে নেমে জয়ের দিকেই চোখ রেখেছিল সাউথ অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। যার নেতৃত্বে ছিলেন ফ্রেজার ম্যাগার্ক। ইনিংসের তৃতীয় ওভার থেকেই ব্যাট হাতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন এ ব্যাটার।
তাসমানিয়া পেসার স্যাম রেইনবার্ডের ঐ এক ওভারে ৪ ছক্কা ও দুই চারে ৩২ রান তোলেন তিনি। ব্যাস, ম্যাগার্কের সেই ব্যাটিং ঝড় আর থামেনি। চার ছক্কায় রীতিমত রান উৎসবে মেতে উঠেছিলেন তিনি।
যে ধারাবাহিকতায় মাত্র ১৮ বলেই পৌছে যান ব্যক্তিগত অর্ধশতকে। যা অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ওয়ানডে টুর্নামেন্টে আবার দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড। এর আগে ১৯ বলে ফিফটির রেকর্ড গড়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
ফিফটি পূরণের পর আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠেন ম্যাগার্ক। ১৯ বলে পঞ্চাশ টপকানো এ ব্যাটারের পরের ৫০ এ পৌঁছাতে বল খরচ করোন মাত্র ১০ টি। আর এর মধ্য দিয়েই ২৯ বলে শতক হাঁকিয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট নতুন রেকর্ড গড়েন ফ্রেজার ম্যাগার্ক।
তবে ম্যাগার্কের সেঞ্চুরিতে সাউথ অস্ট্রেলিয়া জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি। ৪৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে জয়ের পথে থাকলেও ৪৬.৪ ওভারে ৩৯৮ রানেই গুটিয়ে গেছে তারা। ফলত, ম্যাগার্কের ৩৮ বলে ১২৫ রানের ইনিংসও দিনশেষে বিফলে গিয়েছে দলের ৩৭ রানের হারে।
তবে লিস্ট এ ক্রিকেটে এই ইনিংস দিয়ে ক্যারিয়ারে শক্ত একটা জায়গাই পেলেন বটে। এর আগে ১৩ ইনিংস খেলে মাত্র একবারই পঞ্চাশ পেরিয়েছিলেন একবার। তাও আবার সেটি এসেছিল চার বছর আগে, ২০১৯ সালে তাঁর লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের অভিষেক ম্যাচে।
অবশ্য গত ৪ বছরের দু:সময়টা এবার তিনি ঝেড়ে ফেললেন এক ম্যাচ দিয়েই। তাঁর ২৯ বলে সেঞ্চুরির কীর্তি ঠাঁই পেয়েছ ক্রিকেটের রেকর্ডবুকে। পুরনো রেকর্ডের জায়গায় বসছে তাঁর এ কীর্তি। যে কীর্তির শিরোনামে যুক্ত হচ্ছে তাঁর নাম–লিস্ট এ ক্রিকেটের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান এখন ফ্রেজার ম্যাগার্ক।