মাসখানেক আগেও যেই পেস আক্রমণভাগ ছিল বিশ্বসেরা, তাঁদের এখন মনে হচ্ছে ছন্নছাড়া। শাহীন শাহ আফ্রিদি আছেন ছায়া হয়ে, নাসিম শাহ তো আগেই ছিটকে গিয়েছেন, দুই সঙ্গীর সাহায্য না পাওয়ায় হারিস রউফও পারছেন না ঠিকঠাক নিজের কাজটা করতে – এমন অবস্থায় পাকিস্তানের ভক্ত-সমর্থকদের মুখে শোনা যাচ্ছে মোহাম্মদ আমিরের নাম।
শুধু সমর্থক নয়, দলটির ডিরেক্টরের দায়িত্বে থাকা মিকি আর্থারও স্মরণ করেছেন আমিরকে। তাঁর বিশ্বাস, স্কোয়াডে রাখা হলে বিশ্বকাপের সময়টাতে এই বাঁ-হাতি পেসার হতে পারতেন দলের জন্য ‘বড় সম্পদ’।
চেনা ছন্দে থাকলে বাইশ গজে ব্যাটারদের ত্রাস বলা যায় আমিরকে। পাওয়ার প্লে-তে ইনসুইং, আউটসুইংয়ের পসরা সাজিয়ে টপ অর্ডারকে ধ্বসিয়ে দেয়া কিংবা ডেথ ওভারে রান আটকানো – তাঁর অসাধ্য নয় কোন কিছুই। নাসিম শাহ এর চোটে পড়ার পরে হয়তো চাইলে ফেরানো যেত এই তারকাকে, সেক্ষেত্রে বিশ্ব মঞ্চে এতটা বিবর্ণ হতো না পাকিস্তানের পেস বিভাগ।
আর এসব ব্যাপারে বিবেচনা করেই আর্থার মেনে নিয়েছেন, পাকিস্তান দল আমিরের সেবা নিতে পছন্দ করতো। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে সে আমাদের জন্য দারুণ এক সম্পদ।’
২০২০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন পাক পেসার। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়েননি, দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ফ্রাঞ্চাইজি লিগগুলোতে। সর্বশেষ ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার লিগেও তাঁর পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত – জ্যামাইকা তালাওয়াসের হয়ে দশ ম্যাচ খেলতে নেমে ১৬ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। প্রতি ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ৬.৮৭ করে, আর বোলিং গড় ১৩.৭৫।
নাসিম শাহয়ের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া হাসান আলী যে একেবারে খারাপ করছেন সেটা বলার সুযোগ নেই। কিন্তু মোহাম্মদ আমিরের হিসেব আলাদা, যেকোনো সময় একটা স্পেলেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারেন তিনি। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের সেই বোলিং দেখলে তাঁর সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকার কথা নয়।
শ্রীলঙ্কা আর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্যাটারদের উপর ভর করে জিতলেও অস্ট্রেলিয়া, ভারতের বিপক্ষে শক্ত পরীক্ষা দিতে হবে পাকিস্তানি পেসারদের। সেক্ষেত্রে আমিরের উপস্থিতি হয়তো একটু বাড়তি নির্ভরতা দিত টিম ম্যানেজম্যান্টকে, অন্তত মিকি আর্থারের কথায় সেই ইঙ্গিতই পাওয়া গিয়েছে।