Social Media

Light
Dark

সালভাতর শিলাচি, ইতালিয়ান রূপকথার নায়ক

শরীরে বন্যতা, চোখে আগুন, দুই হাত প্রসারিত করে গোল উদযাপনে মত্ত ইতালির স্ট্রাইকার সালভাতর শিলাচি - ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের সবচেয়ে আইকনিক স্থিরচিত্র ভাবা হয় এটাকে।

শরীরে বন্যতা, চোখে আগুন, দুই হাত প্রসারিত করে গোল উদযাপনে মত্ত ইতালির স্ট্রাইকার সালভাতর শিলাচি – ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের সবচেয়ে আইকনিক স্থিরচিত্র ভাবা হয় এটাকে। অথচ, টুর্নামেন্টের মাঝ পথেও তিনি ছিলেন অপরিচিত, ইতালির মানুষরাই ঠিকঠাক চিনতো না তাঁকে। কিন্তু তাঁর কাঁধে ভর করেই ইতালি পার করেছিল তাঁদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা আসর।

রিজার্ভ সদস্য হিসেবেই বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সেবার জায়গা পেয়েছিলেন এই তারকা। কিন্তু পরের গল্পের একচ্ছত্র নায়ক তিনিই, ছয় গোল করেছেন সবমিলিয়ে। একই সাথে জিতেছেন গোল্ডেন বল আর গোল্ডেন বুট। যদিও বিশ্বকাপ ট্রফি ছুঁয়ে দেখার ভাগ্য হয়নি তাঁর।

১৯৯০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই চমক দেখিয়েছিলেন এই স্ট্রাইকার। ৭৫ মিনিটের মাথায় মাঠে নেমে দুর্দান্ত এক হেডারে দলকে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে জয় এনে দিয়েছিলেন তিনি, পরের ম্যাচেও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সুপার সাব হিসেবে মাঠে নেমে মুগ্ধতা ছড়ান। তাই তো পরের ম্যাচেই চেকোস্লাভিয়ার বিপক্ষে শুরুর একাদশে জায়গা দেয় তাঁকে – ইতালি বাদ পড়ার আগ পর্যন্ত ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দিয়ে সেই ভরসার প্রতিদান দিয়েছেন।

এসি মিনিসার হয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল শিলাচির। ক্লাবকে তৃতীয় পর্যায় থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার অবদান স্বরূপ তিনি চলে আসেন জুভেন্টাসের নজরে, ১৯৮৯ সালে তুরিনের বুড়িরা দলে নেয় তাঁকে। প্রথম মৌসুমে ৫০ ম্যাচ খেলে তাঁর পা থেকে আসে ২১ গোল – জিতেছিলেন কোপা ইতালি এবং উয়েফা কাপ।

বিশ্বকাপের বছরই জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল এই ফরোয়ার্ডের, এরপর কয়েক মাসের ব্যবধানে বনে যান ‘ন্যাশনাল হিরো’। রিজার্ভ সদস্য হিসেবেই বৈশ্বিক আসরে যাওয়ার পর তিনি ফিরে আসেন কোটি মানুষের আদর্শ হিসেবে। ক্যারিয়ারের শেষদিকে এসি মিলানের জার্সি উঠেছিল তাঁর গায়ে, এরপর ১৯৯৪ সালে জে লিগের ক্লাব জুবিলো ইওয়াতা দলে নেয় তাঁকে। সেখান থেকেই পরবর্তীতে অবসর নেন তিনি।

মাঠের সবচেয়ে লম্বা কিংবা সবচেয়ে শক্তিশালী খেলোয়াড় কখনোই ছিলেন না এই কিংবদন্তি; কিন্তু তাঁর দুই পায়ে বিদ্যুৎ গতি ছিল, মস্তিষ্কে দুর্দান্ত পজিশনিং সেন্স ছিল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, গোলের প্রতি তীব্র ক্ষুধার্ত ছিলেন তিনি – এটাই তাঁকে আলাদা করেছে বাকি অনেকের থেকেই। ফুটবল ইতিহাসও এজন্য তাঁকে লালন করে যাচ্ছে পরম যত্নে।

Share via
Copy link