ক্রিকেট মাঠে দারুণ সব রেকর্ডের জন্ম দিয়েছেন জুটি বেঁধে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ দলে খেললেও তাঁদের দুজনকে এক জার্সিতে এনেছিল আইপিএলের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। মাঠে তো বটেই, মাঠের বাইরেও তাঁদের বন্ধুত্ব গভীর হয়েছে ক্রমশ। এবারের বন্ধু বিরাট কোহলিকে নিয়ে নিজের শুরুর দিনগুলোর কথা স্মৃতিচারণ করেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।
ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন কোহলিকে পরিণত করেছে ভীষণভাবে। আরেক আরসিবি তারকা ক্রিস গেইলের সাথে এক পডকাস্টে সেই পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করেন প্রোটিয়া তারকা ডি ভিলিয়ার্স। ১০-১২ বছর আগে তখন কোহলি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তেমন তারকাখ্যাতি পাননি, জাতীয় দলের একাদশে জায়গাটাও বেশ নড়বড়ে। ঘরের মাঠে মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে সবেমাত্র বিশ্বকাপ জিতেছেন, তারুণ্যের উদ্দীপনা স্পষ্ট সবখানে। পুরনো সেই কোহলির কথাই বলেছেন ডি ভিলিয়ার্স।
সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক স্বীকার করে নেন কোহলিকে প্রথম দেখায় মোটেই ভালো লাগেনি তাঁর, বরং উড়নচন্ডী এবং বদরাগী বলেই মনে হয়েছিল। তাঁর মনে হয়েছিল কোহলির আরো বিনয়ী হওয়া উচিত। এক পর্যায়ে ক্রিস গেইলও স্বীকার করে নেন সেই সময়টাতে কোহলির প্রতি তাঁর মনোভাবও ইতিবাচক কিছু ছিল না।
ডি ভিলিয়ার্স বলেন, ‘আমি আগেও বহুবার এই প্রশ্নটার সম্মুখীন হয়েছি এবং বেশ কয়েকবারই উত্তর দিয়েছি। আমার মনে হয় আমাদের প্রথম দেখার সময় সে বেশ বদরাগী ছিল। চুলের স্টাইল এবং তাঁর চলাফেরা – সব মিলিয়ে খানিকটা আলাদা ছিল।’
তবে সময়ের সাথে সাথে কোহলির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর কথাও অকপটে স্বীকার করে নেন এই তারকা। তিনি বলেন, ‘যেই মুহূর্ত থেকে আমি তাঁর ব্যাপারে জানতে পেরেছি এবং মাঠে তাঁকে খেলতে দেখেছি, তখন থেকেই কোহলির প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে। তবে আমি ব্যাটসম্যান কোহলির চাইতে মানুষ কোহলিকেই বেশি চিনি, বেশি পছন্দ করি। আমার মনে হয় প্রথমবার দেখা হওয়ার সময় তাঁর চারপাশে অদৃশ্য এক দেয়াল ছিল এবং যেই মূহুর্তে সেই দেয়াল অতিক্রম করতে পারি, আমি কোহলিকে আরো ভালো করে জানতে পারি। সে একজন অসাধারণ মানুষ, কিন্তু তাঁর ব্যাপারে আমার প্রথম অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর কিছু ছিল না।’
আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ১৪৪ ম্যাচে প্রায় পাঁচ হাজার রান করেন এই প্রোটিয়া তারকা। তাঁর অবসরের সাথে সম্মানার্থে তাঁর ১৭ নম্বর জার্সিকেও অবসরে পাঠিয়েছে দলটি। ডি ভিলিয়ার্স ২০২১ সালে আইপিএল থেকে অবসর নিলেও এখনো দলটিতে খেলছেন বিরাট কোহলি।
আরসিবির হয়ে খেলার সময় দুজনে একসাথে দারুণ সব মুহূর্তের জন্ম দিয়েছেন ক্রিকেট মাঠে। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২২৯ রানের জুটি গড়েন এই দুজনে। তাঁদের দুজনের সাথে ক্রিস গেইলকে সাথে নিয়ে ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইন আপকে বিবেচনা করা হয় ফ্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা টপ অর্ডার লাইন আপ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফাইনালে উঠলেও এই জুটি কোনো আইপিএলেই শিরোপা জিততে পারেননি।