মোহাম্মদ আব্বাস, আরে ব্যাস! দক্ষিন আফ্রিকার জেতা ম্যাচ একাই কেড়ে নিচ্ছেন তিনি পাকিস্তানের দিকে। ১৭ ওভার বল করে ৪৩ রানে ইতিমধ্যেই নিয়েছেন ৬ উইকেট। অবিশ্বাস্য জয়ের নায়ক কি হতে যাচ্ছেন তিনি!
টার্গেটটা মোটে ১৪৮, সেটিকেই পাহাড়সম করে তুলেছেন মোহাম্মাদ আব্বাস। গতদিন পেস, গতি, সুইংয়ের যে ঝড় তুলে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করলেন রবিবার সকালে। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে একপ্রান্ত থেকে নাভিশ্বাস তুলে যাচ্ছিলেন প্রোটিয়াদের। তবে টেম্বা বাভুমা আর এইডেন মার্করামের ব্যাটে ভর করে নিশ্চিত জয়ের পথে আগাতে থাকে দক্ষিন আফ্রিকা। দলীয় ৬২ রানে এবার আব্বাস উপড়ে ফেললেন মার্করামের স্ট্যাম্প।
চার উইকেট হারালেও দলকে জয়ের বন্দরে নিতে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক বাভুমা। কিন্তু আব্বাস আর তা হতে দিলেন কোথায়! নিজের পরের স্পেলে এসেই উইকেটের পিছে মোহাম্মাদ রিজওয়ানের বিশ্বস্ত দস্তানায় ক্যাচ তুলিয়ে বিদায় করালেন বাভুমাকে। এরপরেই নাসিম শাহ আর আব্বাসের পেস তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল দক্ষিন আফ্রিকার ব্যাটাররা। মাত্র চার বলে তিন উইকেট তুলে নিয়ে আফ্রিকার জয়ের স্বপ্নের কফিনটাই শেষ পেরেকটাই হয়ত মেরে দেন তারা। ৩২তম ওভারের দুই নম্বর বলটায় ডেভিড বেডিংহামকে সাজঘরে ফিরিয়ে তুলে নিলেন নিজের পঞ্চম উইকেট।
পরের বলেই বশ করলেন আগের ইনিংসে ব্যাট হাতে দাপট তোলা অভিষিক্ত করবিন বশকে। উইকেটের পিছে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করলেন। আবারও সহজ ক্যাচ লুফে নিলেন মোহাম্মাদ রিজওয়ান। এতেই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারটাও ৬/৪৩ বাগিয়ে নিলেন তিনি। বয়সটা ৩৬ ছুঁইছুঁই। কিন্তু খেলেছেন মোটে ২৫টা টেস্ট, এখন অবধি ২০ এর একটু বেশি গড়ে সংগ্রহ করে ফেলেছেন ৯৬টি উইকেট।
এছাড়াও ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবরই ধারাবাহিক পারফর্ম করে গেছেন তিনি। তবুও তিনি কোন এক অজানা কারনে ছিলেন পাকিস্তান দলের বিবেচনার বাইরে। সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০২১ সালে। তবে সব আক্ষেপ, হতাশা পুড়িয়ে ছাই করলেন পেস আগুনে। একাই নিভিয়ে দিচ্ছেন দক্ষিন আফ্রিকার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার স্বপ্ন। জোহান্সবার্গে জমে উঠেছে ম্যাচ। লাঞ্চ ব্রেকের আগে আফ্রিকার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১১৬ রান। আফ্রিকার দরকার ৩২ রান, পাকিস্তানের দরকার দুইটা উইকেট।
পারবেন কি আব্বাস প্রত্যার্বতনের গল্পটা সোনালি অক্ষরে খোদাই করে রাখতে! নাকি ক্যারিয়ারের মত এখানেও থেকে যাবেন দ্য ট্র্যাজিক হিরো হয়েই!