ফিরেই সেই রশিদ জাদু!

ইনজুরির কারণে ছিলেন না সিরিজের প্রথম টেস্টে। ফলাফল – বিশাল ব্যবধানে জিম্বাবুয়ের কাছে পরাজিত হয় আফগানরা।

সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেই করলেন বাজিমাত! জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তুলে নিলেন অসাধারণ জয়। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও জিম্বাবুইয়ান ব্যাটিং স্তম্ভ একা হাতে গুড়িয়ে দিয়েছেন আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান। তার ভয়ংকর লেগস্পিনে কুপোকাত হয়েছেন বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরা। দুই ইনিংসেই দাপুটে বোলিং করে শিকার করেন দ্বিতীয় বারের মতো ম্যাচে ‘টেনফর’!

যদিও প্রথমে ব্যাট করে প্রথম আফগান ক্রিকেটার হিসেবে শাহিদির ডাবল সেঞ্চুরি ও অধিনায়ক আসগর আফগানের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটে ৫৪৫ রানের বিশাল পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে আফগানরা৷ উইকেটে বোলারদের জন্য তেমন কিছু না থাকায় জিম্বাবুয়ের বোলাররা উইকেট থেকে তেমন সুবিধে করতে পারেনি! তবে সে কথাকে ভুল প্রমাণ করে রশিদ-হামজারা শুরু থেকে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের নাঁচিয়ে ছেড়েছেন।

প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে দারুন শুরু করার পর মনে হচ্ছিলো এই টেস্টে সমান সমান লড়াইয়ে থাকবে দুই দলই! কিন্তু হটাৎ রাশিদ-হামজার দ্বৈত আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে শিবির। বিনা উইকেটে ৯১ রান থেকে ২৮৭ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। রশিদ খান নেন ৪ উইকেট! পাঁচ উইকেট পাওয়ার আক্ষেপটাও বেশিক্ষণ রইলো না।

ফলো অনে দ্বিতীয় বার ব্যাটিং নামতে রশিদের স্পিন বিষে বিধ্বস্থ হয়ে পড়ে জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যানরা৷ একপ্রান্তে একাই তুলে নেন পাঁচ উইকেট! এরপর হটাৎ আবুধাবিতে জিম্বাবুয়ের দূর্দান্ত কামব্যাক! অষ্টম উইকেটে উইলিয়ামস-তিরিপানোর ১৮৮ রানের জুটিতে বিপাকে আফগানরা, টেস্ট বাঁচাতে মাটি কামড়ে পড়েছিলাম দুই ব্যাটসম্যান। শতক থেকে মাত্র ৫ রান দূরে ৯৫ রানে রশিদ খানের গুগলিতে লেগ বিফোর হয়ে লাঞ্চ বিরতির মাত্র ২ ওভার বাকি থাকতে আউট হন তিরিপানো!

লাঞ্চ বিরতির আগ পর্যন্ত ১৩৫ ওভারের মধ্যে একাই ৫৬ ওভার করেছেন রশিদ, নিয়েছেন একাই ৬ উইকেট! এরপর শেষ উইকেট নেওয়ার মাধ্যমে দুই ইনিংস মিলিয়ে শিকার করেছেন ১১ উইকেট। তার স্পিন ভেলকিতেই আবারো ম্যাচে ফিরলো আফগানরা আর জয় তুলে নিলো ৬ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।

এই টেস্টে ১১ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি রশিদ নাম লিখিয়েছেন অনন্য এক রেকর্ডে। ২০০০ সালের পর কোনো টেস্টে সর্বোচ্চ ওভার বোলিং করার মালিক এখন রশিদ! পুরো টেস্টে বল করেছেন ৯৯.১ ওভার। এর আগে ২০০২ সালে ক্যাপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে ৯৮ ওভার বল করেছিলেন শেন ওয়ার্ন। ২০০১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গলে মুরালিধরন করেছিলেন ৯৭ ওভার ও ২০০৩ সালে ক্যান্ডিতে ইংলিশদের বিপক্ষেই ৯৬ ওভার বল করেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফ্র‍্যাঞ্চাইজি লিগ গুলোতে নিজের নামটা অনেক উঁচু পর্যায়েই নিয়ে গেছেন রশিদ। নিজের স্পিন ভেলকিতে বিশ্বের যেকোনো কোনায় ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলেছেন অনায়াসেই। আর একের পর এক রেকর্ডে নিজের নাম তোলার সাথে সাথে আফগানিস্তানকে বিশ্ব ক্রিকেটে তুলে ধরছে অনন্য উচ্চতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link