সুখের সংসারের মরিয়া কর্তা

রোদ আর মেঘের খেলা চলেছে মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে। আবহাওয়াকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল মত্ত নিজেদের মধ্যে ফুটবল খেলায়। খানিকটা গা গরম করে নেওয়ার এর থেকে ভাল পদ্ধতি সম্ভবত আর হয় না।

গা গরম হলো। এরপর সবাই জড়ো হলো। সাদা বোর্ডে অনেক কিছুর আঁকিবুঁকি কোচিং প্যানেলের। সেসবই বুঝিয়ে দেওয়া হলো পুরো দলকে। সবাই যেন দিনের পরিকল্পনা ছবি মাথায় তুলে নিলেন। শুরু হলো বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অনুশীলন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দলে থাকাই সবাই যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন হেডকোচের পছন্দের তালিকায় থাকা দু-এক জন।

এদিনের মূল পরিকল্পনাই যেন ছিল ফিল্ডিং অনুশীলন করা। শুরুটা অবশ্য ত্রিশ গজের মধ্যে ফিল্ডিং আরও পোক্ত করা দিয়ে। সেই সাথে পিন পয়েন্ট থ্রো করবার প্রচেষ্টাই যেন করলেন সকলে মিলে। উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সেই সেগমেন্ট।

এরপর বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যায় খেলোয়াড়রা। কেউ হাই ক্যাচের অনুশীলন করেছেন তো কেউ বা করেছেন বাউন্ডারি বাঁচানোর অনুশীলন। উইকেটের সামনের ফিল্ডিং অনুশীলনের পর হয়েছে উইকেটের পেছনের অনুশীলনও।

সেখানে দস্তানা হাতে দেখা গেছে মুশফিকুর রহিমকে। তার পাশেই স্লিপ কর্ডোনে হাসিমুখে ক্যাচ লুফে নেওয়ার চেষ্টা করে গেছেন লিটন দাস। পাশেই প্রথম স্লিপে ছিলেন নাজমুল হাসান শান্ত।

বাংলাদেশের পেসাররা রয়েছেন দুরন্ত ফর্মে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড টেস্ট জয়ের পর পেসারদের নিয়ে উচ্ছ্বাসই প্রকাশ করেছিলেন টেস্ট অধিনায়ক লিটন দাস। পেসারদের বলগুলো অধিকাংশ সময়েই ছুঁয়েছে উইকেট রক্ষকের গ্লাভস। তেমন পারফরমেন্স সাদা পোশাকেও হয়ত পেসারদের কাছ থেকে আশা করে টিম ম্যানেজমেন্ট।

পেসারদের কষ্টের ফল যাতে বৃথা না যায় তাইতো উইকেটের পেছনে ভরসার হাতদের পোক্ত করবার অনুশীলন চলেছে লম্বা সময় ধরেই। লিটন, মুশফিক শান্তরা চেষ্টা করেছেন নিজেদের সেরাটা দেওয়ার। পেসারদের হতাশায় ডুবের যাওয়ার কোন সুযোগই দিতে নারাজ গোটা দল। তাতে অন্তত উইকেটের ক্ষুধা বাড়বে উজ্জীবিত পেসার ব্যাটারির।

সবকিছুই তো বিশ্বকাপকে ঘিরে। এবার যে বাংলাদেশের লক্ষ্যটা বড়। তাইতো গোটা একটা দল হয়ে নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার প্রস্তুতিটা সময় থাকতেই সেরে ফেলছে টাইগাররা। আফগানদের বিপক্ষেও সেই ঝাঁজটা টের পাওয়া যাবে নিশ্চয়ই।

ফিল্ডিং শেষেই গোটা দল ব্যাট-প্যাড আর বল নিয়ে হাজির হয় একাডেমি মাঠে। সবার আগে হাজির ইনজুরি শঙ্কা কাটিয়ে ওঠা তামিম ইকবাল খান। নেট অনুশীলনের সূচনাই করেন তিনি। ফিল্ডিংয়ের সময় কিঞ্চিৎ অস্বস্তিতে পরলেও তামিম এদিন ব্যাটিং অনুশীলন চালিয়ে গেছেন লম্বা সময় ধরে। প্রথমে পেসারদের সামলেছেন। দু’একটা বল এদিক সেদিক হলেও, বেশ স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে গেছেন ড্যাশিং ওপেনার।

ওয়ানডে দলকে নেতৃত্ব তো তারই দিতে হবে। এর আগে নেতৃত্ব দিতে হবে দলের ব্যাটিং লাইনআপের। সেটা তামিমের থেকে আর ভাল কেই বা বোঝেন। তামিম তাই পেসার থেকে থ্রোয়ার এমনকি স্পিনারদের বিপক্ষে নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন।

যদিও টুকটাক ভুল তিনিও করেছেন। সেসব আবার তীক্ষ্ণ নজরে খেয়াল করেছেন হেড কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। স্পিনারদের বিপক্ষে খানিকটা বেগই পেতে দেখা গেছে তামিম ইকবালকে। সেসবই পরবর্তীতে ধরিয়ে দিয়েছন হাতুরু।

নিজের প্রধান সেনানী নেট অনুশীলন ধুকবেন সেটা নিশ্চয়ই পছন্দ নয় হেড কোচের। লম্বা সময় নিয়ে আলাপ করেছেন অধিনায়কের সাথে, দিয়েছেন পরামর্শ। সেসব আমলে নিয়ে নিজেকে শাণ দেওয়ার চেষ্টাই করে গেছেন তামিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link