ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর অবসর নিবেন – এমন ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন কুইন্টন ডি কক। প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারের শেষ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে দানবীয় রূপে আবির্ভূত হয়েছেন তিনি; নিভে যাওয়ার আগে প্রদীপ যেভাবে জ্বলে ওঠে সেভাবে জ্বলে উঠেছেন এই তারকা – বোলারদের রীতিমতো তুলোধুনো করেছেন।
এই যেমন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৬ বলে ১০৯ রান করেছেন প্রোটিয়া ওপেনার। আর এই সেঞ্চুরির পথে আটটা চারের পাশাপাশি পাঁচটা বিশাল ছয় হাঁকিয়েছেন তিনি।
শুরু থেকেই ডি কক ছিলেন সাবলীল; সঙ্গী টেম্বা বাভুমা কিছুটা সংগ্রাম করলেও তাঁর উপর কোন চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি অজি বোলাররা। প্রায় প্রতি ওভারে বাউন্ডারি আদায়ের পাশাপাশি স্ট্রাইক রোটেশন করেছেন নিয়মিত – এরই ধারাবাহিকতায় মাত্র ৫১ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি।
২০ তম ওভারে অধিনায়ক বাভুমা আউট হলে মাঠে নামেন ভ্যান ডার ডুসেন। এরপর আরো হাত খুলে খেলার সুযোগ পান ডি কক। পরের ৪০ বলেই তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগারে পৌঁছে যান তিনি।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দুর্দান্ত একটা ডেলিভারিতে আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে শেষমেশ থামে এই উইকেটকিপার ব্যাটারের দারুণ ইনিংস। ততক্ষণে অবশ্য আরো একবার বড় পুঁজি জমা করার ভিত পেয়ে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও বরাবর ১০০ রান এসেছিল ডি ককের ব্যাট থেকে। টানা দুই ম্যাচে দুই শতক – বিশ্বকাপে এর চেয়ে ভাল ভাবে হয়তো শুরু করা যেত না। আর এই শুরু কাজে লাগিয়ে পুরো টুর্নামেন্টে রান করে যাওয়াটাই নিশ্চয়ই এ বাঁ-হাতির লক্ষ্য।
অথচ, খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, ক্রিকেট বিশ্বজুড়েই কক ছিলেন ‘ভিলেন’। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। সেসব নিয়ে অনেক জল ঘোলাও হয়। তবে, সেই সবই এখন অতীত। খেলার বাইরের কিছুতে নয়, বরং ক্রিকেট দিয়ে – নিজের পারফরম্যান্স দিয়েই বারবার আলোচনায় আসছেন তিনি।
বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচেই সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপটাও কি তাহলে ককেরই হতে যাচ্ছে ? সেটা হলে তো দক্ষিণ আফ্রিকাও চাইলে নিজের চোকার তকমা মুছে ফেলতে পারবে।