টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টসের পর থেকেই সমালোচনা সঙ্গী হয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা। টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষ বোলার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ফাইনালে একাদশ থেকে বাদ দেয়া নিয়ে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর চটেছেন ভারতের বেশির ভাগ সাবেক ক্রিকেটারই। টেস্ট ক্রিকেটে ৫০০ এর বেশি উইকেট নেয়া বোলারকে কিভাবে একাদশের বাইরে রাখলো ভারত সে বিষয়টা বুঝতে পারছেন না স্বয়ং ভারতের ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকার।
২৪ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের কখনোই মাঠ বা মাঠের বাইরে মেজাজ হারাতে দেখা যায়নি শচীনকে। দুই যুগের ক্যারিয়ারে নানান অযাচিত সমালোচনা ও বিতর্ক পিছু নিয়েছিলো শচীনের। কিন্তু কখনোই কোনো ঘটনায় মেজাজের নিয়ন্ত্রণ হারাতে দেখা যায়নি ক্রিকেট ঈশ্বরকে। শচীনের মাথা ঠাণ্ডা রাখার ক্ষমতা দেখে অবাক না হয়ে উপায় ছিলো না কারো।
তবে এবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অজিদের কাছে ভারতের নাস্তানাবুদ হবার পর নিজের ক্ষোভ ঝাড়লেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক শচীন। মাঠে ভারতের পারফরম্যান্স তো বটেই, মাঠের বাইরেও ভারতের পরিকল্পনায় বিশাল গলদ দেখছেন শচীন।
প্রথম ইনিংসের গড়পরতা বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতেও চরম ব্যর্থ ছিলো ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ। রোহিত, পূজারা, বিরাট, রাহানেদের নিয়ে নামে ভাড়ে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের কাছে জবাবই ছিলো না অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণের। ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে আরো একটি আইসিসি টুর্নামেন্টে হতাশা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে ভারতকে।
তবে মাঠের খেলার আগেই ভারতের একাদশ সাজানো নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে বিস্তর। টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশনের কন্ডিশনের কথা মাথায় নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে বর্তমান বিশ্বের সেরা বোলার অশ্বিনকে একাদশের বাইরে রাখার কোনো ব্যাখ্যা পাচ্ছেন না শচীন। কোনো বিষয়ে কখনো নিজের ক্ষোভ প্রকাশ না করলেও এবার নিজের ক্ষোভ লুকাতে পারেননি শচীন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে শচীন লেখেন, ‘বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল জেতার জন্য অস্ট্রেলিয়াকে অভিনন্দন।স্টিভেন স্মিথ ও ট্রাভিস হেড প্রথম দিনেই তাদের পক্ষে দারুণ ভিত গড়ে দিয়েছিলো। ভারতের জন্যও কিছু ভালো মুহুর্ত ছিলো কিন্তু আমি অশ্বিনকে একাদশ থেকে বাদ দেবার বিষয়টি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি যে কিনা বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট বোলার।’
ভারতের টেস্ট দলের সাফল্যের পেছনে সবসয়ই রবীন্দ্র জাদেজা ও রবীচন্দন অশ্বিনের স্পিন জুটির প্রশংসা করে এসেছেন টেন্ডুলকার। দেশের মাটিতে কিংবা উপমহাদেশের বাইরেও এই দুই বোলার ভারতকে জিতিয়েছেন অসংখ্য টেস্ট।
এছাড়াও ফাইনালের আগেই টেন্ডুলকার বুঝতে পেরেছিলেন যতদিন গড়াবে ততই স্পিনারদের সাহায্য করবে ওভালের উইকেট। অজি স্পিনার নায়ান লায়নের দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট শিকারও টেন্ডুলকারের এই ধারণাই প্রমাণ করে। এছাড়াও বাঁহাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে অশ্বিনের দুর্দান্ত রেকর্ডও উপক্ষা করে গেছেন ভারত কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
টেন্ডুলকার আরো বলেন, ‘যেমনটা আমি ম্যাচের আগেও বলেছি, স্কিলফুল স্পিনারদের সবসময় স্পিনসহায়ক পিচের ওপর নির্ভর করতে হয় না। তারা বাতাস এবং উইকেটের বাউন্সকে কাজে লাগিয়ে তাদের বৈচিত্র গুলো প্রয়োগ করতে পারে এবং ভুলে গেলে চলবে না অস্ট্রেলিয়ার প্রথম আট ব্যাটারের মধ্যে পাঁচজন ব্যাটারই বাঁহাতি।’