সাকিব আল হাসানকে বসিয়ে রাখা হল, খেললেন সুনীল নারাইন। তাতে লাভ হল না খুব বেশি। আন্দ্রে রাসেল, দীনেশ কার্তিকরা ছন্দে ফিরলেন, সাথে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন প্যাট কামিন্সও। তাতে জয়ের কাছাকাছি পৌছালেও জয়ে ফিরতে পারলো না ইয়ন মরগ্যানের কলকাতা নাইট রাইডার্স। হারলো ১৮ রানে।
প্রথমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলারদের উপর তাণ্ডব চালিয়ে জয়ের সুর বেঁধে দিলেন ফাফ ডু প্লেসিস। আর শেষে বল হাতে ধংসযজ্ঞ চালিয়ে জয়টা প্রায় নিশ্চিতই করেছিলেন দীপক চাহার। কিন্তু মাঝখানে আন্দ্রে রাসেল ও শেষের দিকে প্যাট কামিন্স ঝড় তুলে সেই জয় প্রায় ছিনিয়েই নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কলকাতাকে টানা তৃতীয় পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি তাঁরা।
আগের ম্যাচে সহজ জয় পাওয়ার পর আজ কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ১৮ রানে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিলো আইপিএলের অন্যতম সফল দল চেন্নাই সুপার কিংস। আর এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেলো মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।
লক্ষটা বড় ছিলো। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে যে রকম শুরুর প্রয়োজন ছিলো সেটা পায়নি কলকাতা নাইট রাইডার্স। ইনিংসের শুরুতেই দুই ওপেনার নীতিশ রানা ও শুভমান গিলকে ফিরিয়ে দেন দীপক চাহার। এরপর নিজের তৃতীয় ওভার করতে এসে ১৭ রানে ২ উইকেট হারানো কলকাতার ইনিংসে আবার আঘাত হানেন এই পেসার।
এবার জোড়া আঘাতে ফিরিয়ে দেন কলকাতার অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান ও সুনীল নারাইনকে। মরগ্যান করেন ৭ বলে ৭ রান এবং নারিনের ব্যাট থেকে আসে ৩ বলে ৪ রান। এরপর ত্রিপাঠি বিদায় নিলে ৩১ রানে ৫ উইকেট হারানো কলকাতা ম্যাচে ফিরে আসে আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ে।
ষষ্ট উইকেট জুটিতে রাসেল ও কার্তিক যোগ করেন ৮১ রান। কিন্তু রাসেল ২২ বলে ৫৪ রান করে বিদায় নিলে মূলত আবার ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় কলকাতা। তবে শেষের দিকে প্যাট কামিন্স ঝড় তুলে আবারো ম্যাচ জমিয়ে দেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ২০ রান, হাতে ছিলো ১ উইকেট।
কিন্তু প্রথম বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান প্রসিধ। কামিন্স অপরাজিত থাকেন ৩৪ বলে ৬৬ রান করে। চেন্নাই সুপার কিংসের বোলারদের পক্ষে ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন দীপক চাহার। এছাড়া এনগিডি ৩ টি ও কারান ১ টি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা চেন্নাই সুপার কিংসকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার রুতুরাজ গায়কড় ও ফাফ ডু প্লেসিস। উদ্বোধনী জুটিতেই দুই ওপেনার তুলে ফেলেন ১১৫ রান। ৪২ বলে ৬৪ রান করে রুতুরাজ গায়কোয়াড় আউট হয়ে গেলে ভাঙে এই জুটি।
দারুণ খেলতে থাকা গায়কোয়াড় ফিরে গেলেও থেমে থাকেনি চেন্নাইয়ের রানের গতি। আগের ম্যাচে থিতু হয়েও বড় ইনিংস খেলতে না পারার আক্ষেপ মিটিয়ে ফাফ ডু প্লেসিস খেলেন ৬০ বলে অপরাজিত ৯৫ রানের দারুণ এক ইনিংস। ৯ টি চার ও ৪ টি ছয় দিয়ে ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন এই ওপেনার।
প্লেসিসের ঝড় আর শেষে দিকে মঈন আলীর ১২ বলে ২৫ রান ও মহেন্দ্র সিং ধোনির ৮ বলে ১৭ রানের ইনিংসে ভর ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২২০ রান সংগ্রহ করে চেন্নাই সুপার কিংস। জাদেজা অপরাজিত ছিলেন ইনিংসের শেষ বলে ছয় মেরে।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলারদের ভিতর সবচেয়ে সফল ছিলেন বরুণ চক্রবর্তী। ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ১ উইকেট শিকার করেন এই পেসার। এছাড়া সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে একাদশে জায়গা পাওয়া সুনীল নারিন ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে শিকার করেন ১ উইকেট।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
চেন্নাই সুপার কিংস: ২২০/৩ (ওভার: ২০; গায়কড়- ৬৪, প্লেসিস- ৯৫*, মঈন- ২৫, ধোনি- ১৭, জাদেজা- ৬*) (চক্রবর্তী- ৪-০-২৭-১, নারাইন- ৪-০-৩৪-১, রাসেল- ২-০-২৭-১)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০২/১০ ওভার: ১৯.১; রানা- ৯, গিল- ০, ত্রিপাঠি- ৮, মরগ্যান- ৭, নারাইন- ৪, কার্তিক- ৪০, রাসেল- ৫৪, কামিন্স- ৬৬*; চাহার- ৪-০-২৯-৪, কারান- ৩-০-৫১-১, এনগিডি- ৪-০- ২৮-৩)
ফলাফল: চেন্নাই সুপার কিংস ১৮ রানে জয়ী।