প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা একটু এলোমেলো ফুটবল খেলেছিল বটে, তবে তাতে কোনো হারের শঙ্কা ছিল না। বরং, পেনাল্টি থেকে পাওয়া এক গোলে এগিয়েই ছিল আর্জেন্টিনা। তখন অবধি ম্যাচটা তাঁরা হেরে যেতে পারে সেটা কখনও মনে হয়নি। বরং আক্রমণের পর আক্রমণ করে প্রতিপক্ষের ঘামই ছুটিয়ে দিচ্ছিলেন মেসি-মার্টিনেজরা। বারবার তাঁদের আক্রমণগুলোতে নেমে আসছিল অফ সাইডের খড়গ।
কিন্তু, দ্বিতীয়ার্ধের মিনিট আটেকের মধ্যেই পাশার দান পাল্টে যায় পুরোপুরি। ৪৮ মিনিটে ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোকে পরাস্ত করে গোলে শট নেন সালেহ আলশেহরি, সমতা আনে সৌদি আরব। এর পাঁচ মিনিট বাদে আবারও গোল দেয় সৌদি আরব। এবার সালেম আল-দাওয়াসারির গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় এশিয়ার শক্তিশালী দলটি।
এরপর থেকেই একটা গোল পরিশোধ করার জন্য উঠে পড়ে লাগে আর্জেন্টিনা। কোচ লিওনেল স্ক্যালনি কৌশলগত পরিবর্তনও আনেন। এক সাথে তিন বদলি নামান। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, পাপু গোমেজ, লিয়ান্দ্রো পারেদেসকে তুলে নিয়ে নামানো হয় জুলিয়ান আলভারেজ, এনজো ফার্নান্দেজ ও লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে। পরে নিকোলাস তাগলিয়াফিকোকে তুলে নামানো হয় মার্কোস আকুনাকে।
যদিও, কোনো লাভ হয়নি তাঁদের। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই করুণ এক পরাজয়ের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হল অন্যতম ফেবারিট দল আর্জেন্টিনাকে। নি:সন্দেহে এটা সৌদি আরবের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় দিন। আর্জেন্টাইন দম্ভ চূর্ণ করা তো আর মুখের কথা নয়।
আর এই পরাজয়ে দারুণ একটা রেকর্ড গড়ার সুযোগ হারাল লিওনেল মেসির দল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ সংখ্যক জয় পাওয়ার রেকর্ডটা ধরে রাখল ইতালিই। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত টানা ৩৭ টি ম্যাচে অপরাজিত ছিল ইতালি। তাঁরা অবশ্য এবার বিশ্বকাপের টিকিট পায়নি। দ্বিতীয় স্থানে আছে আর্জেন্টিনা। ২০১৯ সাল থেকে বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত টানা ৩৬ টি ম্যাচে (২৫ ম্যাচে জয় এবং ১১ ম্যাচে ড্র) অপরাজিত ছিল। সেই ধারা থামাল সৌদি আরব। এর আগে, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে হেরেছিল আর্জেন্টিনা।
মেসিদের পরে যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থানে আছে স্পেন এবং ব্রাজিল। ২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত টানা ৩৫ টি ম্যাচে স্পেনকে (২০১০ সালের বিশ্বকাপ জিতেছিল) হারাতে পারেনি কোনও দল। এরও আগে ১৯৯৩-৯৮ সালের মধ্যে ৩৫ টি ম্যাচে অপরাজিত ছিল ব্রাজিল। যে সময়ের মধ্যে ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল। তারপর ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল।