বিশ্বকাপ মানেই ‘ছন্দময়ী’ ভয়ানক অস্ট্রেলিয়া; শুরুর দিকে হোঁচট খেলেও এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের চেনা রূপে ফিরতে বেশি সময় লাগেনি তাঁদের। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের পর এবার নিজেদের উত্তাপে নেদারল্যান্ডসকেও ছারখার করে দিয়েছে অজিরা; ৩০৯ রানের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে স্কট এডওয়ার্ডসের দল।
রান প্রসবা বিশ্বকাপে আরো একবার রান বন্যা দেখা গিয়েছে এদিন। ডাচ বোলারদের তুলোধুনো করে ৩৯৯ রানের বিশাল স্কোর গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। শুরু থেকেই বড় রান করার দিকে চোখ ছিল তাঁদের, তাই চতুর্থ ওভারে মিচেল মার্শ আউট হলেও এপ্রোচে কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভ স্মিথের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ২৩ ওভারেই ১৫০ রান পেরিয়ে যায় অজিরা।
অবশ্য ৬৮ বলে ৭১ করে স্মিথকে আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন আরিয়ান দত্ত। কিন্তু লাভের লাভ হয়নি তেমন কিছু, মার্নাস লাবুশানেকে নিয়ে স্কোরবোর্ডে রান তুলতে থাকেন ওয়ার্নার। দুজনের ৮৪ রানের জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিয়ে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বাঁ-হাতি অজি ওপেনার ততক্ষণে সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছিলেন।
যদিও ২৩ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট শিকার করে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলে নেদারল্যান্ডস। কিন্তু তাঁদের চেষ্টাকে ব্যর্থ করে সবচেয়ে বড় আঘাত হানেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ছয় নম্বরে নেমে রীতিমতো চার ছক্কার বন্যা সৃষ্টি করেন তিনি। তাঁর ৪৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংসে রীতিমতো বিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয় ডাচ শিবির।
সেই চূর্ণবিচূর্ণ অবস্থা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তাঁরা। ব্যাটিংয়ে নেমে অজি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে আকারম্যানরা, পাওয়ার প্লেতেই তিন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারায় নেদারল্যান্ডস। বল হাতে সবচেয়ে বেশি রান খরচের অপ্রত্যাশিত রেকর্ড গড়া ডি লিড ব্যাট হাতেও বলার মত কিছু করতে পারেননি।
সাইব্রান্ড এঞ্জেলব্রেখট, তেজা নিদামানুরু প্রতিরোধের চেষ্টা করেছেন ঠিকই, তবে ব্যর্থ হয়েছেন – দুজনেই কাটা পড়েছেন মিচেল মার্শের ডেলিভারিতে। এক প্রান্ত অধিনায়ক এডওয়ার্ডস আঁকড়ে ধরলেও আরেক প্রান্তে ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তোলেন লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পা।
তাঁর ঘূর্ণিতে ইনফর্ম লোয়ার মিডল অর্ডার আজ আর দাঁড়াতে পারেনি। একাই শেষ চার উইকেট তুলে কমলা জার্সিধারীদের ৯০ রানেই থামিয়ে দেন তিনি। আর তাতেই সবচেয়ে লজ্জাজনক পরাজয়েগুলোর মধ্যে একটির স্বাদ পায় নেদারল্যান্ডস।