বিরাট কোহলি ও বাবর আজম দুজনই ভারত ও পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম। ভারতীয় ব্যাটিং বিভাগকে বহুকাল আগলে রেখেছিলেন বিরাট কোহলি। যদিও দুর্ভাগ্যক্রমে বিরাটের সেই বিধ্বংসী রূপ গত দুইবছর ধরে অনুপস্থিত বলা চলে। কিন্তু এই অবধি বিরাট ভারতীয় ক্রিকেটে যে অবদান রেখেছেন তা অবর্ণনীয়। শক্তিশালী এক ব্যাটার ছিলেন বিরাট।
ফর্মে ফিরলে সেই অসাধারণ ব্যাটিং দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ক্রিকেটবিশ্বকে মুগ্ধ করবেন শীঘ্রই, এমনটাই আশা ভক্তদের। এদিকে পাকিস্তানের বর্তমান অধিনায়ক ও ব্যাটার বাবর আজমের জয়জয়কার চারদিকে। দারুণ ফর্মে আছেন বাবর। তিনি মাঠে নামা মানেই দুর্গের ন্যায় আগলে রাখেন পাকিস্তানের ব্যাটিং সাইড। অভিজ্ঞতা বিবেচনায় বিরাট নি:সন্দেহে এগিয়ে থাকবেন বাবরের থেকে। কিন্তু তাই বলে কি বাবর আজম ইতোমধ্যেই বিরাট কোহলির মতো ক্রিকেটবিশ্বের বাঘা নাম হয়ে উঠতে পেরেছেন? দুজনার তুলনা দেয়া চলে? এই নিয়ে বেশ তর্ক- বিতর্ক চলছে ক্রিকেট পাড়ায়।
আসন্ন রবিবারে ভারত- পাকিস্তানের ম্যাচের দিকে সবার নজর থাকবে। বিশেষ করে কোহলির দিকে। বিরাট কোহলির স্বীয় রূপে প্রত্যাবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে ভারতীয় ভক্তরা। স্বল্প বিরতি শেষে নতুন উদ্যমে কোহলি কি পারবেন সেই পুরোনো সত্ত্বায় ফিরতে?
এবার বিরাট কোহলির সাথে বাবর আজমের তুলনা প্রসঙ্গে মুখ খুলনেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম। এই প্রসঙ্গে তিনি মত দিলেন, ভারতের সাবেক অধিনায়ক কোহলি সর্বকালের সেরার তালিকায় থাকবেন, তাই এখনি বাবর আজমকে তাঁর সাথে তুলনা দেয়াটা বোকামী। ওয়াসিম আকরাম কোহলির সাম্প্রতিক পারফরমেন্স নিয়ে ভারতীয় সমর্থকদের সমালোচনার প্রতি নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘কোহলির বিরুদ্ধে সমালোচনাটা অপ্রয়োজনীয় ছিল। তিনি শুধু এই যুগের নয় বরং সর্বকালের সেরাদের একজন। তিনি এখনো ভারতীয় দলের সেরা ফিল্ডারদের একজন।’
এশিয়া কাপের সম্প্রচারস্বত্ব পাওয়া ‘স্টার স্পোর্টস’ আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে পাকিস্তানি এই গ্রেট বলেন, ‘আশাকরি বিরাট পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেই কামব্যাক করবেন না। তবে অবশ্যই তিনি কামব্যাক করবেন দ্রুতই।’
ক্রিকেটারদের মধ্যে তুলনার বিষয়টিকে তিনি স্বাভাবিক বলে উল্লেখ করেন। যেমন তাঁর সময়ে ইনজামাম উল হক, রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকারের মধ্যে তুলনা করতো। আবার তাঁরও আগে সুনীল গাভাস্কার, জাভেদ মিয়াঁদাদ, বিশ্বনাথ ও জহির আব্বাসের মধ্যে তুলনা চলতো। বাবর আজম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাবর নিয়মিত রান করছেন, কারণ সে সঠিক টেকনিক আয়ত্ত্বে আনতে পেরেছে। তাঁর রানক্ষুধা আছে এবং সে যথেষ্ট ফিট। সে এখনো তরুণ অধিনায়ক, কিন্তু সে দ্রুতই শিখছে। কিন্তু তাই বলে বিরাট কোহলির সাথে তাঁকে তুলনা করাটা বড্ড তাড়াতাড়ি।’
ভারত- পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখন অবধি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বিরাট কোহলি। সাত টি-টোয়েন্টির তিনটিতেই অর্ধশতক সহ তাঁর ঝুলিতে মোট রান ৩১১। এই ফরম্যাট বিবেচনায় তা নিঃসন্দেহে দারুণ অর্জন। তাছাড়া এই ফরম্যাটে ভারত ও পাকিস্তান মোট নয়বার মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে ৬ টিতে ভারত জিতেছে ও বাকী দুইটিতে পাকিস্তান। বাকী আরেকটি ম্যাচ টাই হয়েছে।
যাইহোক ক্রিকেট ভক্তদের অপেক্ষাটা এখন ২৮ আগস্ট ভারত- পাকিস্তান ম্যাচটির জন্য। দুই প্রতিদ্ধন্ধীর চিরচেনা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কারা জয় ছিনিয়ে নিবেন তাই দেখার পালা। সেই সাথে বিরাট কোহলি নিজের চিরচেনা রূপে প্রত্যাবর্তন করবেন কিনা তাও একটি দেখার বিষয়। এদিকে বাবর আজমের নেতৃত্বের ছায়তলে পাকিস্তান বিজয়ের হাঁসি হাসবে কিনা সেটিও অপেক্ষার ব্যাপার।