দলবদলের সাথে সাথেই আরো শাণিত হয়েছে বাবর আজমের ব্যাটের ধার। পিএসএলের এবারের মৌসুমেই পুরনো দল করাচি কিংস ছেড়ে পেশোয়ার জালমিতে এসেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। নতুন দলে আসার পর থেকেই হাসছে তাঁর ব্যাট, এবারে তো পেয়ে গেলেন পিএসএল ক্যারিয়ারের প্রথম টি টোয়েন্টি সেঞ্চুরির দেখা। রাওয়ালপিন্ডিতে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ৬৫ বলে ১১৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন এই তারকা।
বাবর সেঞ্চুরিতে পৌছুছেনও রাজসিক ভঙ্গিতেই, ১৮ তম ওভারে নাসিম শাহের বলকে নিজের ট্রেডমার্ক কাভার ড্রাইভে সীমানাছাড়া করে। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানের টি টোয়েন্টিতে ৮ম সেঞ্চুরি এটি। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে দুই অজি অ্যারন ফিঞ্চ এবং ডেভিড ওয়ার্নারেরও আটটি করে সেঞ্চুরি আছে।
কেবলমাত্র ক্যারিবিয়ান গ্রেট ক্রিস গেইলই টি টোয়েন্টিতে তাঁর চাইতে বেশি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। নিজের ক্যারিয়ারে ২২টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরেই আছেন এই তারকা। সময়ের আরেক সেরা তারকা বিরাট কোহলিও এই তালিকায় আছেন বাবরের পেছনেই, টি টোয়েন্টিতে তাঁর সেঞ্চুরি সংখ্যা ছয়টি। এছাড়া ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাও বিশ ওভারের ক্রিকেটে তিন অংকের দেখা পেয়েছে ছয় বার।
রাওয়ালপিন্ডিতে এদিন রীতিমতো রান উৎসব হয়েছে। বাবরের ব্যাটিংয়ের সামনে পাত্তাই পাননি মোহাম্মদ নওয়াজরা। তাঁর ৬৫ বলে ১১৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের পাশাপাশি ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন তরুণ সায়্যিম আইয়ুব এবং রোভম্যান পাওয়েল।
বাবরের সাথে উদ্বোধন করতে নেমে আইয়ুব খেলেছেন ৩৪ বলে ৭৪ রানের মারকুটে এক ইনিংস। তাঁদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়েই নির্ধারিত ওভার শেষে ২৪১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় পেশোয়ার।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো স্কোরবোর্ডে এত রান করা সত্ত্বেও পরাজিত দলেই থাকতে হয়েছে বাবরদের। দশ বল বাকি থাকতেই রীতিমতো রেকর্ড গড়ে রান তাড়া করে জিতেছে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স। বাবরের ইনিংসের জবাব দিতেই যেন ৬৩ বলে ১৪৫ রানের অভাবনীয় এক ইনিংস খেলেন ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়।
সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ সিরিজের ফর্মটা পিএসএলেও নিয়ে গেছেন এই ওপেনার। ২০ টি চারের সাথে পাঁচ ছক্কায় সাজানো রয়ের ইনিংসের কোনো জবাব ছিল না পেশোয়ারের বোলারদের কাছে। এছাড়া আরেক অভিজ্ঞ তারকা মোহাম্মদ হাফিজ করেন ১৮ বলে ৪১ রান।
টি টোয়েন্টি ক্রিকেটটাই এমন! আপনি কখনোই ম্যাচ শেষের আগে নিজেকে জয়ী ভাবতে পারবেন না। কোনো রানই এই ফরম্যাটে নিরাপদ নয়, আজকের এই ম্যাচ দিয়ে যেন সেই সত্যটাই হাড়ে হাড়ে টের পেলেন বাবর আজমরা।