‘তারা খানিকটা সবুজ (উইকেট) বানিয়েছে। আমাদের জন্যে সেটা ভাল। আমাদের ভাল পেস বোলার আছে, আমাদের ভাল স্পিনারও আছে।’, মিরপুরের উইকেট খানিকটা বিস্মিতই সম্ভবত হয়েছেন আফগানিস্তান টেস্ট দলের অধিনায়ক হাসমাতউল্লাহ শাহিদি।
আফগানদের বিপক্ষে মিরপুরের উইকেট ঠিক কেমন হবে, সেটা নিয়ে ছিল নানান প্রশ্ন। অন্তত আফগান অধিনায়ক এটা নিশ্চিত করে দিয়েছেন, উইকেটে রয়েছে প্রচুর ঘাস। যেন চিরায়ত ধারা থেকে বেড়িয়ে আসার যথেষ্ট প্রয়াসই করছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।
একটা সময় মিরপুরে খেলা মানেই ছিল, স্পিনিং উইকেট। চতুর্থ কিংবা পঞ্চম দিনে গিয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা হয়ে যেত উইকেটের। কারণটাও ছিল স্পষ্টই। বাংলাদেশের তখন মূল ভরসার জায়গা ছিল স্পিন বোলিং। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মত দলকে ধারশায়ী করেছে বাংলাদেশ স্পিনারদের সহয়তায়।
কিন্তু এই একই রকম পরিকল্পনা আফগানদের বিপক্ষে হতে পারে আত্মঘাতী। যদিও আফগান দলে তাদের সেরা তারকা রশিদ খান নেই। তবুও আফগানদের স্পিন আক্রমণ যথেষ্ট ভয় জাগানিয়া। সেই দলের বিপক্ষে পেস সহায়ক উইকেট বানানোই তো বুদ্ধিমানের পরিচয়।
তাছাড়া বাংলাদেশের পেস আক্রমণে রীতিমত রয়েছে নিজেদের ইতিহাসের সেরা সময়ে। তুখোড় সব পেসারদের অভয়ারণ্য যেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। এই সময়টার পূর্ণ ব্যবহারটাই করতে চাইছে বাংলাদেশ। অন্তত সংবাদ সম্মেলনে লিটন দাস সেই ইঙ্গিতটাই দিয়েছেন।
পেস সহায়ক উইকেটে টস এক গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। টসে জিতলে বাংলাদেশ বোলিং নেওয়ার পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই করে ফেলেছে। লিটন বলেন, ‘প্রথমত যেমন কন্ডিশন দেখছি, ওভারকাস্ট চলছে। স্বাভাবিক বিষয় যেকোন দলই কি সিদ্ধান্ত নিতে পারে সেটা আপনারাও ভাল জানেন। যেহেতু সিমিং কন্ডিশন। সবাই চাইবে প্রথম ঘন্টায় সেই সুবিধাটুকু নিতে।’
নিজেদেরকে একটু খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসার সুযোগটাই যেন করে দিচ্ছে টাইগাররা। চিরায়ত নিয়মের বেড়াজাল চিড়ে নিজেদের আরেকটু পোক্ত করে নেওয়ার প্রচেষ্টা। নিজেদের ঘরের মাঠে নিজেদের প্রস্তুত করবার মত সুযোগের ব্যবহারটা নিশ্চয়ই সবাই করতে চায়। তেমনটাই তো হওয়া উচিৎ। সেই বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেছেন লিটন দাস।
তিনি বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই যখন মিরপুরে খেলা হয়, আমরা একটু ঘূর্ণি উইকেটে খেলি। আমাদের চ্যালেঞ্জ এটাই যে আমরা কিভাবে ঘাসের উইকেটে ভাল খেলি। এটাই এখন বিষয় যে, আমরা এখানে কিভাবে সার্ভাইভ করে, কিভাবে বড় ইনিংস গড়তে পারি। এরকম দলের সাথে আপনি সাধারণত ইভেন উইকেটে খেলবেন, সেটাই স্বাভাবিক।’
খানিকটা পরিষ্কার যে পরিকল্পনামাফিকই তৈরি করা হয়েছে উইকেট। যদিও আফগান অধিনায়ক খানিকটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, নিজেদের পেস বোলিং ইউনিটের উপর। তবে লিটন মনে করেন টাইগারদের পেস বোলিং আক্রমণটাও যথেষ্ট শক্তিশালী। তাছাড়া দুইয়ের বেশি পেসার নিয়ে বোলিং আক্রমণ সাজানোর পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন লিটন।
সুতরাং স্পিনারদের লড়াই থেকে, ১৪ জুন শুরু হতে যাওয়া টেস্টটা হবে পেসারদের লড়াই। সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন দেখবার পালা, দুই দলের ব্যাটারদের নাকানিচুবানি ঠিক কতটুকু খেতে হয়।