বাংলাদেশ ফুটবলের পুরনো সেই দৃশ্য

পুরনো চিত্র। নেই কোন তফাৎ। স্রেফ একটা মরীচিকা। তবে শেষটায় একরাশ হতাশা। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের এটাই নিত্যদিনের গল্প। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩ এ নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ২-০ গোলের হার বাংলাদেশের।

র‍্যাংকিংয়ে লেবানন ও বাংলাদেশের তফাৎটা বেশ বড়। প্রায় ১০০ ধাপ উপরে অবস্থান লেবাননের। বাংলাদেশের সামনে শক্ত প্রতিপক্ষ পড়লেই বাংলাদেশ নুইয়ে যায়। সেটাই হয়েছে আরও একবার। ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে শুরু থেকেই দুই দলের পার্থক্যটা ছিল স্পষ্ট।

লেবাননের কাছে রীতিমত পাত্তাই পায়নি জামাল ভুইয়ারা। খেলার মানের সাথে সাথে শারীরিক গড়নের পার্থক্যও ছিল একেবারে স্বচ্ছ। রক্ষণ সামলাতেই হিমশিম খেয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। তারিক কাজি, তপু বর্মণরা নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে গোলবার রক্ষা করবার চেষ্টা করে গেছেন। অন্যদিকে, লেবাননের বেশকিছু শট রুখে দিয়েছেন আনিসুর রহমান জিকো।

প্রথম অর্ধের পুরোটা সময় জুড়ে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে গেছে গোটা লেবানন দল। কিন্তু কাজের কাজ গোলটা করতে পারেনি তারা। তাদেরকে রুখে দিয়ে বেশ ক’বার পাল্টা আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করে বাংলাদেশ। মূলত ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের গতিতে ভর করেই আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ ডান ফ্ল্যাঙ্ক দিয়ে। কিন্তু ভয় ধরানোর মত কোন সুযোগই সৃষ্টি করতে পারেনি হ্যাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা।

প্রথমার্ধে 0-0 গোলে সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল। স্কোরলাইন নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশকে স্বস্তি দিচ্ছিল। তবে বাংলাদেশের পূর্বের রেকর্ড আদোতে স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি তপু বর্মণদের। কেননা শেষ দিকে গোল হজম করবার বাজে অভ্যেস বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবলের বহুদিনের।

হয়েছেও তাই। শেষের মিনিট পনেরোতে দুই গোল হজম করে বাংলাদেশ। প্রথম গোলটা আদায় করেন লেবাননের হাসান মাতুক। সেখানে অবশ্য ভুলটা করেছিলেন তারিক কাজী। পুরোটা ম্যাচ জুড়ে তিনি একাই দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তারিক। তবে শেষের দিকে এসে একটি মাত্র ভুলই তাকে পুড়িয়েছে ভীষণভাবে।

এর আগে অবশ্য সোহেল রানার বাড়ানো দুর্দান্ত এক বল খুঁজে পেয়েছিল ডানদিকে থাকা ফাহিমকে। সে বলটা নিয়ে একাই ডি-বক্সে হাজির হন ফাহিম, বেশ খানিকটা পথ অতিক্রম করে। কিন্তু শেষ অবধি ফিনিশিংটা আর করা হয়ে ওঠেনি ফাহিমের।

কিন্তু লেবানন নিজেদের পাওয়া কোন প্রকার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেনি। বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের মনোযোগের ঘাটতির পূর্ণ ফায়দাটাই তুলে নিয়েছে লেবানন। সংযুক্তি সময়ের ছয় মিনিটের মাথায় ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লেবাননের আক্রমণভাগের খেলোয়াড় খলিল বদর।

তবে প্রথম ম্যাচ হারলেও, বাংলাদেশের সামনে সুযোগ থাকছে এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল খেলবার। সে কারণে তাদেরকে জিততে হবে মালদ্বীপ ও ভুটানের বিপক্ষে। সে কাজের ছক কষেই মাঠে নামতে চাইবে হ্যাভিয়ের কাবরেরার দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link