মোসাদ্দেকের সৈকতে ফেরার তাড়া

ভক্ত-সমর্থকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন না কখনও। আন্ডাররেট হওয়া তো দূরের কথা, তাঁকে কেউ তেমন একটা রেটই করে না।

বাংলাদেশের একমাত্র বহুজাতিক শিরোপা জয়ের নায়ক তিনি। সেই তিনিই আবার দেশের ক্রিকেটের খুবই অনালোচিত এক চরিত্র। তেমন কোনো স্টারডম তাঁর নেই। ভক্ত-সমর্থকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন না কখনও। আন্ডাররেট হওয়া তো দূরের কথা, তাঁকে কেউ তেমন একটা রেটই করে না।

যদিও, প্রায় সবগুলো আইসিসি ইভেন্টের আগেই মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আলোচনায় থাকেন। গত বছর যেভাবে তিনি খেলে ফেলেছিলেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আসর। এবার, ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগেও আলোচনায় আছেন তিনি। এই ফরম্যাটটা তাঁর পছন্দের বটে। এই ফরম্যাটে ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করেই এসেছিল তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ।

এরপর, সময় গড়িয়েছে অনেক। দুই একটা ঝলক বাদে নিজের নামের প্রতি খুব কমই সুবিচার করতে পেরেছেন তিনি। আবার মোসাদ্দেককে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষাও হয়েছে অনেক। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিন-চার কিংবা পাঁচে খেললেও জাতীয় দলে সেই সুযোগ তিনি পেয়েছেন সামান্যই।

জাতীয় দলে ছয়, সাত কিংবা আটেই খেলেছেন বেশি। মোসাদ্দেকের নিজেও এই নিয়ে আক্ষেপ আছে। তিনি নিজেও প্রায়ই বলেন, যে জায়গাটায় ব্যাট করেন সেখানে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ থাকে খুবই কম। যদিও, এবারে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে মোসাদ্দেকের সুুুযোগটা যদিও আসে তাহলেও আসবে সেটা তাঁর ওই অপছন্দের জায়গাতেই।

আর পরিসংখ্যান বলে, ওয়ানডেতে এই সাত নম্বর পজিশনেই সবচেয়ে বেশি খেলেছেন তিনি। আর তুলনামূলক ভাবে এই জায়গাটাতে সফলও তিনি। ক্যারিয়ারে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তাঁর রান যেখানে ৬৩৪, সেখানে কেবল সাত নম্বরেই করেছেন ৪৫৫ রান। গড় ২৬ এর ওপরে। অথচ, এই জায়গাটায় কখনও লম্বা সময় সুযোগও পাননি মোসাদ্দেক। একদম গোড়া থেকেই মোসাদ্দেককে নিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনার অভাব ছিল। তিনি যে, ম্যাচ উইনার সেটার প্রমাণ তিনি ২০১৯ সালের সেই ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালেই দিয়েছেন।

দলের কোচ এখন চান্দিকা হাতুরুসিংহে। এই হাতুরুসিংহের জমানাতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক মোসাদ্দেকের। তবে, বাকি অনেকের মত চান্দিকার প্রিয় ছাত্র তিনি কখনোই ছিলেন না। বিশেষ করে, সৌম্য সরকারের প্রতি কোচের যেমন মনোভাব সেটা কখনোই পাননি সৈকত। আর সৌম্যর ব্যাটিংয়ের চাকচিক্য মোসাদ্দেকের মধ্যে নেই, সেটা না বলে দিলেও চলে। কিন্তু, কার্যকর হলে চাকচিক্য না থাকলেও তো চলে।

এবার সাত নম্বরের আলোচনায় সৈকতের সাথে আছেন সৌম্যও। ফলে, বিষয়টা মোসাদ্দেকেরও ভাল করেই জানা আছে। তিনি নিজেও চাইবেন, যে করেই হোক হাতুরুর মন জয় করে বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করতে। তাঁর জন্য সুবিশাল সাগর পাড়ি দিয়ে তবেই সৈকতে ভিড়তে হবে মোসাদ্দেককে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...