ঘড়িতে বিকেল পাঁচটা বাজতে চলেছে। দিনের অনুশীলন তখন শেষ। বাংলাদেশ দলের অধিকাংশ ক্রিকেটারই মাঠ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমন সময়ই আবারো মাঠে কয়েক জনকে নিয়ে প্রবেশ করলেন ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডরমাট। ট্রেনার নিক লিকে সাথে নিয়ে শুরু করলেন স্লিপ ফিল্ডিং অনুশীলন।
উইকেট রক্ষকের দায়িত্বে দেখা গেল মুশফিকুর রহিমকে। এছাড়া স্লিপ ফিল্ডিংয়ে মনোযোগ দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাঁর পাশেই আবার দাঁড়িয়েছেন তৌহিদ হৃদয়। শান্ত, মুশফিকদের এই অনুশীলন আবার পিছনে দাড়িয়েই দেখছিলেন লিটন কুমার দাসে। আসলে ম্যাচে তো কিপিংটা তাঁরই করার কথা।
তবে মুশফিক, শান্ত, হৃদয়দের নিয়ে বেশ সিরিয়াস ফিল্ডিং কোচ ম্যাকডরমট। তিনি একেকটা বল ছুঁড়ছেন আর সেগুলো ব্যাটে আলতো ছোঁয়া দিয়ে নিক লি পাঠাচ্ছেন স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারদের দিকে। এভাবেই বেশ খানিকক্ষণ চললো। আর সেটা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন হেড কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে।
এরপর নিক লির কাছ থেকেই নিজেই ব্যাটটা তুলে নিলেন হাতুরু। নিজ হাতে করালেন ক্যাচিং অনুশীলন। আর এর মধ্যদিয়েই শেষ হল বাংলাদেশ দলের আজকের দিনের অনুশীলন। বাংলাদেশ দল রোববার অনুশীলন শুরু করেছিল দুপুর দুইটায়।
আজ অনুশীলন শুরু হয়েছিলই অবশ্য ফিল্ডিং দিয়ে। পুরো দল শুরুতেই অনুশীলন করেছে মূল মাঠে। টুকটাক ফিল্ডিং অনুশীলন তো প্রতি সিরিজের আগেই হয়ে থাকে। তবে, ফিল্ডিংটা যেন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। পুরো দলকে একসাথে এতটা সিরিয়াস ভাবে ফিল্ডিং অনুশীলন করতে খুব কমই দেখা যায়।
প্রায় আধাঘণ্টা ফিল্ডিং করার পর দলের সবাই চলে যায় ইনডোর স্টেডিয়ামের দিকে। আর সেখানেই নিজেদের ব্যাট ও বল হাতে ঝালিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ব্যাটররা অনুশীলন করেছেন বোলিং মেশিন দিয়েও। মেশিন থেকে বেরিয়ে আসা বাউন্সার গুলোই বেশি মোকাবেলা করতে দেখা গিয়েছে আজ।
এছাড়া জোফরা আর্চারদের সামলানোর জন্য গ্রানাইটেও ব্যাটিং অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের। ফলে বোঝাই যাচ্ছে ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণ নিয়ে বেশ চিন্তিত বাংলাদেশ দল। অবশ্য মিরপুরের উইকেটে ইংল্যান্ডের পেসারদের থামানোর পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে ওয়ানডে সিরিজের উইকেট হবে বেশ ধীরগতির। আজ সংবাদ সম্মেলনেও সেই আভাসই দিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
উইকেট নিয়ে তামিম বলেন, ‘আমরা আমাদের শক্তি বিবেচনা করেই উইকেট তৈরি করার চেষ্টা করব। দেখেন ইংল্যান্ডে গেলে ওরা কী ধরনের উইকেট বানাবে সেটায় আমাদের কিছু করার থাকে না। এখানে আমরাও তাই করব। অবশ্য এটা রকেট সাইন্স না। ইংল্যান্ডও জানে কী ধরনের উইকেট হতে যাচ্ছে। যদি স্পিন উইকেটও হয় তাহলে আমার জন্যও কঠিন। কেননা আমাকে তো এখানেই রান করতে হবে।’
মিরপুরে প্রথম দুই ম্যাচ যে স্পিনারদেরই রাজত্ব থাকবে তা বলাই যায়। তবে চ্যালেঞ্জিং হবে চট্টগ্রামে সিরিজের শেষ ম্যাচটা। সেখানকার উইকেট যথেষ্ট স্পোর্টিংই হওয়ার কথা। সেখানে আগ্রাসী ইংল্যান্ডকে বাংলাদেশ কতটা সামলাতে পারে সেটাই দেখার বিষয়।