Social Media

Light
Dark

ইংলিশ পরীক্ষায় ডাহা ফেল বাংলাদেশ

২০১৫ সালের পর থেকে ঘরের মাঠে মোটে একটি ওয়ানডে সিরিজই হেরেছিলো বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সিরিজ হারের বদলা নেবার সুযোগ ছিলো এবার। সুযোগ ছিলো ওয়ানডেতে ঘরের মাঠে দুর্দান্ত সাফল্যের পালকে থাকা একমাত্র কালো দাগটি দূর করার।

কিন্তু সিরিজ জয় তো হলোই না, উল্টো ইংল্যান্ডের কাছে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৩২ রানের ব্যাবধানে হেরে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হার নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। চট্টগ্রামের মাটিতে শেষ ওয়ানডে এখন হোয়াইট ওয়াশ এড়ানোর লড়াই বাংলাদেশের জন্য।

প্রথম ম্যাচে হেরে সিরিজ বাঁচাতে এই ম্যাচে জিততেই হতো বাংলাদেশকে। এমন ম্যাচে টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান তামিম ইকবাল। কিন্তু টস জিতে বোলিং নেবার সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে পারেননি নতুন বলে দুই প্রান্তে বোলিং করা দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান।

বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য আসে তাসকিন আহমেদের হাত ধরে ইনিংসের সপ্তম ওভারে। স্লিপে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্তর অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত হয়ে সাত রানে আউট হন ফিল সল্ট। এরপর ডেভিড মালানকে নিয়ে রানের চাকা দ্রুত ঘোরাতে থাকেন জেসন রয়। কিন্তু গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মালানকে বেশি দূর আগাতে দেননি মিরাজ।

এরপর জেমস ভিন্সও দ্রুত ফিরে গেলে ৯৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে তখন চাপে ইংল্যান্ড। কিন্তু সেই চাপকে পাত্তা না দিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হন জেসন রয় আর জস বাটলার। ৯৩ বলে ১০৯ রানের দারুণ এক জুটিতে ইংল্যান্ডকে বড় রানের ভীত গড়ে দেন এই জুটি।

বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন রয়। প্রথম থেকেই বোলারদের শাসন করে ক্যারিয়ারের ১২ তম সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ওপেনার। সাকিব আল হাসানের বলে আউট হবার আগে খেলেছেন ১২৪ বলে ১৩২ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। জেসন রয়ের পর উইল জ্যাকসও ফিরে গেলে এবার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বাটলার। মিরাজের নিজের বোলিংয়ে দুর্দান্ত এক ফিরতি ক্যাচে পরিণত হবার আগে খেলেছেন ৬৪ বলে ৭৬ রানের ইনিংস।

বাটলারের আউটের পর মঈন আলি ও এ ম্যাচেই একাদশে সুযোগ পাওয়া স্যাম কারানের ক্যামিওতে রানের পাহাড়ে চড়ে বসে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশি বোলার ফিল্ডারদের অসংখ্য ভুলের সুযোগ নিয়ে সাত উইকেটে ৩২৬ রানের বিশাল সংগ্রহ দাড় করায় ইংলিশরা।

একে তো সিরিজে পিছিয়ে থাকার চাপ তার ওপর এমন বিশাল রানের টার্গেট ; এই দুই চাপ মিলিয়ে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। স্যাম কারানের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশের নেই দুই উইকেট। রানের খাতা খোলার আগেই লিটন দাস ও নাজমুল শান্তকে সাজঘরে ফেরান কারান।

এরপর নিজের বাজে ফর্মের ধারা অব্যাহত রেখে পাঁচ বলে চার রান করে আউট হন মুশফিকুর রহিমও। নয় রানে তিন উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকছে বাংলাদেশ। এরপর বিপর্যয় থেকে বাংলাদেশকে টেনে তোলার লড়াইয়ে নামেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। দেখে শুনে খেলতে থাকেন দুইজনই। তবে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউই।

৭৯ রানের জুটি গড়েন দুই জনে মিলে। ৬৫ বলে ৩৫ রান করে মঈন আলির শিকার হন তামিম। তামিম আউট হবার পর বেশিক্ষণ টেকেননি সাকিব আল হাসানও। ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নিয়ে ৬৯ বলে ৫৮ রান করে আদিল রশিদের বলে আউট হন সাকিব। সাকিব আউট হবার পর অল্প করে জ্বলতে থাকা বাংলাদেশের আশার আলো নিভে যায়।

সাকিবের আউটের পর মাহমুদুল্লাহ ও আফিফ হোসেন কিছুটা চেষ্টা করলেও তা কখনোই যথেষ্ট ছিলো না বাংলাদেশের জয়ের জন্য। ৩২ রানে মাহমুদুল্লাহ আর ২৩ রান করে আফিফ হোসেন ফিরে যান। শেষের দিকে তাসকিনের ২১ রানের ইনিংস শুধু হারের ব্যাবধানই কমিয়েছে বাংলাদেশের জন্য।

১৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো জস বাটলারের দল। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের আশা এবারেও পূরণ হলো না টাইগারদের। চট্টগ্রামে শেষ ম্যাচ জিতে তাই হোয়াইটওয়াশ এড়ানোই শুধু নয়, ওয়ানডে সুপার লিগের গুরুত্বপূর্ণ দশ পয়েন্টের দিকেও চোখ থাকবে বাংলাদেশের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link