দশ বছর আগে ফিরে গিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট, ২০১৪ সালে যেভাবে একের পর এক ম্যাচ হেরে বিধ্বস্ত নগরীতে রূপ নিয়েছিল লাল-সবুজের ক্রিকেটাঙ্গন এখনও ঠিক সে রকম সময় পার করতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হার, ওয়ার্ম আপ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ সেটারই প্রমাণ। কিন্তু এতকিছুর পরেও ক্রিকেটারদের মাঝে ঘুরে দাঁড়ানোর নূন্যতম প্রচেষ্টাও দেখা যাচ্ছে না!
বিস্ময়কর হলেও ব্যাপারটি সত্যি, একের পর এক ব্যর্থতা উপহার দেয়া সত্ত্বেও গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরছেন লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্তরা। বিশ্বকাপ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে খেলা নয় বরং ঘুরাঘুরিতেই বেশি মনোযোগ তাঁদের – এখন পর্যন্ত মার্কিন মুল্লুকে পনেরো দিন অবস্থান করে মাত্র চারটি প্র্যাকটিস সেশন করেছেন তাঁরা, ঐচ্ছিক অনুশীলনেও আসেন না অধিকাংশ ক্রিকেটার।
অথচ বিভিন্ন সামাজিক এবং তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে ঠিকই উৎসাহের সাথে অংশ নিয়েছেন সবাই। সাকিব আল হাসান তো নিজের বাসাতেই ছোটখাটো উৎসবের ব্যবস্থা করেছিলেন, সেখানে ক্রিকেটারদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন লন্ডনের প্রভাবশালী বাঙালিরা।
এছাড়া মসজিদ নির্মাণ কাজের তহবিল গঠনে সাহায্য করতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছেন সাকিব, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তানজিম হাসান সাকিব এবং হাসান মাহমুদ। ২০ ডলার করে মসজিদ নির্মাণ তহবিলে দানের বিনিময়ে অনেক স্থানীয় মানুষ ক্রিকেটারদের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন সেখানে। আবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের পরদিন ‘সাকিব আল হাসান ক্যানসার হসপিটাল’ প্রতিষ্ঠার জন্য তহবিল সংগ্রহে আরেকটি নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
যদিও টি-টোয়েন্টির মারকাটারি খেলায় ওভার প্রতি ছয় রান করতেই কষ্ট হয়ে যায় টাইগার ব্যাটারদের। টপ অর্ডার তো ব্যাট করাই ভুলে গিয়েছে, তাহলে এত নির্ভার থাকার কারণ কি? কেন অনুশীলনের চেয়ে মানসিকভাবে ফুরফুরে থাকতেই বেশি আগ্রহী বাংলাদেশ – এমন প্রশ্ন তোলাই যায়।
শান্ত বাহিনী হয়তো দ্বিতীয় পর্বে খেলার ব্যাপারে বড্ড আত্মবিশ্বাসী, সে জন্যই এভাবে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি সারছেন। কিন্তু ঠুনকো আত্মবিশ্বাস কি আসলেই জ্বলে ওঠার জ্বালানি হতে পারবে মূল মঞ্চে নাকি ২০২১ কিংবা ২০২৩ বিশ্বকাপের মত ভরাডুবি ডেকে আনবে? আপাতত সেই উত্তরের অপেক্ষায় আছে পুরো দেশ।