আর্শদ্বীপ সিংয়ের একটা ইনসুইং ডেলিভারি। ফর্ম নিয়ে ধুঁকতে থাকা লিটন কুমার দাসের কাছে ছিল না কোন উত্তর। ছত্রখান স্ট্যাম্প। মৃদু উদযাপন আর্শদ্বীপের। নেয়াহেত গা গরমের ম্যাচ কি-না, এত উদযাপন করে কি হবে?
সম্ভবত বাংলাদেশের টপ অর্ডারও ঠিক একইভাবে চিন্তা করেছে। গা গরমের ম্যাচে নিজেকে বাজিয়ে দেখারও বিশেষ কোন প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন নেই নতুন কিছু চেষ্টা করবার। প্রয়োজন নেই খারাপ সময় থেকে বেড়িয়ে আসার প্রয়াশ করবার। এ তো কেবল গা গরমের ম্যাচ!
শুধু কি লিটন? না সৌম্য সরকারও একই ভাবনাতেই ছিলেন। তিনি অবশ্য ভিন্ন প্রয়াশ করেছেন। আগ্রাসী এক শুরু এনে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু প্রলোভনের ফাঁদে পা দিতে বিন্দুমাত্র ভুল হয়নি তার। অফ স্ট্যাম্পের বেশ বাইরে দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়া বলকে তিনি তাড়া করেছেন। যা হওয়ার হয়েছে তাই। উইকেটরক্ষকের তালু-বন্দী সৌম্য সরকার।
দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের কিংকর্তব্যবিমূঢ় আউট হওয়ার ধরণের পর অধিনায়কের কাছ থেকে দায়িত্বশীল এক ইনিংসের ছিল প্রত্যাশা। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত এই ম্যাচকে প্রস্তুতি ম্যাচ হিসেবেই নিয়েছেন। না প্রস্তুতি না, অপ্রয়োজনীয় এক ম্যাচ, আইসিসি বলেছে বলে খেলতে হচ্ছে আরকি।
একটু বাউন্সি বলে তিনি ব্যাট চালালেন। পুল শট খেলবার ইচ্ছে ছিল হয়ত। কিন্তু কোমড় উচ্চতার বলটায় ব্যাটের আঘাত হয়নি যথাযথ। মিড অনে ক্যাচ দিয়ে তিনিও ফিরলেন প্যাভিলিয়নে। ৬টি বলের প্রস্তুতি শেষ হয় শূন্য রানে। টপ অর্ডারের চার ব্যাটারের কনিষ্ঠজন তাও একটু চেষ্টা করেছেন। তানজিদ তামিমের সে চেষ্টার অবশ্য কোন অর্থ দাঁড়ায়নি।
বাংলাদেশের টপ অর্ডারের এমন বেহাল দশা কি নতুন? উত্তর হচ্ছে, না নতুন না। প্রস্তুতি ম্যাচ হোক বা মূল প্রতিযোগিতা, বাংলাদেশের টপ অর্ডার সর্বদাই দিশেহারা। তারা উইকেট পড়তে জানেন না। তারা যেন বাইশ গজকে আপন করে নিতে পারেন না। তাইতো সফলতা তো দূরে থাক লড়াইটা করা হয়ে ওঠে না।
ধারাভাষ্যকক্ষে থাকা সঞ্জয় ব্যাঙ্গার তাই অনায়াসে বাংলাদেশের ব্যাটারদের দূর্বলতা বলে দিতে পারেন। একটু বাউন্সি উইকেটে ভারতের ব্যাটাররা যেখানে উইকেটের পেছনের দিকে শট বেশি খেলেছেন, সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটাররা সম্মুখভাগেই খেলেছেন বেশি। এখানেই উইকেট পড়তে পারার ঘাটতি।
ভারতীয় ব্যাটাররা ক্রিজের ভেতর নিজেদের পা গেড়ে দেননি কোন এক বটগাছের মত। বরং তারা স্পিনারদের বিপক্ষে পায়ের ব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশের ব্যাটাররা এখানেও ছিলেন পিছিয়ে। বোলারদের ভয়ে ছোট্ট সাদা বক্সে আটক তারা। বিশেষ করে টপ অর্ডার। ও, এ তো ছিল কেবলই গা গরমের ম্যাচ।