বেন সাগির, যাকে ঘিরে আগ্রহের শেষ নেই বার্সেলোনার

তার বয়স সবে ১৯। ইতোমধ্যেই তিনি হয়ে উঠেছেন মোনাকোর মূল দলের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তার প্রতিভার ফলে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাব গুলোর তার উপরে নজর পড়েছে। বার্সেলোনার তাকে দলে ভেড়ানোর জন্য বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

ফরাসি ক্লাব এএস মোনাকো বরাবরই তরুণ প্রতিভাদের গড়ে তুলতে বেশ সুপরিচিত। থিয়েরি হেনরি, ইমানুয়েল পেটিট, লিলিয়ান থুরামের মতো ফরাসি কিংবদন্তিরা এই একাডেমি থেকেই উঠে এসেছেন। সম্প্রতি কিলিয়ান এমবাপ্পে, অরেলিয়েন চুয়ামেনি এবং বেনোয়েট বাদিয়াশিলের মতো খেলোয়াড়রাও একই ধারা বজায় রেখেছেন। ঠিক একই ভাবে গড়ে উঠছেন এক তরুণ তারকা। যার নাম এলিসে বেন সাগির।

এলিসে বেন সাগির হয়ে উঠতে পারেন ফুটবল বিশ্বের পরবর্তী তারকা। তার বয়স সবে ১৯। ইতোমধ্যেই তিনি হয়ে উঠেছেন মোনাকোর মূল দলের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তার প্রতিভার ফলে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাব গুলোর তার উপরে নজর পড়েছে। বার্সেলোনার তাকে দলে ভেড়ানোর জন্য বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

২০০৫ সালে ফ্রান্সে বেন সাগির জন্মগ্রহণ করেন। জন্মগতভাবে তিনি ফরাসি হলেও বংশগত ভাবে মরোক্কান। ৫বছর বয়স থেকেই তিনি ফুটবলের হাতেখড়ি নেওয়া শুরু করেন। ২০১৬ সালের দিকে ফরাসি ক্লাব নীস তার উপর আগ্রহ দেখায়। তিনি শারীরিক ভাবে শক্তিশালী নয় বলে পরবর্তীতে নীস তার প্রতি আগ্রহ হারায়।

২০২০ সালে মোনাকো তার উপর আগ্রহ দেখায় এবং তাকে দলে টানতে সক্ষম হয়। মোনাকো তার কৌশল গত দক্ষতার উপর ভরসা রাখেন। দুই বছর একাডেমিতে খেলার পর ২০২২ সালে তার মূল দলে অভিষেক হয়। ফরাসি লিগের অভিষেক ম্যাচেই ১৭ বছর বয়সে তিনি দুইটি গোল করে মোনাকোকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জেতাতে সাহায্য করেন।

এই ফরাসি ফরোয়ার্ড ফরাসি লিগ ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা। তার মোনাকোর সাথে প্রথম মৌসুমেই ২৫ ম্যাচে আটটি গোল করেছিলেন। তার এই দুর্দান্ত পারফরমেন্সের ফলে ভক্তরা খুশি হয়ে তাকে “লিটল প্রিন্স” নাম দিয়েছেন।

বেন সাগির একজন ভারসেটাইল খেলোয়ার। ফ্রন্ট লাইনের যেকোনো পজিশনেই তিনি খেলতে পারেন। তার কৌশলগত দক্ষতা এবং নির্ভিক ভাবে খেলা অন্য সকল খেলোয়াড়ের থেকে তাকে আলাদা করেছে। এতো কম বয়সে এত নির্ভিক ভাবে খেলা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তার বল রাখার দক্ষতা, ফাঁকা জায়গাকে কাজে লাগানো এবং ড্রিবলিং ক্ষমতা তাকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

তবে শীর্ষ ক্লাব গুলোর হয়ে খেলার জন্য তাকে নিজেকে আরো শাণিত করতে হবে। তার খেলার মাঠে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতাকে আরও ভালো করতে হবে। তার ড্রিবলিং ক্ষমতা অবশ্যই ভালো তবে কখন ড্রিবলিং করতে হবে কখন বল ছাড়তে হবে এই বিষয়গুলো বোঝার জন্য তার আরও সময় দরকার। এছাড়াও ডিফেন্সিভলি তার দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন।

এলিসে বেন সাগিরের এই উত্থান ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অনুপ্রেরণা এবং উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার অসাধারণ প্রতিভা এবং নির্ভীক খেলার ধরণ তাকে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর নজরে এনেছে। তবে বেন সাগির জানেন যে, কেবল প্রতিভা দিয়ে শীর্ষে পৌঁছানো সম্ভব নয়। সাফল্যের শীর্ষে টিকে থাকার জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য অপরিহার্য।

ফরাসি লিগে তার সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে এবং ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে, খুব দ্রুতই আমরা বেন সাগিরকে বার্সেলোনার মতো ক্লাবের জার্সিতে দেখতে পারি।

তরুণ এই খেলোয়াড়ের যাত্রা শুরু হয়েছে একটি স্বপ্ন পূরণের পথে। ভবিষ্যতে তার কর্মক্ষমতা এবং মানসিক দৃঢ়তা কেবল মোনাকো নয়, গোটা ফুটবল বিশ্বকে গর্বিত করবে। বেন সাগির কবে লিটল প্রিন্স থেকে ফুটবল কিং হয়ে উঠবেন – এখন সেটাই দেখার পালা।

Share via
Copy link