এশিয়া কাপের দল ঘোষণার সময় পেরিয়ে গিয়েছে ইতোমধ্যেই। তবে ইনজুরির কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যে বাড়তি তিন দিন সময় চেয়েছিল সেটিরও আজ শেষ দিন। ফলে সকাল থেকেই মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে তাক করা অসংখ্য ক্যামেরার লেন্স। তবে সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও ভিতর থেকে দল ঘোষণা করার কোন খবর আসেনা।
ফলে গুঞ্জন বাড়তেই থাকে এশিয়া কাপের দলে সাকিব থাকছেন কী থাকছেন না এই নিয়ে। বেট উইনার নিউজের সাথে চুক্তি করার পর জল ঘোলা হয়েই চলেছে। কয়েক দফা আলোচনা করেও কোন সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি বিসিবি ও সাকিব আল হাসান। কেননা সাকিবও মোটা অংকের টাকার চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি নন। আবার বিসিবিরও জিরো টলারেন্স যেকোন বেটিং সংস্থার ব্যাপারে।
ওদিকে দিয়ে সময় চলে যাচ্ছিল এশিয়া কাপের দল ঘোষণার। এশিয়া কাপে সাকিব খেলবেন কী খেলবেন না এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল ক্রিকেট পাড়ায়। জানা যায় সাকিব চুক্তি থেকে না সরে আসলে তাকে ছাড়াই এগিয়ে যেতে চায় বিসিবি। কেননা বিসিবি তো বটেই বাংলাদেশের আইনেও বেটিং নিষিদ্ধ।
এছাড়া সাকিব ছাড়াও আরো এক বা একাধিক বাংলাদেশি ক্রিকেটার এই চুক্তির প্রস্তাব পেয়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে তারা বিসিবি ও দেশের আইনকে সম্মান জানিয়ে সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। তবে সাকিব আল হাসান প্রায় দশ কোটি টাকার এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। ফলে এবার কোনভাবেই সাকিবকে ছেড়ে কথা বলবেনা বিসিবি।
সেজন্যই আজ বেক্সিমকো অফিসে বৈঠকে বসেছিলেন বিসিবির শীর্ষমহল। সেখানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সহ আরো অনেকেই ছিলেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে আসেন নাজমুল হাসান পাপন। তাঁর কথায় পরিস্কার, বেটউইনার নিউজের সাথে চুক্তি বাতিল না করলে প্রয়োজনে নিষিদ্ধও করা হতে পারে সাকিবকে।
তিনি আবারও সাফ জানিয়ে দেন যে, এক বিন্দুও ছাড় দেবে না বিসিবি। তিনি বলেন, ‘সাকিবকে বেটউইনারের চুক্তি থেকে সরে আসতে বলা হয়েছে। বিসিবি বা আইসিসির আইনে বেটিংয়ের কোনো জায়গা নেই। এর সাথে সম্পর্ক রাখার কোনো সুযোগ নেই। সাকিব এখন অধিনায়ক হওয়া তো দূরের কথা, দলের জায়গাও হারাতে পারে। আমি মনে করি, বেটিংয়ের সাথে সম্পর্ক আছে এমন কারো বিসিবিতেও জায়গা হওয়ার সুযোগ নেই।’
সাকিবকে এই ব্যাপারে চিঠি দিয়েছিল বিসিবি। এখনও তাঁর কোনো জবাব বিসিবি পায়নি। বোর্ড সভাপতি বলেন, ‘ওকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে ওর সাথে কথাও হয়েছে। ওর জবাব দেওয়ার কথা। আমি ভেবেছিলাম, গতকাল রাতেই পাবো। এখনও পাইনি। সেই চিঠির উত্তরের অপেক্ষা করছি।’
সাকিবকে কোনো কারণে নিষিদ্ধ করা হলেও সেটা নিয়ে চিন্তিত নন বোর্ড সভাপতি। তিনি বলেন, ‘সাকিবের মত খেলোয়াড় আমাদের এই মুহূর্তে নেই। এটা ঠিক। তারপরও এটা ঠিক যে ও থাকার পরও অনেক ম্যাচ আমরা হেরেছি। আবার ও না থাকার পরও আমরা জিতেছি। জিম্বাবুয়েতে একটা ম্যাচ আমাদেরকে মোসাদ্দেক পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছে। ফলে, অধিনায়কত্ব এখানে কোনো ইস্যুই না।’
বোঝাই যাচ্ছে, সাকিবের ইস্যুতে হার্ডলাইনে চলে গিয়েছে বোর্ড। এখন সাকিব কোন পথে হাঁটেন – সেটাই দেখার বিষয়। তবে, সাকিবের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা যে বিসিবি করছে, তাঁর বড় প্রমাণ হল এখন অবধি এশিয়া কাপের দল ঘোষণার কোনো নামই নেই!