বিসিবির রেসিপি উল্টে কিউরেটরের রাজত্ব মিরপুরে

এমনিতেই মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটের দূর্নাম আছে। সর্বশেষ পাকিস্তান সিরিজেও প্রতিপক্ষ দলের কোচ মাইক হেসন সরাসরি উইকেটের সমালোচনা করে গেছেন।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক আছে। এবার সেই অসন্তোষ স্পষ্টভাবে প্রকাশ করল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আর তাতে বোঝা গেল, বোর্ডের রেসিপি না মেনে নিজের মন মত উইকেট বানাচ্ছেন লঙ্কান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা।

বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম জানিয়ে দেন, মিরপুরের উইকেট যেমন হওয়া উচিত, সেটা হচ্ছেই না— আর এটা বোর্ড চাইলেও বদলাতে পারছে না।

সম্প্রতি পাকিস্তান সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জিতলেও প্রথম দুই ম্যাচের স্লো উইকেট নিয়ে বিতর্ক ছিল। অনেকেই মনে করছেন, ওই ধরনের উইকেট ব্যাটারদের জন্য খেলা কঠিন করে তোলে, যা মূলত স্বাগতিকদের জন্য বাড়তি সুবিধা হয়ে দাঁড়ায়।

তৃতীয় ম্যাচে তুলনামূলক ভালো উইকেটে খেলেও বাংলাদেশ হেরে যায়। ফলে প্রশ্ন উঠে— ঘরের মাঠে উইকেট নিয়ে কি তাহলে এখনো কোনো পরিষ্কার নীতি নেই?

নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘বোর্ড কখনোই ধীরগতির বা লো বাউন্সের উইকেট বানানোর নির্দেশ দেয়নি। বরং বারবার চাওয়া হয়েছে ব্যালান্সড উইকেট। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আমরা সবসময় চেয়েছি স্পোর্টিং উইকেট— যেখানে ব্যাটার ও বোলার দু’জনেরই সুযোগ থাকবে। কিন্তু যারা উইকেট প্রস্তুতের দায়িত্বে, তারা সেটা করতে পারেনি।’

প্রশ্ন হল, তারপরও কেন গামিনি ডি সিলভার চুক্তির মেয়াদ এক বছর বাড়ান হল? লঙ্কান এই কিউরেটরকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার কোনো শেষ নেই। বলা হয়, বিসিবির লঙ্কান সিন্ডিকেটের অংশ বলেই তাকে সরিয়ে দেওয়া মুখের কথা নয়।

গামিনির বানানো আইসিসির পক্ষ থেকে ডিমেরিট পয়েন্টও দেওয়া হয়েছে। খেলোয়াড়দের সাথে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। তবুও গামিনি টিকে গেছেন বারবার।

এমনিতেই মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটের দূর্নাম আছে। সর্বশেষ পাকিস্তান সিরিজেও প্রতিপক্ষ দলের কোচ মাইক হেসন সরাসরি উইকেটের সমালোচনা করে গেছেন।

টেলিভিশন অনুষ্ঠানে গিয়ে বুলবুল নিজেও কোনো রাখঢাক না রেখেই বলে দিয়েছিলেন, ‘মিরপুরের উইকেট বিলো স্ট্যান্ডার্ড।’ এমন অবস্থায় বড় সিদ্ধান্ত ছাড়া সমাধান আসবে বলে মনে হয় না। মাটির ধরন, উইকেট প্রস্তুতির বিজ্ঞান এবং মাঠ ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ— সব মিলিয়ে বিসিবিকে নতুন করে ভাবতেই হবে।

Share via
Copy link