ভুল সময়ের জাল ছিঁড়ে আলোর পথে ওয়েবস্টার

কঠিন এক জয়ের সঙ্গী হয়েছেন অভিষিক্ত বিউ ওয়েবস্টার। আরেকটু আক্ষেপই যেন বাড়িয়ে দিলেন তিনি। এ যেন ভুল সময়ে জন্মের খেসারত।

তাকে আদর করে সবাই গ্যারি সোবার্স ডাকেন। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে ঠিক এতটাই দাপটের সাথে বিচরণ করেন বিউ ওয়েবস্টার। সিডনি টেস্টের আগে ক্রিকেট বিশ্বে হয়ত খুব কম সংখ্যক মানুষই তাকে চিনত। অভাগা ওয়েবস্টারের যে সেটাই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ। মিশেল মার্শ নামক বাতির প্রখরতা যেন ঢেকে রেখেছিল ওয়েবস্টারকে।

তাই তো ৩১ বছর বয়সে এসে অভিষেক হয়েছে তার। অজিদের সেই ব্যাগি গ্রিন ক্যাপটা অবশেষে উঠেছে তার মাথায়। এই দিনটির জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ এক দশক। ১০ বছরের অপেক্ষার অবসানকে ম্লান হতে কে-ই বা দিতে চান। ওয়েবস্টার তাই তো অজিদের জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

উইকেট পেয়েছেন মোটে একটি। দুই ইনিংস মিলিয়ে রান করেছেন ৯৬। এই দেখে হয়ত হুঙ্কার দেবেন অনেকেই বলে বসবেন, ‘কি এমন করেছে সে?’ তার পারফরমেন্সের গভীরতা পরিমাপ করতে হলে পরিস্থিতিও নিতে হবে বিবেচনায়।

প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে বাইশ গজে হয়েছে তার আগমন। সেখান থেকে একটা প্রান্ত আগলে রাখা শুরু। ভারতের বোলিং আক্রমণ যখন বাকিদের নাভিশ্বাস তুলেছে তখনও, ওয়েবস্টার ছিলেন মাটি কামড়ে।

দলের নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। ততক্ষণে ম্যাচ বাঁচানোর মত অবস্থানে পৌঁছে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ৫৭ রান অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসেই যুক্ত হয়ে যায় বিউ ওয়েবস্টারের নামের পাশে।ম্যাচ বাঁচানোর সুযোগ এলে সে ম্যাচ জিততে বেশ ভালভাবেই জানে ‘দ্য মাইটি অস্ট্রেলিয়া’।

ম্যাচটা শেষ অবধি জিতে নিয়েছে অজিরা। আর অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে পোড় খাওয়া ওয়েবস্টার দলের তরী ভিড়িয়েছেন জয়ের বন্দরে। চার রানের লিডকে ভারত নিয়ে গিয়েছিল ১৬১ অবধি। ১৬২ রানের টার্গেটেও খানিকটা ভয় ধরিয়ে দেওয়ার মত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। ১০৪ রানে চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে অস্ট্রেলিয়ার।

যেকোন টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করা কি দূর্বিষহ! আবার যদি হয় ভারত প্রতিপক্ষ। কিন্তু ওয়েবস্টার তেমন কিছু অনুভব করতেই দিলেন না অজিদের। অপরাজিত থেকেছেন ৩৯ রানে। কঠিন এক জয়ের সঙ্গী হয়েছেন অভিষিক্ত বিউ ওয়েবস্টার। আরেকটু আক্ষেপই যেন বাড়িয়ে দিলেন তিনি। এ যেন ভুল সময়ে জন্মের খেসারত।

Share via
Copy link