মুশফিক ছিলেন বলেই অঘটন ঘটতে দেননি!

টানা দুই ম্যাচেই শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকা, দলের জয় নিশ্চিত করা। মুশফিকুর রহিমই যে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের প্রাণভোমরা। যার ওপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায়, যিনি ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকেন দলের ঢাল হয়ে।

টানা দুই ম্যাচেই শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকা, দলের জয় নিশ্চিত করা। মুশফিকুর রহিমই যে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের প্রাণভোমরা। যার ওপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায়, যিনি ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকেন দলের ঢাল হয়ে।

৩০ বলে ২৮ রান, স্ট্রাইক রেট ৯৩। না, টি-টোয়েন্টির সাথে এই স্কোরটা একেবারেই যায় না। তবে কেন এত আলোচনা, কেন এত প্রশংসাবাণী মুশফিকুর জন্য। উত্তরটা এক কথায় দেওয়া যেতে পারে, মুশফিক ছিলেন বলেই অঘটন ঘটতে দেননি।

ম্যাচের প্রেক্ষাপটে একটু ফেরা যাক। ১২৫ রানে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা রাজশাহী তখন ৬৭ রানে হারিয়েছে দুই উইকেট। ফিরে গেছেন সেট ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। মুশফিক ক্রিজে নামার পর চোখের সামনে দেখলে আরেক সেট ব্যাটার তানজিদ তামিমের সাজঘরে চলে যাওয়া।

হুসাইন তালাত আসেন তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য। তবে তিনিও ফিরে যান তিন রানের ব্যবধানে। অর্থাৎ ৬৭ থেকে ৭৩ এই ছয় রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে হঠাৎ হোচট খায় রাজশাহী। আশঙ্কা জাগে, মাঝপথে খেয়ে হারিয়ে ফেলার। এখান থেকে আর দুই-একটা হারিয়ে ফেললে যে পথ কঠিন হয়ে যাবে তা বুঝে ফেললেন মুশফিক।

এরপর নিজেকে খোলসের মধ্যে বেধে ফেললেন। এখানে তাড়াহুড়ো করার উপায় নেই, পর্যাপ্ত বল হাতে আছে, স্ট্রাইক রোটেট করে ম্যাচটাকে ক্লোজ করাটাই লক্ষ্য। ইয়াসির রাব্বীকে সঙ্গে নিয়ে সেই কাজটায় করলেন তিনি। ২৮ রানের মধ্যে কেবল একটা ছয় হাঁকিয়েছেন। বাকিটা কোনো ঝুঁকি না নিয়ে সিঙ্গেলস-ডাবলসের সাথে খেলেছেন। মাঠে থেকেই দলের জয় নিশ্চিত করেছেন।

স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনা করতেই পারেন, তবে মুশফিকের সক্ষমতা নিয়ে কোনো দ্বিধা রাখার সুযোগ নেই। প্রথম ম্যাচে ১৯১ রান চেজ করতে নেমে ১৬৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছিলেন। সময়ের দাবি মেনে ব্যাটিং করেছেন। দ্বিতীয় ম্যাচেও ২৪ রান এসেছিল তাঁর ব্যাটে। যদিও দলকে হারতে হয়েছে। এবার তো ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন।

রাজশাহীর মিডল অর্ডারটা যে দাঁড়িয়ে আছে, এই বুড়ো মুশফিকের কাঁধেই। বয়স ৩৮ পার হয়েছে ঠিকই, তবে অভিজ্ঞতাও যে বেড়েছে। ম্যাচের সিনারিও বুঝে নিজের কাজটা করতে গেলে যে ওটাই সবচেয়ে বড় সম্পদ। রাজশাহী তাই তো সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটাই নিজেদের ঘরে তুলেছে, যার প্রতিদানটা পাচ্ছে সুদে আসলে।

লেখক পরিচিতি

প্রত্যয় হক কাব্য

স্বপ্ন লেখার কি-বোর্ড

Share via
Copy link