রাজার রাজকীয় বোলিং ফিগার

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব বনাম শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব – দু’দলের লড়াইয়ের দিনে লড়াইটা ছিল সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের মাঝেও। তবে দুই মহারথীকে ছাপিয়ে ম্যাচের নায়ক রেজাউর রহমান রাজা। অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছেন তিনি, সেই সাথে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন।

ঘরোয়া ক্রিকেট অনুসরণ করেন এমন যেকোনো ক্রিকেটভক্তর কাছে এই পেসারের নামটা বেশ পরিচিত। ডিপিএলের পাশাপাশি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজের প্রতিভার ছাপ রেখেছেন তিনি। তবে এবার যা করলেন সেটা অতীতের সবকিছুকেই ম্লান করে দিয়েছে। আর কোন বাংলাদেশীর কাছে যা দেখা যায়নি, তাই দেখা গিয়েছে তাঁর কাছে।

এদিন শেখ জামালের বিপক্ষে ৬.৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে আট আটটি উইকেট শিকার করেছেন এই ডানহাতি; বিনিময়ে তাঁকে খরচ করতে হয়েছে স্রেফ ২৩ রান। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের ইতিহাসে টাইগার বোলারদের মধ্যে এটিই এখন সেরা বোলিং ফিগার।

তাঁর এমন টর্নেডো বোলিংয়ের সুবাদে স্বাভাবিকভাবেই বিশাল জয় পেয়েছে তামিমের প্রাইম ব্যাংক। কেবল বড় পরাজয় নয়, প্রতিপক্ষকে মাত্র ৭১ রানে অলআউট করার মধ্য দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত লজ্জাও উপহার দিয়েছে তাঁরা। মৌসুমের শেষটা বোধহয় এর চেয়ে বেশি সুন্দর হতে পারতো না।

সবকিছুর মূলে অবশ্য রেজাউর রাজার অতিমানবীয় পারফরম্যান্স, শুরুটা করেছিলেন ফজলে মাহমুদ রাব্বিকে দিয়ে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সাকিবকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি। শেখ জামালের আরো দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান এবং ইয়াসির আলী রাব্বিও তাঁর বিরুদ্ধে কোন জবাব দিতে পারেননি।

টপ অর্ডার আর মিডল অর্ডারই যেখানে দাঁড়াতে পারেনি, লোয়ার অর্ডার সেখানে প্রতিরোধ গড়বে সেটা ভাবাও বিলাসিতা। হয়েছেও তাই; তাইবুর রহমান, রিপন মন্ডল সহ চারজনকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়েছেন উদীয়মান এই তারকা।

একটা সময় জাতীয় দলের খুব কাছে ছিলেন তিনি, তবে ইনজুরির কারণে পিছিয়ে পড়তে হয়েছিল আবার। কিন্তু এখন আবারো বিধ্বংসী হয়ে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে তাঁর, ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে শীঘ্রই হয়তো লাল-সবুজের ড্রেসিংরুমে দেখা যাবে তাঁকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link