রান দেওয়ার নাম নাই, উইকেট চাই গুণে গুণে

সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল ভারত। হয়তো সেই রাতে টেলিভিশন সেটের সামনে বসে থেকে ভারতের ১০ উইকেটের বিশাল হারের লজ্জা দেখেছিলেন। কিংবা হয়তো দেখেননি। তবে, আগুনটা ঠিকই বুকে জমিয়ে রেখেছিলে জাসপ্রিত বুমরাহ।

অ্যাডিলেড, ২০২২। দিনটা ছিল ২৭ জুন। আজ থেকে ঠিক দুই বছর আগের ঘটনা। সেদিন মাঠেই ছিলেন না জাসপ্রিত বুমরাহ। থাকবেন কি করে, তিনি যে ইনজুরির কারণে লম্বা সময়ের জন্য চলে গিয়েছিলেন মাঠের বাইরে।

সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল ভারত। হয়তো সেই রাতে টেলিভিশন সেটের সামনে বসে থেকে ভারতের ১০ উইকেটের বিশাল হারের লজ্জা দেখেছিলেন। কিংবা হয়তো দেখেননি। তবে, আগুনটা ঠিকই বুকে জমিয়ে রেখেছিলে জাসপ্রিত বুমরাহ।

বুম বুম বুমরাহ সেই আগুনটা বারবার, লাগাতার উগড়ে দিচ্ছেন চলতি বিশ্বকাপের মঞ্চে। একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচে তিনি ‍ছিলেন উইকেট শূণ্য। বাকিটা সময় তিনি ছিলেন রুদ্রমূর্তিতে। প্রতিটা ম্যাচেই ছিলেন বিধ্বংসী। সাত ম্যাচে তাঁর পাওয়া ১৩ টা উইকেট সেটাই প্রমাণ করে।

সেই তুলনায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর লড়াইটা তুলনামূলক সহজ ‍ছিল। কারণ, ব্যাটাররা বোর্ডে ১৭১ রান জমা করে ফেলে। আর গায়ানার এই নিচু উইকেটে এই রান তাড়া করে জেতা রীতিমত অসম্ভব ছিল। আর এখানে বুমরাহ’র কাজ সহজ করে দেন দুই স্পিনার অক্ষর প্যাটেল আর কুলদীপ যাদব।

দু’জন মিলে ছয় উইকেট পাওয়ার সেতুবন্ধনটা অবশ্য বুমরাহ বেশ ভাল ভাবেই করতে পেরেছেন। ১২ রান দিয়ে দু’টি উইকেট পেয়েছেন বুমরাহ। চার ওভার বোলিংয়ের কোটাও পূরণ করার সুযোগ পাননি।

বুমরাহর আরেকটা ইতিবাচক ব্যাপার হল তাঁর ইকোনমি। রান দেওয়াতে তিনি ভিষণ কৃপণ। অথচ, উইকেট নেওয়াতে কোনো ছাড় দেননি। বিশ্বকাপের সেরা উইকেটশিকারীদের তালিকায় বুমরাহ পাঁচ নম্বরে আছেন, কিন্তু ইকোনমি রেটে বুমরাহ সবার ওপরে স্থান পেয়েছেন। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন চারের আশেপাশে।

পাওয়ার প্লে-তে তিনি আরও অবিশ্বাস্য। এবারের বিশ্বকাপে তিনি পাওয়ার প্লে-তে ১২ ওভার বোলিং করেছেন। এর মধ্যে ৪৮ টা। শতকরা হিসেবে ৬৬.৬৭ ভাগ। ইকোনমি ৩.৭৫। আর এর সাথে ‘বোনাস’ হিসেবে পেয়েছেন চারটা উইকেট। মানে, নিজের ও অন্যের জন্য উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রটা বুমরাহ’র নিজ হাতেই বানানো।

এই জায়গাটাতেই ২০২২ সালের বিশ্বকাপে বড় একটা ঘাটতি ছিল ভারতের। যেটার সুযোগ সেমিফাইনালে নিতে পেরেছিল ইংল্যান্ড। এবার বুমরাহ আছেন, তাই এখনও বিপদে পড়তে হয়নি ভারতের। এই ধারাবাহিকতা ফাইনালেও থাকলে ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়া ঠেকায় কে! তাহলেই তো ১৩ বছর পর আবারও বিশ্বজয়ের আনন্দে ভাসবে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা দলটি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...