সকলের মাথায় হাত, চেলসি করছে বাজিমাৎ

একদিকে, অন্য সকল ক্লাব যেখানে সমস্যায় ভুগছে ঠিক অন্যদিকে, চেলসি তাদের বড় দলের বদৌলতে সাফল্য পেয়ে যাচ্ছে। চেলসির বর্তমান দলে মোট ৩২জন খেলোয়াড় রয়েছে। অন্য যেকোনো দলের থেকে সবথেকে বেশি সংখ্যক খেলোয়াড় রয়েছে চেলসি দলে।

কথায় আছে ‘ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে’। ফুটবল বিশ্বেও কি আসলে এমনটাই ঘটছে? এই মৌসুমে ইউইএফএ সকল ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্ট গুলোতে ফরম্যাট পরিবর্তন করার কারণে ম্যাচের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। ফলে সকল শীর্ষ দলগুলোই হিমশিম খাচ্ছে দল পরিচালনার ক্ষেত্রে। অন্যদিকে, চেলসি ফুটবল ক্লাব তাদের বিশাল দলের সুবিধা নিয়ে ভালই সাফল্য পাচ্ছে এই মৌসুমে। চেলসি কি আগেই বুঝতে পেরে তাদের দলের গভীরতা বাড়িয়েছিল? নাকি শুধু ভাগ্যের বলেই এই সুযোগটি কাজে লেগে গিয়েছে চেলসির?

বর্তমান ইউরোপিয়ান ফুটবল মৌসুমে ম্যাচ সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে যে খেলোয়াড়রা প্রচুর ইনজুরিতে পড়ছেন। শীর্ষ প্রতিটি ক্লাবই ইনজুরি সমস্যায় ভুগছেন। রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, ম্যানচেস্টার সিটি সকল দলই হিমশিম খাচ্ছে দল পরিচালনায়। কিছুদিন আগে এমন গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল যে খেলোয়াড়রা খুশি নয় এত বেশি ম্যাচ খেলার কারণে।

একদিকে, অন্য সকল ক্লাব যেখানে সমস্যায় ভুগছে ঠিক অন্যদিকে, চেলসি তাদের বড় দলের বদৌলতে সাফল্য পেয়ে যাচ্ছে। চেলসির বর্তমান দলে মোট ৩২জন খেলোয়াড় রয়েছে। অন্য যেকোনো দলের থেকে সবথেকে বেশি সংখ্যক খেলোয়াড় রয়েছে চেলসির দলে। সাধারণত এত বড় একটি দল পরিচালনা করা বেশ কষ্টসাধ্য। তবে চেলসি বেশ ভালো ভাবেই সামলে নিয়েছেন এই বিষয়টি বরং তারা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগাচ্ছে তাদের দলকে।

একটি বড় দল থাকার কারণে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতায় তারা ভিন্ন ভিন্ন দল গঠন করে খেলছেন। যেমন, চেলসি যেই মূল একাদশ প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন সেই একই দলকে তারা কনফারেন্স লিগে কিংবা লিগ কাপে খেলাচ্ছেন না। ফলে তাদের খেলোয়াড়রা তেমন একটা ইনজুরি সমস্যাতে ভুগছেন না। এছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন দল খেলানোর ফলে সকল খেলোয়াড়রাই বেশ খুশি এবং তাদের সেরাটা দিতে পারছেন মাঠে।

চেলসি বর্তমান মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ এবং কনফারেন্স লিগে বেশ ভালই পারফর্ম করে যাচ্ছে। অন্য যেকোনো শীর্ষ ক্লাবের থেকে এখন বেশ স্থিতিশীল এবং শক্ত অবস্থানে রয়েছে চেলসি। যদি অন্য ক্লাবগুলোর দিকে নজর দেই তবে দেখা যায় ম্যানচেস্টার সিটি বিগত অনেক গুলো ম্যাচেই পয়েন্ট হারিয়েছে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও অবস্থান টি নড়বড়ে। অন্যদিকে, রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার হালও একই। তারাও লিগে পয়েন্ট হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার স্থান কিছুটা ভালো থাকলেও মাদ্রিদের অবস্থান বেশ করুন।

চেলসির এই সাফল্যের রহস্য কি শুধুই ভাগ্য, নাকি পরিকল্পিত দলগঠনের ফল? বলা মুশকিল। তবে এটা স্পষ্ট যে চেলসির বিশাল স্কোয়াড এবং তাদের খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি বড় সুবিধা এনে দিয়েছে।

যদিও অন্য শীর্ষ দলগুলো ইনজুরি ও ক্লান্তির কারণে সমস্যায় পড়ছে, চেলসি তাদের খেলার পরিকল্পনা ও রোটেশন স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে সেই সমস্যাগুলোকে এড়িয়ে যেতে পেরেছে। এই মৌসুমে তাদের এই সাফল্য ভবিষ্যতে অন্যান্য ক্লাবের জন্য একটি শিক্ষার বিষয় হতে পারে। বড় দল তৈরি এবং দলের গভীরতার গুরুত্ব ইউরোপিয়ান ফুটবলে এখন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

শেষমেষ, ফুটবল সবসময়ই অপ্রত্যাশিত। ভাগ্য, পরিকল্পনা এবং মাঠের পারফরম্যান্স সবকিছুই একসঙ্গে কাজ করে। চেলসির এই উত্থান যদি পরিকল্পনার ফল হয়, তবে তা প্রশংসার দাবিদার। আর যদি ভাগ্য তাদের সঙ্গে থাকে, তবে সেটাও এই খেলারই অংশ। তবে একটি জিনিস নিশ্চিত, চেলসির বর্তমান পরিস্থিতি প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর জন্য একটি বার্তা। ফুটবলে স্থায়িত্ব এবং স্থিরতার জন্য কৌশলগত গভীরতা অপরিহার্য।

Share via
Copy link