কাশ্মীরের ক্রিকেট অ্যাম্বাসেডর

প্রথমবারের মত ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের শিরোপা জিতেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আর পুরো মৌসুম জুরে এই দলটার বোলিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পারভেজ রসুল। দল যখনই বিপদে পড়েছে তখনই বোলিংয়ে আনা হয়েছে এই স্পিনারকে। রান কমাতে হবে, রসুল আছে। উইকেট নিতে হবে রসুল আছে।

পুরো আসর জুরেই শেখ জামালের ভরসার নাম ছিলেন ভারতের এই ক্রিকেটার। আবার ব্যাট হাতে দ্রুত কিছু রান দরকার হলেও ডাক পড়তো তাঁর। তবে পারভেজ রসুল পুরো আসর মাতিয়ে গিয়েছেন মূলত তাঁর বোলিং দিয়ে। এবারের ঢাকা লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। শেখ জামালের হয়ে খেলা ১৫ ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ২৮ উইকেট।

এই নিয়ে চতুর্থবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ খেলত্রে এসেছিলেন পারভেজ রসুল। এছাড়া এই লিগ নাকি বেশ উপভোগ করেন তিনি। ঢাকা লিগের মান ও উইকেট নিয়ে অনেক সমালোচনা থাকলে এসব একেবারেই মানতে নারাজ ছিলেন তিনি। উইকেট ও মানের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন এখানে খেলতে এসে। এমনকি ইংল্যান্ডে খেলতে না গিয়েও এখানে আসেন ক্রিকেট খেলতে। ফলে ঢাকা লিগটাকে তাঁর আপনই মনে হয়।

ভারতের জম্মু কাশ্মীর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উঠে এসেছিলেন এই অফ স্পিনার। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা খুব বেশি লম্বা হয়নি তাঁর। ২০১৪ সালে একটি ওয়ানডে ম্যাচ ও ২০১৭ সালে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন ভারতের হয়ে। ওয়ানডে অভিষেক ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে পেয়েছিলেন ২ উইকেট। এছাড়া টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও পেয়েছিলেন একটি উইকেট।

তবে এরপর আর কখনো ভারত দলে সুযোগ পাননি। যদিও ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটেরও নিয়মিত পারফর্মার তিনি। কেন একটি ম্যাচ খেলেই পারভেজ রসুলকে বাদ দিয়ে দেয়া হলো সেই প্রশ্ন অবশ্য তোলাই যায়। এই নিয়ে মনের মধ্যে অবশ্য খানিকটা আক্ষেপও আছে এই ক্রিকেটারের।

পারভেজ রসুল প্রথম আলোচনায় এসেছিলেন মূলত ২০১২-১৩ মৌসুমের রঞ্জি ট্রফি থেকে। সেবার রঞ্জিতে রীতিমত অবিশ্বাস্য  ক্রিকেট খেলেছিলেন এই ক্রিকেটার। জম্মু-কাশ্মীরের হয়ে ব্যাট হাতে হয়েছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক আবার বল হাতেও ছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। সেবছর ব্যাট হাতে ৫৪ গড়ে করেছিলেন ৫৯৪ রান আবার বল হাতে ছিল ৩৩ উইকেট।

রঞ্জিতে এমন একটা মৌসুম কাটানোর পুর খুব স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় দলের পরিকল্পনায় চলে এসেছিলেন। এরপর ভারত ‘এ’ দলের হয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৪৫ রানে তুলে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট।

ভারত ‘এ’ দলের হয়ে এমন বোলিং পারফর্মেন্সের পরেই কপাল খুলেছিল পারভেজ রসুলের। জম্মু-কাশ্মীরের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছিলেন। ২০১৪ সালে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল। তবে সেই এক ম্যাচেই থেমে আছে তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ার।

এরপর আইপিএলে পুনে ওয়ারিয়োর্সের দলেও ডাক পান তিনি। তিনিই জম্মু-কাশ্মীর থেকে উঠে আসা প্রথম ক্রিকেটার যিনি আইপিএল কন্ট্রাক্ট সাইন করেছেন। ফলে জম্মু-কাশ্মীরের অনেক শুরুর রাস্তা খুলে দিয়েছিলেন এই ক্রিকেটার। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারভেজ রসুলের ক্যারিয়ার শুরুর আগেই যেন শেষ হয়ে গেল।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link