ক্রিকেট বিশ্বে নতুন এক ধারার নাম ‘বাজবল’। ইংল্যান্ডের বদৌলতে টেস্টে ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের নিদর্শন এটি। যদিও ইংল্যান্ডের এই আগ্রাসী ঘরানায় চলমান অ্যাশেজে তেমন সফলতা ধরা দেয়নি ইংলিশদের। অস্ট্রেলিয়ার কাছে অ্যাশেজের প্রথম দুই টেস্টেই হেরেছে তাঁরা। অবশ্য টানা দুই হারের পর হেডিংলি টেস্ট দিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে ইংলিশরা।
তারপরও ইংল্যান্ডের এই বাজবল ঘরানার ক্রিকেট যে তেমন কার্যকরী কৌশল নয়, সেটিই মনে করেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার। ভারতের ‘মিড ডে’ পত্রিকার কলামে কিংবদন্তি এ ক্রিকেটার লিখেছেন, ‘ইংল্যান্ডের বাজবল ক্রিকেট ভুলে যাওয়া উচিত। এটা শুধু তাদের বিপক্ষেই কার্যকর হবে, যাদের বোলিং আক্রমণ দুর্বল।’
তিনি আরও যুক্ত করে এ কলামে জানিয়েছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট তাঁর নিজস্ব সত্ত্বাতেই এগিয়ে যাবে। এটা কোনোভাই বদলে ফেলা যায় না। ইংল্যান্ড যে অ্যাপ্রোচে খেলছে, তা দিয়ে আর যাই হোক অ্যাশেজ জেতা যাবে না। কারণ অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ বেশ শক্তিশালী।’
ইংল্যান্ডের এই বাজবল ঘরানার ক্রিকেটে শুধু গাভাস্কার নয়, সমালোচনা করেছেন জিওফ বয়কটও। লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডের ৪৩ রানে হারার পর তিনি বলেছিলেন, ‘যদি সবাইকে আনন্দিতই করতে চাও, তাহলে ক্রিকেট কেন, সার্কাস পার্টির আয়োজন করো। একটা দলকে সব সময় জেতার জন্যই খেলা উচিত, কাউকে বিনোদিত করার জন্য নয়।’
অবশ্য সুনীল গাভাস্কার, জিওফ বয়কটরা সমালোচনা করলেও এই বাজবল ক্রিকেট দিয়েই শেষ দুই বছরে সিংহভাগ সাফল্য পেয়েছে ইংল্যান্ড। গত বছরে আক্রমণাত্বক ক্রিকেট খেলেই নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল ইংলিশরা। এ ছাড়া ভারতের সাথে পুন:নির্ধারিত পঞ্চম টেস্টেও জয় পেয়েছিল বেন স্টোকসের দল।
মূলত বাজবল হচ্ছে কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের অধীনে ইংল্যান্ডের টেস্ট খেলার একটা দৃষ্টিভঙ্গি, যা টেস্ট ক্রিকেট সত্ত্বেও আক্রমণাত্বক অ্যাপ্রোচ দিয়ে খেলাটাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলবে।
এ নিয়ে সাবেক কিউই এ ক্রিকেটার বলেছিলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট যারা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য সময়টা একটু চ্যালেঞ্জিং। কারণ সময়টা এখন বদলে গেছে। মানুষের এখন আর পাঁচ দিন বসে ক্রিকেট দেখার সময় নেই। তাই আমরা আলাদা ঘরানার ক্রিকেটের খেলতে চাই। আমার সাথে একই মত স্টোকসের।’
তবে এমন আক্রমণাত্বক ক্রিকেটের ধরনের সাথে ‘বাজবল’ নাম যুক্ত করায় বড্ড আপত্তি ম্যাককালামের। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি জানিনা, এই বাজবল নামটা কিভাবে আমাদের সাথে জড়িয়ে গেলে। আমরা আক্রমণাত্বক ক্রিকেট খেলতে চাই। আমাদের অ্যাপ্রোচ, প্রতিটা বলে কিছু না কিছু ফল বের করা। কিন্তু এই নামের সাথে আমাদের কোনো যোগ আছে বলে মনে করি না।’
মূলত এই বাজবল নামটার উৎপত্তি এক পডকাস্টে। ক্রিকেটবিষয়ক গণমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফোর যুক্তরাজ্য সংস্করণের সম্পাদক অ্যান্ড্রু মিলার এক পডকাস্টে নামটা দিয়েছিলেন। কারণ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ডাকনাম ‘বাজ’!