দিল্লী দূর্গ গুঁড়িয়ে প্রথম কোয়ালিফায়ারের পথে চেন্নাই

দিল্লী ক্যাপিটালসের বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। তবে পয়েন্ট টেবিলে দুই নম্বরে থেকেও ঠিক স্বস্তিতে ছিল না ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। কারণ সরাসরি প্লে-অফ নিশ্চিত করতে যে এ ম্যাচটা জিততেই হতো তাদের।

রাউন্ড রবিন লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে সেই লক্ষ্য অবশ্য পূরণ করেছে চেন্নাই। দিল্লীকে ৭৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে গুজরাট টাইটান্সের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করলো তাঁরা।

দিল্লীর মাঠে ম্যাচ। তবে টসভাগ্য, ম্যাচে আধিপত্য সবটাই যায় চেন্নাইয়ের পক্ষে। শীর্ষ দুইয়ে থাকতে হলে রানরেট বাড়িয়ে ম্যাচ জিততে হবে। তাই টসে জিতে অনুমিতভাবেই শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি।

ধোনির সিদ্ধান্তে আস্থার প্রতিদান দিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই চেন্নাইকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রুতুরাজ গায়কোয়াড় আর ডেভন কনওয়ে। পাওয়ার প্লে-র ফায়দা তুলে কোনো উইকেট না হারিয়েই আসে ৫২ রান। এরপর ১০ ওভার শেষে দলীয় সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ৮৭। এর মধ্যে গায়কোয়াড় তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক।

ফিফটি পূরণের পর আরো আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন এ ব্যাটার। আর তাতেই কনওয়ের সাথে তাঁর শতরানের জুটি পূরণ হয়। একই সাথে চেন্নাইয়ের ইনিংসেও রানের গতি বাড়তে থাকে। ১০ ওভারে ৮৭ থাকা চেন্নাই পরের ৪ ওভারে এ দুই ব্যাটারের ব্যাটিং তাণ্ডবে স্কোরকার্ডে যোগ করে ৫৩ রান। 

অবশ্য ১৫ তম ওভারে এসে চেন্নাইয়ের ইনিংসে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। চেতন সাকারিয়ার বলে আউট হয়ে ফিরে যান রুতুরাজ গায়কোয়াড়। ৩ চার আর ৭ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৯ রানে ইনিংস শেষ হয় তাঁর। 

গায়কোয়াড় ফিরে গেলেও তিনে নামা শিবাম দুবেকে নিয়ে চেন্নাইকে বড় সংগ্রহের পথে রাখেন ডেভন কনওয়ে। মাত্র ২২ বলেই ৫৪ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। মাত্র ৯ বলে ৩ ছক্কায় ২২ রান করে ফিরে যান দুবে।

এর পরের ওভারে সেঞ্চুরির পথে হাঁটা কিউই ব্যাটার কনওয়েও ফিরে যান। সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে আউট হন এনরিখ নর্কিয়ার বলে। নিউজিল্যান্ডের এ ব্যাটার তাঁর ৮৭ রানের ইনিংস সাজান ১১ চার আর ৩ ছক্কায়।

কনওয়ের পর চেন্নাইকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান ধোনি আর রবীন্দ্র জাদেজা। এ দুই ব্যাটারের নিরবিচ্ছিন্ন ২৮ রানের জুটিতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ২২৩ রানের সংগ্রহ পায় চেন্নাই। জাদেজা ৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ২০ রান আর ধোনি ৫ রানের অপরাজিত থাকেন। 

২২৪ রানের এমন পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দিল্লী ক্যাপিটালস। তুষার দেশপাণ্ডে আর দীপক চাহারের বোলিং তোপে মাত্র ২৬ রানেই তাঁরা হারিয়ে ফেলে তিন উইকেট। পৃথ্বী শ থেকে শুরু করে ফিলিপ সল্ট, রাইলি রুশো— কেউই এ দিন নিজের ইনিংসকে দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যেতে পারেননি।

২৬ রানে ৩ উইকেট হারানো দিল্লীকে অবশ্য প্রাথমিক বিপর্যয় থেকে কিছুটা টেনে তুলেছিলেন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। ইয়াশ ধুলকে নিয়ে ৪ নম্বর উইকেট জুটিতে যুক্ত করেন ৪৯ রান। ধুল ফিরে যাওয়ার অর অক্ষর প্যাটেল কিছুটা সঙ্গ দিয়েছিলেন ওয়ার্নারকে। তবে তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

২২৪ রানের লক্ষ্যে ওয়ার্নারের নি:সঙ্গ লড়াই তাই এক প্রকার বিফলেই যায়। ৩২ বলে অর্ধশতক পূরণ করা ওয়ার্নার পরবর্তীতে তাঁর ইনিংসকে নিয়ে গিয়েছিলেন ৮৬ তে।

তবে, ৭ চার আর ৫ ছক্কায় সাজানো সে ইনিংসটি শেষ পর্যন্ত দিল্লীর ম্যাচ হারের ব্যবধানই কমিয়েছে শুধু। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে তাদের ইনিংস থামে লক্ষ্য থেকে ৭৮ রান দূরে, ১৪৬ রানে।

রানের এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থেকে প্লে-অফে প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলার পথে এক পা দিয়ে রাখলো চেন্নাই সুপার কিংস। অবশ্য গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচ খেলার পথে তাদের এখন একমাত্র বাঁধা লখনৌ সুপারজায়ান্টস।

রাতের ম্যাচে কলকাতার বিপক্ষে লখনৌ হেরে গেলে কিংবা বড় ব্যবধানে ম্যাচ না জিতলে ধোনির চেন্নাই-ই পৌঁছে যাবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে। অন্যদিকে, এবারের আসরে টানা ৫ হারে বাজে শুরুর পর শেষটাও পরাজয় দিয়ে শেষ করলো দিল্লী ক্যাপিটালস।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link