৩৮ বছর বয়সী একজন পেসার চেন্নাই টেস্টের পঞ্চম দিনে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে চুরমার করে দিলেন। ৪১৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ভারত তখন বিরাট কোহলি, শুভমান গিলদের ব্যাটে চড়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছে।
হঠাৎ করে ২৭তম ওভারে এক ঝড় এলো চেন্নাইয়ে। অ্যান্ডারসন ঝড়। যেই ঝড়ে দুমড়ে মুচড়ে গেল ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন আপ। রিভার্স সুইং করা বলটা বোধহয় শুভমান গিলের স্ট্যাম্পের সাথে উঠে আসা ধুলোর সাথে মিশিয়ে দিয়েছিল ভারতীয়দের জয়ের স্বপ্ন।
অ্যান্ডারসনের করা ২৭ তম ওভারটা নি:সন্দেহে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা একটি ওভার। শুধু ওই ওভারটিই নয়, সেদিন তাঁর করা ১১ ওভারের স্পেলটিই জয় এনে দিয়েছিল সফরকারী ইংল্যান্ডকে। জেমস অ্যান্ডারসনের সেই বোলিং ঘরে বসে দেখেছেন ডেল স্টেইন। দেখেছেন কি করে এই বয়সে এসেও এমন একটি স্পেল করা যায়, এভাবে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলা যায়।
তা দেখে হয়তো খানিকটা হিংসাও হয়েছে। তাঁর সময় বয়সী একজন এভাবে উপমহাদেশের উইকেটে দলকে জয় এনে দিচ্ছেন আর তিনি তা টিভিতে দেখছেন। স্টেইন হয়তো তাঁর স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলা দিন গুলো ফিরে পেতে চাইছিলেন। তাইতো খেলা শেষে স্টেইন তাঁর টুইটার একাউন্টে লিখেন, ‘পার্থক্য হচ্ছে অ্যান্ডারসন এখনো দিব্যি বল করে যাচ্ছে আর আমি সোফায় বসে তা দেখছি।’
স্টেইনের হতাশার কারণটা সহজেই অনুমান করা যায়। নিজের সময়ের অন্যতম সেরা পেসার স্টেইনের ক্যারিয়ারে বাতি নিভে গেছে হঠাৎ করেই। যখন সোনালী সময়ে ছিলেন, তখন বিশ্বেরই অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার হিসেবে বিবেচিত হতেন। কার্য্যকর ছিলেন যেকোনো কন্ডিশনেই। তবে, ইনজুরি তাঁর ক্যারিয়ারের আয়ু কমিয়ে দিয়েছে অনেকটা। অথচ, অ্যান্ডারসনের চেয়ে তিনি বয়সে বছরখানেকের ছোট।
স্টেইন সর্বশেষ টেস্ট ও ওয়ানডে খেলেছেন দুই বছর আগে। আর সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার বয়সও এক বছর হয়ে গেছে। এখন তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে মনোযোগী। যদিও, ২০২১ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
শুধু স্টেইন কেনো ,তাঁর বয়সী অনেক ক্রিকেটারেরই অনুপ্রেরণা হতে পারেন অ্যান্ডারসন। তাছাড়া তিনি যে উপমহাদেশের উইকেটেও সমানভাবেও কার্যকরী তাও নতুন করে জানান দিলেন এই পেসার। যদিও, একই ভেন্যুতে শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে নেই অ্যান্ডারসন।
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুট কারণটা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমরা অ্যান্ডারসনকে বিশ্রাম দিচ্ছি। আমরা ওর চাপ কমাতে চাই। সেজন্যই দলের বাইরে রাখা। সব ঠিকঠাক থাকলে ও পুরো ফিট হয়ে ফিরে শেষ দু’টি টেস্ট খেলবে।