ম্যাচের শেষ মুহূর্তে দানি কারভাহাল যখন মাঠ ছাড়েন, পুরো গ্যালারি তখন দাঁড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর সম্মানে; হাততালি দিয়ে জানিয়েছিল অভিবাদন। তবে স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা কারভাহালকে সেটা দেখেছেন কি না কে জানে, পায়ের ব্যাথা এতটাই বেশি ছিল যে তিনি তখন চোখের পানি মুছতেই ব্যস্ত ছিলেন।
এর আগে ভিনিসিয়াস জুনিয়রও চোটের কারণে বাধ্য হয়ে মাঠ ছেড়েছেন। কাঁধ চেপে যখন সাইডলাইন দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি তখন তাঁর চোখেমুখেও ছিল তীব্র বেদনার ছাপ। দু’জনেই যে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
তাই তো রিয়াল মাদ্রিদ ২-০ গোলের জয় পেলেও স্বস্তি পায়নি এক ফোঁটা, রক্ষণভাগ আর আক্রমণভাগের দুই গুরুত্বপূর্ণ সেনানীর দুর্ভাগ্য ম্লান করে দিয়েছে সবকিছুকে। যদিও মাঠ ছাড়ার আগে উভয়েই কাজের কাজটা করে দিয়ে গিয়েছেন; কারভাহাল আদায় করে নিয়েছেন ক্লিনশিট, তিনটা ট্যাকেল জিতেছেন, ডুয়েল জিতেছেন পাঁচটা।
অন্যদিকে, ভিনিসিয়াস করেছেন চোখ জুড়ানো এক গোল। প্রায় পঁচিশ গজ দূর থেকে বিদ্যুৎ গতির শটে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি – ঠিক একই জায়গা থেকে একই ভঙ্গিমায় প্রথমার্ধে গোল পেয়েছিলেন ফেদেরিকো ভালভার্দে-ও। তবে তাঁর গোলে বোধহয় এতটা বিস্ময় সৃষ্টি হয়নি, কারণ তিনি যে এভাবে গোল করবেন সেটাই স্বাভাবিক সমর্থকদের কাছে।
যদিও উরুগুইয়ান তারকার জন্য বোধহয় গোলটা বড্ড বিশেষ। নিজের ‘আইডল’ টনি ক্রুস উপস্থিত ছিলেন গ্যালারিতে,আইডলের রেখে যাওয়া নাম্বার এইট জার্সি গায়ে দিয়ে তাঁর সামনেই এমন দুর্ধর্ষ গোল করাটা যে কারো জন্যই স্বপ্নের মত।
অবশ্য গোল দিয়ে ভালভার্দেকে মাপলে বড় ভুল করবেন; ভালভার্দে আসলে মাপকাঠির উর্ধ্বে। রক্ষণে সাহায্য প্রয়োজন হলে তিনি ছুটে যান, মাঝ মাঠ দখল করতে হলে তিনি বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে যান, আবার গোলের দরকার হলে প্রতিপক্ষের প্রতিরক্ষা ছেদ করে গোলা ছোঁড়েন – পৃথিবীর তিনভাগ জুড়ে পানি আর এক ভাগ ফেদেরিকো, কথাটা তাই তো মিথ্যে নয়।