২৭-০! এটাই ছিল ইউএস ওপেন ফাইনালের আগে ২০২১ সালের চারটি গ্রান্ড স্ল্যাম মিলিয়ে নোভাক জোকোভিচের জয়-হারের পরিসংখ্যান। বিশ্বের এক নম্বর তো তিনি বটেই, সেই ক্ষেত্রেও বিশ্বরেকর্ড করে বসে আছেন জোকোভিচ, সবচেয়ে বেশিদিন বিশ্ব র্যাংকিংয়ে এক নম্বরে থাকার। অন্যদিকে বিশ্বের দুই নম্বর দানিল মেদভেদেভ, ২৫ বছর বয়সী রাশিয়ান। দ্বিতীয় বাছাই হলেও দুজনের মধ্যে কত তফাৎ!
একজন অর্জন করেছেন টেনিসে যা যা সম্ভব প্রায় তার সবকিছু। বাকি ছিল শুধু অলিম্পিক মেডেল আর ক্যালেন্ডার স্ল্যাম। অন্যদিকে মেদভেদেভ টেনিস সার্কিটে গত তিন বছর ধরে পরিচিত নাম, বিশ্বের ২ নম্বর এবং একাধিক গ্রান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠলেও, কাপ এবং ঠোঁটের মধ্যে ফাঁক রয়েই গেছে। টোকিও তে সেমিফাইনালে উঠেও মেডেল না পাওয়াটা নোভাক জোকোভিচের কাছে এবং তাঁর ভক্তদের কাছেও ছিল একটা অঘটন।
অনেকে এটাও বলেছিলেন যে অলিম্পিকে ৩ সেটের ম্যাচ হয়, তাই ফিরে আসার সুযোগ থাকেনা, কিন্তু গ্রান্ড স্লামে ৫ সেটের ম্যাচে নোভাক কে হারানোর ক্ষমতা অন্তত বর্তমানে কারুর নেই। অস্বীকার করবোনা, আমি নিজেও এই দলেই পড়ি। বহুদিন ধরে টেনিস দেখার সুবাদে জানি, গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে পুরুষদের টেনিসে আধিপত্য দেখিয়ে চলেছেন তিন মহারথী, প্রথমে রজার ফেডারের এবং রাফায়েল নাদাল, এবং তাঁদের সামান্য পরে উঠে আসা নোভাক জোকোভিচ।
বর্তমানে তিনজনেরই গ্রান্ড স্ল্যাম সংখ্যা ২০, যা থেকে বোঝা যায়, গত ৬৫ টি অনুষ্ঠিত গ্রান্ড স্ল্যামের মধ্যে ৬০ টি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন এই বিগ থ্রি!! অবিশ্বাস্য বললেও কম হয়ে যায়। বিশেষ করে নোভাকের পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে একের পর এক বিগ ফাইনাল বের করার ক্ষমতা অনেক টেনিস বিশেষজ্ঞের চোখেই তাঁকে গোট, অর্থাৎ গ্রেটেস্ট অফ অল টাইম – এর স্থান দিয়েছে।
কয়েক মাস আগেই ফ্রেঞ্চ ওপেন সেমিফাইনালে নাদাল কে প্রথম সেট এ ০-৫ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় হারিয়ে দেন ৪ সেটে, এবং ফাইনালে উজ্জীবিত চিচিপাসের কাছে ০-২ সেটে পিছিয়ে পড়েও অবিশ্বাস্যভাবে ফিরে এসে জেতেন ৫ সেটে। অনেকেরই হয়তো ২০১৯ উইম্বলডন ফাইনাল মনে আছে যেখানে রজার ফেদেরার সাম্প্রতিককালের সেরা পারফরম্যান্স করেও নোভাক কে হারাতে পারেন নি।
বেশি সার্ভিস ব্রেক করে, বেশি পয়েন্ট জিতেও তিনটি টাই ব্রেক হেরে এবং মোক্ষম সময়ে ২ টো ম্যাচ পয়েন্ট নষ্ট করে হেরে যান রজার। নোভাক পরে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যে তিনি নিজেও বিশ্বাস করতে পারেন না কিকরে সেই ফাইনাল জিতেছিলেন। তাঁর কথায় – ‘ফেদেরার ছিল সেই ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়, ও বেশি পয়েন্ট জিতেছে, বেশি বার আমার সার্ভ ব্রেক করেছে, তাও আমি কোনোভাবে জিততে পেরেছি’।
এই হচ্ছেন নোভাক জোকোভিচ, যিনি হারতে ভুলে গেছেন বলেই টেনিস বিশ্ব মনে করতে শুরু করেছিল। ১৯৬৯ সালের পর পুরুষদের টেনিসে প্রথমবার ক্যালেন্ডার গ্রান্ড স্ল্যাম করার লক্ষে অবিচল জোকোভিচ পৌঁছে গেছিলেন অভীষ্ট গন্তব্যের খুব, খুব কাছে। অন্যদিকে দানিল মেদভেদেভ ২০১৯ সালে ইউএস ওপেনের ফাইনালে উঠে নাদালকে ৫ সেটে টেনে নিয়ে গিয়েও ফ্লাশিং মেডো তে শেষ হাসি হাসতে পারেননি।
এই বছর টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই বাকি টেনিস খেলোয়াড়দের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি বলেছিলেন – ‘আমরা কিন্তু নোভাক কে ক্যালেন্ডার স্ল্যাম করতে দেখতে আসিনি, তাকে আটকাতে এসেছি।’ কে জানতো, দু সপ্তাহ পরে নিজের কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে দেবেন তিনি?
গতকাল গভীর রাত্রে ম্যাচ দেখতে দেখতে আমার ইউরোপ নিবাসী এক বন্ধুর সাথে মেসেন্জারে কথা হচ্ছিলো। শুরুর দিকেই যখন মেদভেদেভ দুর্দান্ত সার্ভিস এবং অসাধারণ সব গ্রাউন্ড স্ট্রোক মেরে নোভাক কে ব্রেক করে এগিয়ে গেলেন, আমরা আলোচনা করছিলাম যে ইতিহাস গড়ার পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশার চাপ নোভাক জোকোভিচের মতো ইস্পাতকঠিন স্নায়ুর অধিকারীকেও কতটা সমস্যায় ফেলতে পারে?
ম্যাচের আগে আমরা আলোচনা করছিলাম যে নোভাক তার সেরা ফর্মে নেই, যে কারণে সেমিফাইনাল ৫ সেটে লড়াই করে জিততে হয়েছে, কিন্তু তাও কেউই বিশ্বাস করতে পারিনি ফাইনালের মতো চাপের ম্যাচ, নোভাক বার করতে পারবেন না। ইতিহাস, রেকর্ড সব জোকোভিচের পক্ষে ছিল। কিন্তু খেলা শুরু হতে আমরা দেখলাম অন্য চিত্র, একদিকে প্রথম সেটে ১৫ টা প্রথম সার্ভের মধ্যে সবকটি পয়েন্ট জিতলেন দানিল, তার ভয়ডরহীন টেনিস বুঝিয়ে দিচ্ছিলো যে তিনি আজকে তাঁর ভাণ্ডারের সব অস্ত্র কোর্টে উপুড় করে দেবেন।
সব শট তিনি আগ্রাসীভাবে পুরো শক্তি দিয়ে মারছিলেন। অন্যদিকে নোভাকের খেলায় স্পষ্ট হচ্ছিলো প্রত্যাশার চাপ, নুয়ে পড়ছিলেন তিনি। তাঁর সার্ভিস মেদভেদেভের থেকে অনেক দুর্বল দেখাচ্ছিল, এবং যে নোভাক কঠিন ৱ্যালি করে করে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে দিয়ে হারাতে পছন্দ করেন, তিনি মেদভেদেভের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে স্বভাব বিরুদ্ধভাবে সার্ভ ভলি করতে বাধ্য হচ্ছিলেন।
মেদভেদেভ একেকটা সার্ভিস গেম প্রায় ১ মিনিটের মধ্যে শেষ করে দিচ্ছিলেন এবং নোভাকের অধিকাংশ সার্ভিস গেম ডিউস বা ৪০-৩০ অবধি গড়াচ্ছিল। মেদভেদেভ এর গেম প্ল্যান ছিল পরিষ্কার, লম্বা ৱ্যালি তে না গিয়ে একের পর এক উইনার মেরে নোভাককে স্বাভাবিক খেলা খেলতে না দেওয়া; এবং প্রথম দুই সেটে তিনি সেই কাজে ১০০ শতাংশ সফল! নোভাক জোকোভিচ মেদভেদেভের শুরু থেকেই আগ্রাসী টেনিসের কোনো জবাব খুঁজে পান নি, অন্যদিকে ইতিহাস গড়ার চাপ তাঁকে তাঁর স্বাভাবিক খেলা খেলতে দেয়নি।
অনেক আনফোর্সড এরর তিনি করতে থাকেন যা একেবারেই তাঁকে মানায়না। বিশেষ করে লম্বা ৱ্যালি যখন হয়েছে, তখন অনেক সময় ১৫-২০ শটের পর বাইরে বা নেটে মেরে পয়েন্ট খুইয়েছেন নোভাক। সব মিলিয়ে, একেবারেই নিজের সেরা খেলা তিনি খেলতে পারেন নি।
এতদসত্ত্বেও দু সেটে পিছিয়ে পড়ার পড়েও আমরা ভাবছিলাম নোভাক এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, কেননা ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালে তিনি ঠিক এটাই করে দেখিয়েছিলেন চিচিপাসের বিরুদ্ধে। কিন্তু এদিন কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছিলো না জোকারের, এবং যদিও মেদভেদেভের খেলার মান তৃতীয় সেটে একটু পড়ে যায়, যেটা দু সেট বিশ্বসেরা প্রতিপক্ষের সাথে ওরকম উচ্চমানের টেনিস খেলার পরে হওয়াটা খুব স্বাভাবিক, নোভাক একইভাবে আরো খারাপ খেলতে থাকেন এবং অল্পসময়েই ০-৪ পিছিয়ে পড়েন।
কিছুক্ষণ পরেই ৫-২ এগিয়ে থাকা অবস্থায় চ্যাম্পিয়ন হবার লক্ষ্যে সার্ভ শুরু করেন মেদভেদেভ, কিন্তু জীবনের প্রথম গ্রান্ড স্ল্যাম জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে স্নায়ুর চাপ তিনিও অনুভব করতে থাকেন, এবং পরপর বেশ কটি ডাবল ফল্ট এবং আনফোর্সড এরর করে ম্যাচে প্রথমবার সার্ভিস ব্রেক হয়ে গেম হেরে যান তিনি। দর্শকদের সমর্থন ও চিৎকার চূড়ান্ত আকার ধারণ করে, কেননা সবাই জোকোভিচের ক্যালেন্ডার স্ল্যাম দেখতে এসেছিলেন, এবং টেনিস সার্কিটে কামব্যাক ম্যান নামে পরিচিত নোভাক এবারেও অকল্পনীয় কিছু করে দেখবেন এই বিশ্বাস তখনও দর্শকদের মনে কিছুটা হলেও ছিল।
দর্শকদের বারবার অনুরোধ করেও চুপ করানো যায়নি, এবং সেটা মেদভেদেভের সার্ভিস ঠিকমতো করতে না পারার একটা মূল কারণ। এরপর জোকোভিচ সার্ভিস হোল্ড করে ৪-৫ করেন, এবং আবার মেদভেদেভ চ্যাম্পিয়ন হবার লক্ষে সার্ভ করতে শুরু করেন। এবারেও বেশ কটি এরর, ডাবল ফল্ট ও করেন, কিন্তু ৪০-৩০ অবস্থায় অবশেষে একটা প্রথম সার্ভিস তিনি সঠিক জায়গায় ফেলতে সক্ষম হন, যা ক্লান্ত নোভাক নেট এর ওপারে পাঠাতে পারেন নি! কাত হয়ে কোর্টের মধ্যে পড়ে গিয়ে অদ্ভুত সেলিব্রেশন করেন মেদভেদেভ, যা তিনি পরে মজা করে বলেন যে একমাত্র লিজেন্ড রাই (ফিফা ভিডিও গেম খেলা লিজেন্ড) এই সেলিব্রেশন বুঝতে পারবে।
পুরুষ ও নারী টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে কেউ ক্যালেন্ডার স্ল্যাম করতে পারেন নি। নোভাক ও পারলেন না। পরের বছর আরো শক্ত হবে প্রতিযোগিতা, চিচিপাস, জভেরেভ ঘাড়ের উপরে নিঃশ্বাস ফেলছেন, চোট সারিয়ে ফিরবেন ৯০ এর দশকে জন্মানো প্রথম গ্রান্ড স্ল্যাম উইনার ডমিনিক থিম (কাল জেতার পর মেদভেদেভ হলেন দ্বিতীয় পুরুষ খেলোয়াড় যিনি ৯০ এর দশকে জন্মেছেন ও গ্রান্ড স্ল্যাম জিতলেন)। নাদাল এবং ফেদেরার বয়স এবং চোট আঘাতের কারণে আর কতদিন খেলবেন বা খেললেও স্ল্যাম জেতার মতো জায়গায় থাকবেন সেটা বলা যাচ্ছে না।
এই অবস্থায় জোকোভিচও প্রায় ৩৫ বছর বয়সে তাঁর সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন বলেই মনে করা যায়, কেননা অতি বড়ো জভোভিচ সমালোচক ও কোনোদিন ভাবতে পারেন নি যে গ্রান্ড স্ল্যাম ফাইনাল জোকোভিচ স্ট্রেট সেটে হারবেন, তাও তাঁর প্রিয় হার্ডকোর্টে!
এর আগে সাম্প্রতিককালে নাদাল তাঁকে গত বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালে স্ট্রেট সেটে হারান, কিন্তু সেটা ছিল নাদালের দুর্গ ফিলিপ শতিয়ারে আর নোভাক এবার জিতে বদলাও নিয়েছিলেন, কিন্তু মেদভেদেভের মতো টেনিস সার্কিটের অপেক্ষাকৃত নতুন একজনের কাছে স্ট্রেট সেটে (৬-৪, ৬-৪, ৬-৪) হেরে যাওয়ায় এটাই বোধ হয় প্রমাণিত হলো, যে রূপকথা সহজে বাস্তব হয়না, সোনার হরিণ বলে কিছু নেই, বর্তমানের কঠোর পেশাদারিত্ব ও পাওয়ার টেনিস এর যুগে যেখানে টেনিস খেলোয়াড়দের উচ্চতা এবং শক্তি ধীরে ধীরে বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে, সেখানে টেনিসের তিন ধ্রুপদী শিল্পী ফেদেরার, নাদাল ও জোকোভিচ(হ্যাঁ, টেনিস সার্কিটে রোবট বলে পরিচত হলেও জোকোভিচ তাঁর নিজস্ব স্টাইলে একজন শিল্পী এবং সর্বকালের অন্যতম সেরা অবশ্যই) ধীরে ধীরে তাঁদের হাত থেকে ব্যাটন পরবর্তী প্রজন্মের হাতে তুলে দিয়ে যাবেন, আর হয়তো আমরা কোনোদিন একসাথে এরকম তিন সর্বকালের সেরা কিংবদন্তিদের একসাথে দশকের পর দশক জুড়ে টেনিসকে ডমিনেট করা দেখতে পাবো না।
ফাইনাল হেরে চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি জোকোভিচ। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন যে ইতিহাস গড়ার সামনে দাঁড়িয়ে এই হার তাঁকে বহুদিন যন্ত্রনা দেবে, যদিও দর্শকদের ভালোবাসা ও সমর্থনে তিনি আপ্লুত, যা তাঁর হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। বহুদিন ধরেই দর্শকদের সমর্থন নিয়ে অভিযোগ করছিলেন নোভাক, যে ফেদেরার বা নাদাল যে সমর্থন ও ভালোবাসা পান, তা তিনি কোনোদিন পান না, অথচ টেনিসে অর্জন এবং অবদান তাঁর কিছু কম নয়, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি।
গতকাল নিউ ইয়র্ক নোভাক জোকোভিচ কে ভরিয়ে দিলো সমর্থন ও ভালোবাসায়। বহু বিখ্যাত ব্যক্তি খেলা দেখতে এসেছিলেন, সেই পুরোনো দিনের মতো নোভাকের সমর্থনে গ্যালারিতে দেখা গেলো মারিয়া শারাপোভাকে, হেরে যাওয়ার আগেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দর্শক সমর্থন ছিল নোভাকের দিকে, এমনকি যখন মেদভেদেভ ম্যাচ জেতার জন্যে সার্ভিস করছিলেন, নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে চিৎকার করে প্রকারান্তরে তাঁকে সার্ভ করতে মনোসংযোগে বাধা দিতে থাকেন দর্শকরা। যা দেখে নোভাক বলেন, হেরে গেলেও সমর্থকদের এই অকুন্ঠ ভালোবাসা তাঁকে আপ্লুত করেছে এবং এই ভালোবাসা তিনি আগে পাননি। নোভাক মেনে নেন, যে আজকে দিনটা তাঁর ছিলোনা, এবং গ্রান্ড স্ল্যাম জেতার মতো খেলেছেন একজনই, যিনি হলেন দানিল মেদভেদেভ।
মেদভেদেভের ইন্টারভিউ ছিল খুব মজার। তিনি প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নেন, যে তাঁর মতে নোভাক ই সর্বকালের সেরা টেনিস খেলোয়াড় এবং প্রথমেই তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন তাঁকে হারানোর জন্যে এবং ইতিহাস গড়া রুখে দেওয়ার জন্যে। এরপরে তিনি প্রথম গ্রান্ড স্ল্যাম জেতার জন্যে তাঁর গোটা টিম ও ফ্যামিলি কে ধন্যবাদ জানান, এবং দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন যে যদিও আজকে সমর্থন নোভাকের দিকে ছিল, তবে গোটা টুর্নামেন্ট ধরে দর্শক যেভাবে তাঁকেও সমর্থন জানিয়েছেন তাতে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত।
সব থেকে আশ্চর্য ব্যাপার হলো, কালকেই ছিল তাঁর তৃতীয় বিবাহবার্ষিকী, এবং তিনি টুর্নামেন্ট খেলতে ব্যস্ত থাকায় তাঁর স্ত্রীর জন্যে কোনো উপহার কিনে উঠতে পারেন নি।
বিবাহবার্ষিকীর সেরা গিফটটা অবশ্য তিনি তাঁর জীবনসঙ্গিনীকে দিয়ে দিলেন, বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে জীবনের প্রথম গ্রান্ড স্ল্যাম জিতে।