টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ২৪ ইনিংসে মাত্র একবার আউট হয়েছিলেন এক অঙ্কের ঘরে, এই ২৪ ইনিংসেই মোট রান পেরিয়ে গিয়েছিল হাজারের গণ্ডি। আর তাতেই বনে গিয়েছিলেন দ্রুততম হাজারী ক্লাবের সদস্য, এই মানুষটাই প্রত্যাশার চেয়ে কম সময়ে উঠে এসেছিলেন টি-টোয়েন্টি সেরা ব্যাটারদের র্যাংকিংয়ের শীর্ষে – বলছিলাম ডেভিড মালানের কথা।
ক্যারিয়ারের শুরুটা যার এমন রঙিন তিনি নিশ্চয়ই আরও অনেক সমৃদ্ধ হবেন সময়ের সাথে সাথে – এটাই তো প্রত্যাশিত। অথচ ভাগ্যের কি লিখন, অপ্রাপ্তিতে ভরা একটা ক্রিকেট জীবনের শেষটা নিদারুণভাবে হলো তাঁর। নীরবে নিভৃতে বিদায় বলে দিলেন তিনি।
মাত্র ২২ টেস্ট, ৩০ ওয়ানডে আর ৬২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেই ইংল্যান্ডের জার্সি তুলে রাখলেন এই ব্যাটার। সমসাময়িক বাকিদের তুলনায় তাঁর অর্জনের খাতাটা নেহায়েত ছোট, তবে বিদায় লগ্নে দাঁড়িয়ে স্মৃতিচারণ করার মত অনেক কিছুই আছে। তিনি চাইলে মনে করতে পারেন পার্থ টেস্টের সেই ইনিংসকে, চাইলে মনে করতে পারেন ধর্মশালার বিশ্বকাপ সেঞ্চুরিকে।
ইংল্যান্ডের মাত্র দুইজন ব্যাটার তিন ফরম্যাটেই শতকের দেখা পেয়েছেন, তাঁদেরই একজন মালান। তবে তিন ফরম্যাটে নয়, তিনি সামর্থ্যের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছেন কেবল টি-টোয়েন্টিতে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আইসিসির সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটার হয়েছিলেন, ২০২২ সালে ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী দলের একজন।
অবশ্য সে বছরের জুন থেকে শুরু করে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়ানডেতে অবিশ্বাস্য একটা সময় পার করেছিলেন এই ডান-হাতি। পনেরো ইনিংসের ব্যবধানে পাঁচ পাঁচটি সেঞ্চুরি করে ফেলেছিলেন তিনি, বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের বিপক্ষে আরেকটি তিন অঙ্কের ইনিংস খেলেছেন।
কিন্তু কি আশ্চর্য, বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার অজুহাতে ছেঁটে ফেলা হয়েছে এই তারকাকেই, হার্ডহিটার না হওয়ার অজুহাতে টি-টোয়েন্টি থেকেও ধীরে ধীরে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে তাঁকে। আর টেস্টে তো নিজেই মানিয়ে নিতে পারেননি খুব একটা – সবমিলিয়ে তাই বিদায় বলে দিতে হলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে, সাবেক নাম্বার ওয়ান নিজের সেরাটা দিয়েও পারলেন না টিকে থাকতে, অভাগা তো বটেই।