লিটনের ভুলে ধনাঞ্জয়ার বিরল রেকর্ড

টানা দুই সেঞ্চুরি। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা যেন নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সময়টাই পার করলেন। তবে এই দুই সেঞ্চুরি হওয়ার আগেই আটকে ফেলা যেত তাকে। দুই ইনিংসে দুই দফা বাংলাদেশের ভুলে এক টেস্টে দুই সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক।

বাংলাদেশের বিপক্ষে সিলেট টেস্ট খেলতে নেমেই বিপাকে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। দলের টপঅর্ডার মুখ থুবড়ে পড়ে। তবে সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেছেন অধিনায়ক ধনাঞ্জয় ডি সিলভা। প্রথম ইনিংসে ১০২ রানের এক ইনিংসে কোন রকমে রক্ষা হয়েছিল দলের ভেবে নিয়েছিলেন। তবে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষে স্বস্তিই যেন ছড়িয়েছে তার সেই ১০২ রানের ইনিংস।

এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসেও সেই একই দশার মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা। টানা দ্বিতীয় দফা টপ অর্ডার দারুণভাবে ব্যর্থ। এবারও লঙ্কানদের ত্রাণকর্তা হয়ে আগমন ঘটে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার। ব্যাট হাতে বাংলাদেশের বোলারদের বিরক্তির কারণ হয়েছেন তিনি। নিখাদ টেস্ট ইনিংস আর টেম্পারমেন্টের মঞ্চায়ন ঘটিয়েছেন সবুজে ঘেরা সিলেট স্টেডিয়ামে।

দুইটি ইনিংসই খেলেছেন দারুণ দক্ষতায়। বাংলাদেশের বোলারদের ভাল দিনকেও শেষ অবধি সাদামাটা একটা দিনে পরিণত করেই থেমেছেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে তো ম্যাচ থেকে বাংলাদেশকে ছিটকে দেওয়ার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করেন তিনি। তার দ্বিতীয় শতকের কল্যাণে রানপাহাড়ের মানসিক চাপে পিষ্ঠ বাংলাদেশ।

ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ডি সিলভা। এই পজিশনে বিগত ১৫ বছরে টুইন সেঞ্চুরির ঘটনা ঘটেনি। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার তিলাকারত্নে দিলশান এই রেকর্ডটি গড়েছিলেন দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে। ছয় নম্বর ব্যাটার হয়েও দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির ঘটনা ঘটেছেই স্রেফ তিনবার। ১৯৮০ সালে অ্যালান বর্ডার প্রথমবারের মত এই কীর্তি গড়েন।

তবে ধনাঞ্জয়ের এমন রেকর্ডের বিপরীতে বাংলাদেশের না থাকার সুযোগ ছিল। প্রথম ইনিংসে ৯৫ রানে যখন ধনাঞ্জয়া ব্যাট করছিলেন, তখন লেগ বিফোরের জোরালো আবেদন করে বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের করা সেই বলটি স্ট্যাম্পেই আঘাত করত। তবুও আম্পায়ারের কাছে তা আউট মনে হয়নি। বাংলাদেশও পরবর্তীতে রিভিউ নেয়নি।

ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটেছে দ্বিতীয় ইনিংসেও। ধনাঞ্জয়ার তখন রান ৯৬। তার ব্যাটের খুবই আলতো খোঁচা লেগে বল জমা হয় লিটন দাসের দস্তানায়। বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক কোনরকম আবেদনই করেননি। আর সে সুযোগগুলো কাজে লাগিয়েই নিজের ইনিংস বড় করেছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।

এই দুই ক্ষেত্রেই লিটন দাস রাখতে পারতেন ভূমিকা। তবে মনোযোগ হারিয়ে, এমন ‘হাফচান্স’ গুলো কাজে লাগাতে পারেনি বলেই সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের এমন বেহাল দশা। পরাজয় এড়ানোই দায় হয়ে দাঁড়াবে বাংলাদেশের জন্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link