‘সেফটি ফার্স্ট’ ক্রিকেট! যে কারণে মাঠের বাইরে কুলদীপ

আসলে ম্যানেজমেন্ট চাইছে একাদশে এমন একজনকে, যিনি একটু ব্যাটিংও পারেন। সেই কারণে শার্দুল ঠাকুর দলে। অথচ শার্দুলের ওপর বোলিংয়ে আস্থা খুবই কম শুভমান গিলের। বেশ দেরি করেই ঠাকুরের হাতে তাই বোলিংয়ের দায়িত্ব পড়ছে।

কুলদীপ যাদবকে নিয়ে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট কী করতে চাইছে, তাঁরা নিজেরাও জানে না। কুলদীপ নিজেও হতাশ। ম্যানচেস্টারে এসে বদলে গেছে কুলদীপ যাদবের মেজাজ। সিরিজের শুরুতে লর্ডসের আগে পর্যন্ত যিনি নিয়মিত নেট সেশন করতেন, এমনকি ঐচ্ছিক অনুশীলন সেশনেও নিজে থেকেই উপস্থিত থাকতেন—সেই কুলদীপ এখন অনেকটা চুপচাপ। অনুশীলনেও আগের মতো আগ্রহ নেই।

কারণটা পরিষ্কার—তিনটা টেস্ট গেল, একটাতেও সুযোগ পাননি। অথচ স্পিনার হিসেবেই তিনিই এই মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে ধারাবাহিক পারফর্মার। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারতের বোলিং যখন একেবারে ভেঙে পড়েছে, তখন আবারও প্রশ্ন উঠেছে—কুলদীপকে কেন খেলানো হচ্ছে না? ভারতের বোলিং কোচ মরনে মরকেল বলেন, ‘কুলদীপ বিশ্বমানের বোলার। ওকে দলে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু ব্যাটিং ব্যালান্সের কারণে সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না।’

আসলে ম্যানেজমেন্ট চাইছে একাদশে এমন একজনকে, যিনি একটু ব্যাটিংও পারেন। সেই কারণে শার্দুল ঠাকুর দলে। অথচ শার্দুলের ওপর বোলিংয়ে আস্থা খুবই কম শুভমান গিলের। বেশ দেরি করেই ঠাকুরের হাতে তাই বোলিংয়ের দায়িত্ব পড়ছে।

শুধু কুলদীপ নয়, বিতর্ক হচ্ছে অনশুল কাম্বোজ নিয়েও। চোট কাটিয়ে মাত্র দুই দিন আগে দলে যোগ দিয়েছেন, ম্যাচ ফিটনেস নিয়েও প্রশ্ন ছিল। তবুও তাঁকে খেলানো হয়েছে। অথচ প্রথম ইনিংসেই প্রমাণ হয়েছে, এখনও পুরোপুরি ফিট নন, গতি-ধার কিছুই নেই।

বুমরাহকে হালকা রাখার জন্য কাম্বোজকে খেলানো হয়েছিল—এমনটাই বলা হয়েছে। বাস্তবে দেখা গেছে, কাম্বোজ ১৮ ওভার বল করেছেন, বুমরাহ করেছেন ৩৩ ওভার! এর মাঝে কুলদীপ নেটেই পড়ে আছেন। কেউ কেউ ওকে একাদশে রাখার পক্ষে ছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্ট আবারও সেই পুরনো ‘সেফ অপশন’ বেছে নিয়েছে।

মোট কথা, দল ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে নিজেদের সেরা স্পিনারকেই মাঠের বাইরে রেখে দিয়েছে। কুলদীপ ফর্মে আছে, ফিট আছে—তবু শুধু ব্যাটিং পারদর্শীতা নেই বলেই জায়গা মিলছে না। প্রশ্ন হচ্ছে, একজন বোলারকে কি আগে বোলিং দিয়েই বিচার করা উচিত না?

এত হিসেব-নিকেশের ভিড়ে ভারত যেন ভুলে যাচ্ছে—ম্যাচ জিততে হলে উইকেট নেওয়াই সবচেয়ে বড় কৌমল। আর উইকেট তোলার লোককেই যদি বাইরে বসিয়ে রাখে, তাহলে ফলাফল নিয়ে আক্ষেপের সুযোগ নেই। নিরাপদ একাদশ নির্বাচনের বড় বিপদটা এখানেই।

Share via
Copy link