একটা ছক্কা, একটি ছক্কায় মহেন্দ্র সিং ধোনি প্রায় অমর হয়ে গেছেন ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে। সমকক্ষ না হোক, তবে ইতিহাসে ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন দীনেশ কার্তিক। তবে ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে না হোক বাংলাদেশের ইতিহাসে অবশ্যই জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
ক্যারিয়ারের একটা নতুন মোড়ে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে ভাসিয়েছিলেন বিষন্নতার নোনা জলে। তার ওই এক ছক্কায় বহুজাতিক কোন টুর্নামেন্ট জয়ের আশা বাংলাদেশের হয়েছিল পণ্ড। নিদাহাস ট্রফি জয়ের মাঝে তিনিই তো হয়েছিলেন বাংলাদেশের বাঁধার কারণ।
তবে দীনেশের জন্যে হয়ত তা ছিল অতি সাধারণ এক দিন। কেননা তার ক্যারিয়ারটাই তো বেজায় রোমাঞ্চকর। ক্যারিয়ার যখন প্রায় শেষের দিকে তখন হুট করেই জাতীয় দলে নিজের জায়গা ফেরত পেলেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত এক ফিনিশার রুপে নিজেকে প্রমাণ করলেন। তবে জাতীয় দলে সে ধারা খুব একটা অব্যাহত রাখতে পারেননি।
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও খেলে ফেলেন তিনি। তবে সুখের সময় তার কখনোই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি সাথে তার অদৃশ্য এক প্রতিযোগিতা ছিল। সে প্রতিযোগিতায় তিনি উৎরে যেতে পারেননি ধোনিকে। নিজের জায়গাটা থিতু করতে পারেননি নীল রাঙা জার্সিতে।
কোন ফরম্যাটেই একটানা খেলে যেতে পারেননি। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে দীর্ঘদিনের নির্বাসনে ছিলেন তিনি। ২০১০ সালের পর ২০১৮ সালে তিনটি টেস্ট খেলেই আবার থমকে যায় টেস্ট ক্যারিয়ার। সাদা বলে অনিয়মিত আসা যাওয়া লেগে ছিল তার।
সেই ক্যারিয়ারটাকে আর দীর্ঘায়িত করতে চাইলেন না দীনেশ কার্তিক। সকল ধরণের ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন। জাতীয় দলের ফেরার লড়াইটা আরও একবার করতে চাইলেন না। আলো-আধারির খেলাটায় নিজেকে আর জড়াতে চাইলেন না।
সম্ভবত প্রত্যাশা করেছিলেন ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে তিনি পাবেন জায়গা। তবে আইপিএলের সাদামাটা পারফরমেন্স তার সেই স্বপ্নকে করেছে ম্লান। অভিমান তো সেই ২০০৪ থেকে শুরু হওয়া যাত্রার পরতে পরতে লেপ্টে আছে।
নিজেকে অভাগা ভাবেন হয়ত কার্তিক। তবে মাঝে মধ্যে বিধাতা ভাগ্যে লিখে রাখেন ভিন্ন কিছু। ক্রিকেটার হিসেবে তিনি হয়ত সাদামাটা ছিলেন, কিংবা ছিলেন না। তবে ক্যারিশম্যাটিক এক চরিত্রের আড়ালে থেকে যেতে হয়েছে তাকে। জমকালো দুনিয়ার আলোর কেন্দ্র ছিল কখনোই দীনেশের।