টি-টোয়েন্টি মানেই তো মারকাটারি ক্রিকেট, আর যদি ফ্রাঞ্চাইজি লিগ হয় তাহলে তো কথা-ই নেই; বিভিন্ন কারণে মাঠে রান উৎসব দেখতে চান আয়োজকরা। কিন্তু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) হাঁটছে উল্টো দিকে; গতবারের তুলনায় সদ্য বিদায়ী টুর্নামেন্টে রান কম হয়েছে, বেড়েছে ডট বলের সংখ্যা।
২০২৪ সালের বিপিএলে মোট বল করা হয়েছে ১০৫৫৯টি, এর মধ্যে ৪৪০২টি বলে কোন রান হয়নি; শতাংশের মানদণ্ডে পুরো আসরে ডট বলের হার ৪১.৬৯ ভাগ। অর্থাৎ গড় হিসেব অনুযায়ী, ১২০ বলের ম্যাচে প্রায় ৫০ বল রান না নিয়েই খরচ করেছেন ব্যাটাররা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে তুলনা করলে এই পরিসংখ্যান শঙ্কা জাগানিয়া।
অথচ আগের বিপিএলে ৪০.৪২ শতাংশ বল ছিল ডট বল; যার মানে প্রতি ইনিংসে আনুমানিক ৪৮টি ডট বল আদায় করে নিয়েছেন বোলাররা। ডট বল ফ্রিকোয়েন্সিতে পরিবর্তন এসেছে; ২০২৩ সালে ফ্রিকোয়েন্সি ছিল ২.৪৭ কিন্তু এই আসরে সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ২.৪ এ।
সবমিলিয়ে বলা যায়, এক বছরে বিপিএলের ব্যাটারদের মানসিকতার কোন পরিবর্তন হয়নি। এখনো মান্ধাতা আমলের এপ্রোচে ব্যাটিং করতে অভ্যস্ত তাঁরা। এমনকি সেরা ব্যাটারদের অনেকে রান করেছেন ঠিকই কিন্তু ডট বলের পরিমাণ কমাতে পারেননি।
আবার মোট রানের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে আছে ২০২৪ বিপিএল। নবম আসরে একজন ব্যাটার পাঁচশ রানের গন্ডি পেরিয়েছিলেন, দু’জন করেছিলেন চারশের বেশি রান। কিন্তু এবার কেবল দু’জন চারশ রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পেরেছেন।
টি-টোয়েন্টিতে রান করতে হয় দ্রুত, এর মানে কিন্তু এমন না যে কেবল বাউন্ডারি হাঁকাতে হবে। বাজে বলে বাউন্ডারি মারার পাশাপাশি নিয়মিত স্ট্রাইক রোটেশন করতে পারলে সহজেই দ্রুত গতিতে রান করা যায়। অথচ রক্ষণাত্মক হতে গিয়ে ডট বলের চাপে পড়েন ব্যাটাররা, যার প্রভাব পড়ে দলীয় সংগ্রহে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নতি করার আগে ঘরোয়া অঙ্গনে উন্নতি করতে হবে বাংলাদেশের তারকাদের। এবারের বিপিএলে সেটা হয়নি, আগামীতে হবে কি না তারও নিশ্চয়তা নেই।