টেস্ট ক্রিকেটের জৌলুস ফিরিয়ে আনাটাই ছিলো লক্ষ্য। ২০১৯-২০২১ চক্রে আইসিসি শুরু করে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। আর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবার পর থেকেই কিছুটা উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে টেস্ট ক্রিকেটে। টেস্ট ক্রিকেটে দেখা গেছে কিছু উত্তেজনাকর কিছু ম্যাচ। ফিরে এসেছিলো ক্রিকেটের কিছু উদ্দীপনা।
এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ছিলো নয়টি টেস্ট খেলুড়ে দেশ। তারা নিজেদের মধ্যে অনেকগুলো টেস্ট সিরিজ খেলেছিলো। যেগুলো ছিলো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। আর সব শেষে এখন শুধু অপেক্ষা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম শিরোপা কার হাতে উঠে এটার। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে লড়াই করবে ভারত এবং নিউজিল্যান্ড।
ভারত অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়া হারানোর জন্য যে যুদ্ধ করেছে তাতে ভারতকে আপনি এগিয়ে রাখতেই পারেন। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে নিউজিল্যান্ডও এসেছে দূর্দান্ত ভালো পারফর্ম করে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা কার হাতে উঠবে সেটা সময়ই বলে দেবে।
ফাইনালের আগ পর্যন্ত এই চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা পারফরমারদের নিয়ে আমরা করে ফেললাম একটি একাদশ।
- রোহিত শর্মা (ভারত)
রোহিত শর্মার ক্যারিয়ারের শুরুতে ছিলেন একজন লোয়ার-মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে জাতীয় দলে তাঁর কাজ ছিলো ইনিংসের শেষের দিক ঝড় তোলা। কিন্তু এই রোলে কখনই সফল ছিলেন না তিনি। এরপর ২০১৩ সাল থেকে তাঁকে খেলানো হয় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে। এখান থেকেই সফল এবং জাতীয় দলে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করে নেন তিনি।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে স্থায়ী হবার পরই টেস্টে অভিষেক হয় রোহিত শর্মার। বিশেষ করে বললে, শচীনের ক্যারিয়ারের শেষ সিরিজে অভিষেক হয় তাঁর। কিন্তু মায়াঙ্ক আগারওয়াল, পৃথ্বি শ দের মত তরুণ ওপেনারদের উত্থানের কারণে টপ অর্ডারে নিজের জায়গা করতে পারছিলেন না। তাদের ইনজুরি জনিত সমস্যার কারণে টপ অর্ডারে সুযোগ পান তিনি। এরপর প্রায় পুরো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ জুড়েই ওপেনিংয়েই খেলেছেন তিনি।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে ১১ ম্যাচে ১০৩০ রান করেন রোহিত শর্মা। টুর্নামেন্টে তার সেরা স্কোর ছিলো ২১২ রান। এই রান করেছেন ৬৪.৩৭ গড়ে।
- ডিন এলগার (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকার এক ঝাক অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের বিদায়ের পরই জাতীয় দলে সুযোগ পান ডিন এলগার। ভাবা হচ্ছিলো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদেরকে স্থানে নিজেকে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারবেন না তারা। কিন্তু দূর্দান্ত পারফর্ম করে এটিকে ভুল প্রমাণ করেছেন ডিন এলগার।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্য সব ওপেনাররা রান করার জন্য রীতিমত যুদ্ধ করেছিলেন সেখানে ডিন এলগার প্রায় ৪০ গড়ে রান করেছেন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ১১ ম্যাচে ডিন এলগার ৪৪.৬৩ গড়ে করেছেন ৮৪৮ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস ছিলো ১৬০ রান। এছাড়াও এই টুর্নামেন্টে দুইটি শতক এবং দুইটি অর্ধ শতক করেছেন তিনি।
ডিন এলগারের দল দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বেশ ভালো না করলেও বেশ দূর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তিনি। ওপেনিং এ ডানহাতি-বামহাতি মিলের জন্য ডিন এলগারের চেয়ে ভালো কেউ ওপেনিংয়ে আসতে পারে না।
- স্টিভ স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া)
এই একাদশের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা উচিত স্টিভ স্মিথের। কারণ এই দলে তাঁর থেকে ভালো কেউ অধিনায়ক হিসেবে ভালো হবে বলে কখনোই মনে হয় না ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের।
স্টিভ স্মিথ অস্ট্রেলিয়া দলের মেরুদন্ড। তাঁর ব্যাটের উপরেই তাকিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া। তিনি সফল হলেই সফল হবে অস্ট্রেলিয়া দল। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে সিডনিতে চোখ ধাঁধানো এক শতক করেন স্টিভ স্মিথ।
এই মুহুর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ। শুধু বর্তমান সময়ের নয়, তাঁর সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান তিনি। শুধু ব্যাটিং নয়, দলের প্রয়োজনে মাঝে মাঝেই বল হাতে হাত ঘুরাতে পারেন। তাঁর অর্থোডক্স স্পিন বেশ কার্যকরী।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে তার সর্বোচ্চ স্কোর ছিলো ২১১ রানের। স্মিথ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের রান করেছেন ৬৩.৮৫ গড়ে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে চারটি শতক করেছেন স্টিভ স্মিথ।
- মার্নাস ল্যাবুশেন (অস্ট্রেলিয়া)
প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মার্নাস ল্যাবুশেন। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৭৩.৮২ গড়ে করেছেন ১৬৭৫ রান। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের তাঁর সর্বোচ্চ রান ছিলো ২১৫।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে মার্নাস ল্যাবুশেনের পারফর্ম মনে করিয়ে দেয় মিঃ ক্রিকেট খ্যাত মাইক হাসিকে। অনেকেই মনে করেন মার্নাস ল্যাবুশেন এবং স্টিভ স্মিথের খেলা ধরনই একই। কিন্তু একটু বেশ ভালো ভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় , তাদের খেলার মধ্যে রয়েছে অনেকটাই পার্থক্য। যখন অস্ট্রেলিয়া দল ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ত্রাণ কর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন ল্যাবুশেন। দলের প্রয়োজন যেকোনো ভাবেই ব্যাট চালাতে অভ্যস্ত মার্নাস ল্যাবুশেন।
- বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ড টেস্ট দলের সহ অধিনায়ক বেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে বিবেচিত হন বেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের ২০১৯ বিশ্বকাপ জেতার অন্যতম কারিগর তিনি।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও বেশ দূর্দান্ত পারফর্ম করেছেন স্টোকস। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ব্যাট হাতে ১৭ ম্যাচে করেছেন ১৩৩৪ রান। যার মধ্যে ছিলো চারটি শতক এবং ছয়টি অর্ধশতক। দলের যেকোনো অবস্থায় নিজের ব্যাটিংকে পরিবর্তন করতে পারেন বেন স্টোকস। সর্বশেষ তিন বছরে দূর্দান্ত পারফর্ম নিজেকে করে তুলেছেন ইংল্যান্ড দলের অন্যতম ভরসা হিসেবে। ইংল্যান্ড দলের মিডল অর্ডারের অন্যতম আস্থার জায়গা হলেন বেন স্টোকস। শুধু ব্যাটিং নয় বোলিংয়েও বেশ কার্যকর বেন স্টোকস।
সম্প্রতি শেষ হওয়া ভারতের বিপক্ষে সিরিজে তিনি বাদে অন্যকোনো ইংলিশ ব্যাটসম্যান ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দন অশ্বিনর বিপক্ষে ব্যাটিং করতে পারে নি।
- ঋষাব পান্ত (ভারত)
পান্ত ভারতের ক্রিকেটের নতুন এক তারকা। যিনি কিনা ভারতীয় দলে এসেছেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক এবং উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনির স্থানে। ধোনির টেস্ট অবসরের পর টেস্টে ভারতের উইকেট রক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। কিন্তু ঋদ্ধিমান সাহা ব্যাটসম্যান হিসেবে ঋষাভ পান্তের থেকে একটু পিছিয়ে থাকায় ভারতীয় নির্বাচকরা বেছে নিয়েছেন ঋষাভ পান্ত।
সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে বেশ দূর্দান্ত খেলেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে সিডনি টেস্টে দলের উদ্ধারকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। সেখানে শতক করে বাচিয়ে দেন দলকে। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টেও দূর্দান্ত এক শতক করেন ঋষাভ পান্ত।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৪১.৩৭ গড়ে করেছেন ৬৬২ রান।
- রবিচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত)
এই একাদশের প্রথম স্পিনার হলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। শুধু বোলিং নয়, ব্যাটিংয়েও বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন তিনি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ বাচানো বাটিং এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষের করা সেঞ্চুরি প্রমাণ করে দেয়, তিনি ব্যাটিংয়েও বেশ কার্যকর।
সাম্প্রতিক সময়ের ব্যাট এবং বল দুই দিক থেকেই ক্যারিয়ারের সেরা ছন্দে আছেন অশ্বিন। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এবারের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা অলরাউন্ডার হলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অশ্বিন নিয়েছেন ৬৭ উইকেট। আর সেরা বোলিং ফিগার হলো ১৪৫ রানে ৭ উইকেট। এই বোলিং ফিগারই এখন পর্যন্ত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের সেরা বোলিং ফিগার।
- প্যাট কমিন্স (অস্ট্রেলিয়া)
বর্তমানে টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে সেরা ছন্দে থাকা পেসার হলেন প্যাট কমিন্স। পাঁচ বছরের বিরতি দিয়ে ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন প্যাট ক্যামিন্স। এই পাঁচ বছরে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ডের বিশেষ প্রোগ্রামের আওতাই ছিলেন তিনি।
ক্যামিন্স টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা বোলার। ১৪ ম্যাচে তিনি শিকার করেছেন ৭০ উইকেট। এছাড়াও গতি, বাউন্স এবং সুইং দিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করতে বেশ দক্ষ তিনি।
বোলিংয়ের পাশাপাশি বেশ ভালো ব্যাটিং করতে পারেন। ইনিংসে৩র শেষের দিকে ব্যাট হাতে বেশ দূর্দান্ত ব্যাটিং ও করতে পারেন তিনি।
- কাইল জেমিসন (নিউজিল্যান্ড)
অভিষেকের পর থেকেই বিবেচনা করা হচ্ছে কাইল জেমিসন হবেন বিশ্বকে শাসন করা একজন বোলার। এর পাশাপাশি ব্যাটিং রেকর্ডও বেশ দূর্দান্ত। এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ছয় টেস্ট। এর মধ্যেই শিকার করে ফেলেছেন ৩৬ উইকেট। পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছেন ২২৬ রান। ব্যাটিং গড় অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানের থেকে বেশ ভালো। তাঁর ব্যাটিং গড় ৫৬.৫০।
ছোট্ট এই টেস্ট ক্যারিয়ারে একবার দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তখন তিনি তাঁর নিজের ব্যাটিং এবং বোলিং নিয়ে কাজ করেছেন। জাতীয় দলে ফেরার পর বোলিং এর পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও বেশ উন্নতি করেছেন তিনি।
তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং হল ৪৮ রানে ৬ উইকেট। এছাড়াও ম্যাচে তাঁর সেরা বোলিং ফিগার ১১৭ রানের বিনিময়ে ১১ উইকেট। ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ৭০.৬২।
- টিম সাউদি (নিউজিল্যান্ড)
টিম সাউদি নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা বোলার। পুরো টেস্ট ক্যারিয়ারে ৭৭ টেস্ট শিকার করেছেন ৩০২ উইকেট।
তাঁর করা আউট সুইংগার ব্যাটসম্যানদেরকে বেশ পরীক্ষার মধ্যে ফেলতে পারে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ টেস্ট খেলতে পেরেছেন টিম সাউদি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে ২০.৬৬ গড় এবং ২.৬৬ ইকোনমি রেটে বোলিং করেছেন তিনি। ফাইনালে ভারতকে বেশ ভোগাতে পারেন এই পেসার।
কাইল জেমিসন, প্যাট কমিন্সের মত তিনিও ইনিংসের শেষের দিকে বেশ ভালো ব্যাটিং করতে পারেন। যা কিনা ফাইনালে ভারতীইয় দলের জন্য বেশ চিন্তার কারণ।
- স্টুয়ার্ট ব্রড (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসার নাম স্টুয়ার্ট ব্রড। ইংল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা টেস্ট বোলারও স্টুয়ার্ট ব্রড।
২০০৭ সালে স্টুয়ার্ট ব্রড যখন এক ওভারে ছয় ছক্কা খান, তখন অনেকেই স্টুয়ার্ট ব্রডের ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলেছিলেন। কিন্তু তিনি এখান থেকে ফিরে এসে নিজেকে প্রমান করেছেন। টেস্ট চ্যম্পিয়নশীপে ৬৯ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীদের তালিকায় দুই নাম্বারে অবস্থান করছেন তিনি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের প্রতিটা সিরিজেই সফল ছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। একমাত্র ভারতের বিপক্ষে সিরিজে জ্বলে উঠতে পারেননি তিনি। এছাড়াও ইংল্যান্ডের রোটেশন পলিসির কারণেও সব টেস্ট খেলতে পারেননি তিনি। খেলতে পারলে হয়তো আরো ভালো পারফর্ম করতে পারতেন স্টুয়ার্ট ব্রড।