‘টস জয় তো ম্যাচ জয়’ – ব্যাপারটা শতভাগ যে সত্যি সেটার প্রমাণ চলতি ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ।
আজই সমাপ্ত হওয়া তিন টি-টোয়েন্টির তিন ম্যাচেই টস জয়ী দল ম্যাচে জয় পেয়েছে। অবশ্য টস জয়ী দল তিন ম্যাচেই আগে ফিল্ডিং করেছে। বাটলারের ঝড়ে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে ইংলিশরা! কোহলির ইনিংসকে পাথর চাপা দিয়ে মোতেরায় ব্যাট হাতে এদিন ঝড় তুলেছেন জস বাটলার। কোহলি-বাটলারের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হাসিটা অবশ্য বাটলারই হেসেছেন।
এদিন মোতেরায় দর্শকহীন তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ম্যাচের মতোই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। মাত্র ২৪ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বিরাট কোহলির দল। টানা চতুর্থ ম্যাচ ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেন লোকেশ রাহুল! এদিনও বিদায় নেন শূন্য রানে। গত চার ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ বলে মাত্র ১ রান! তিন ম্যাচে ফিরেছেন শূন্য রানে। আগের ম্যাচে ঝড় তোলা অভিষিক্ত ঈশান কিষান এদিন ফেরেন মাত্র ৪ রানে। সুযোগ পাওয়া রোহিত শর্মা করেন ১৭ বলে ১৫ রান। চতুর্থ উইকেটে রিশভ পান্টকে নিয়ে জুটি বাধেন বিরাট। ৪০ রানের ধীরগতির জুটির পথে পান্ট আউট হন ব্যক্তিগত ২৫ রানে। একপ্রান্ত আগলে রেখে বিরাট দলের হাল ধরলেও বাকিদের আশা যাওয়ার মিছিলে দলীয় ১৫ ওভার শেষে দলীয় রান পেরোয়নি নব্বইও!
৮৬ রানে ৫ উইকেট হারানো পর একসময় মনে হচ্ছিলো প্রথম ম্যাচের মতোই ১২০-২৫ এর আশেপাশে রান করবে ভারত, কিন্তু আরেকপ্রান্তে অধিনায়ক নিজে ভাবছিলেন আরেক কাব্য গড়ার কথা! ব্যাট হাতে আরেক প্রান্তে ঝড় তুলেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। প্রথম ২৯ বলে ২৮ রান করা বিরাট শেষ ১৭ বলে করেন ৪৯ রান! ৫ চার ও ৪ ছক্কায় মোতেরায় ঝড়ো ফিনিশিং দেন তিনি। ৪৬ বলে ৭৭ রানে অপরাজিত থাকেন বিরাট! তার ব্যাটিং ঝড়েই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৫৬ রান সংগ্রহ করে ভারত। আরেক প্রান্ত হার্দিক পান্ডিয়া ইনিংসের শেষ বলে আউট হন ১৫ বলে ১৭ রান করে, ইংলিশদের পক্ষে মার্ক উড নেন ৪ ওভারে ৩১ রানে ৩ উইকেট।
জবাবে লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দলীয় ২৩ রানে ১২ বলে ৯ রান করে আউট হন জেসন রয়। আগের দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেও এদিন ফেরেন খালি হাতেই। তবে আগের দুই ম্যাচে নীরব বাটলার এদিন ব্যাট হাতে মোতেরার বুকে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছড়ান! তার ব্যাটিং ঝড়েই সহজ জয় পায় ইংলিশরা। দ্বিতীয় উইকেটে ডেভিড মালান ১৭ বলে ১৮ রানে ফিরলেও এক প্রান্তে মার মার কাট কাট ব্যাটিং করতে থাকেন বাটলার! মাত্র ২৬ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় তিনি টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি পূর্ণ করেন। তার করা ১১টি ফিফটির ৭টি এসেছে ওপেনিং করা ১৭ ইনিংসে। বাকি ৪ ফিফটি করেছেন মিডল অর্ডারে খেলা ৫২ ইনিংস থেকে।
তার ব্যাটিং ঝড়ে মোতেরার প্যাভিলিয়নে দর্শক বনে গিয়েছিলেন মরগান-স্টোকসরা। প্যাড পায়ে মরগান-স্টোকসরা ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকলেও বেয়ারস্টোকে সাথে নিয়ে বাকি কাজটা সহজেই শেষ করেন বাটলার। ১০ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাটলার-বেয়ারস্টোরা। বাটলার অপরাজিত ৫৩ বলে ৮৩ আর বেয়ারস্টো করেন অপরাজিত ২৮ বলে ৪০ রান।
এই জয়ে সিরিজে ২-১ এ এগিয়ে গেলো সফরকারীরা। মোতেরায় দর্শকহীন তৃতীয় ম্যাচে টেলিভিশনের পর্দায় দর্শকরা উপভোগ করলো কোহলি-বাটলারের ব্যাটিং ঝড়। ব্যাট হাতে ছন্দে থাকা বাটলার-কোহলিরা নিজেদের দিনে কতটা ভয়ংকর হতে পারেন সেটিরই পুনরাবৃত্তি দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব।