কেন তাকে নিয়ে আন্দোলন করেছিল এই তল্লাটের পাগলাটে ভক্তরা, সেটাই বোঝালেন ফাহমিদুল ইসলাম। বাংলাদেশের জার্সিতে নিজের অভিষেক ম্যাচে দূর্দান্ত ছাপ ফেলে যেতে পারলেন তিনি। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার গুডবুকে ঢুকে যেতে অন্তত পেরেছেন তিনি। স্রেফ গোলটা পেয়ে গেলেই হতো ষোলকলা পূর্ণ।
বাম পাশ থেকে ভীতির সৃষ্টি করতে পেরেছেন তিনি, যতক্ষণই তিনি মাঠে ছিলেন। ঐপাশটা থেকে দ্রুততার সাথে ডি-বক্সে ঢুকে গোলবারে শট চালিয়েছেন। ড্রিবল পাস্ট করেছেন ভুটানের রক্ষণকে। মাঠের বাম দিকটায় তার প্রভাবটা ছিল প্রচণ্ড স্পষ্ট। গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেছেন তিনি বেশ কয়েকটি। কিন্তু গোল পাওয়া হয়নি।
প্রায় ৬০ মিনিট মাঠে ছিলেন ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ ফুটবলার। এই সময়ে ১৭ খানা সঠিক পাস তিনি দিয়েছেন। পায়ের কারিকুরিতে ভুটানের খেলোয়াড়দের ফাউল করতে বাধ্য করেছেন। দারুণ সব ক্রস বাড়িয়ে দিয়েছেন ডি-বক্সের মধ্যখানে। একজন উইঙ্গারের কাছ থেকে ঠিক যা যা প্রত্যাশিত, তার সবটুকুই নিঙড়ে দিয়েছেন ফাহমিদুল।
তার প্রভাব ঠিক কতটুকু ছিল তা অবশ্য উপলব্ধি করা গেছে তিনি বদলি হিসেবে মাঠ ছাড়ার পর। তার জায়গায় খেলতে নামেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। এরপরই যেন বাংলাদেশের আক্রমণভাগের বা-পাশটা বেশ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। ফাহিম তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। তাছাড়া বল নিয়ে ডি-বক্সের কাছাকাছি থেকে ভয়ংকর কোন ক্রস তিনি করতে পারেননি।
ফাহমিদুলের বয়সটা কম। ইতালির চতুর্থ স্তরের লিগে খেলা এই তরুণ বাংলাদেশের আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতেও একটু বেগ পোহাচ্ছেন হয়ত। তবুও যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, ততক্ষণই তিনি বলের জন্যে এগিয়ে গেছেন। প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল কেড়ে নেওয়ার তাড়না ছিল।
এই লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করবার তীব্র বাসনা তাকে ফিরিয়ে এনেছে ঘরের মাঠে। জাতীয় স্টেডিয়ামে তার জন্যে আন্দোলন করা দর্শকদের চোখে তৃপ্তি দিয়ে গেলেন তিনি। অপাত্রে যে দর্শকরা নিজেদের আবেগ ও সময় নিয়োগ করেননি- ফাহমিদুল সেটাই জানান দিলেন। নিজের পারফরমেন্সে বুঝিয়ে দিলেন- ‘আমি থাকছি’।