তৃতীয় আম্পায়ারের শিকারেও সবার আগে

আধুনিক ক্রিকেটে প্রতিটা রান কিংবা উইকেট কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে হার ও জয়ের ব্যবধানও খুবই কম হয়। ফলে এখানে আম্পায়ারদের কাছ থেকে নিখুঁত সিদ্ধান্ত আসাটা ভীষণ জরুরি হয়ে উঠেছে।

একটা রান আউটের সিদ্ধান্ত কিংবা একটা বাউন্ডারির সিদ্ধান্ত পাল্টে দিতে পারে মুরো ম্যাচের চিত্র। এই কারণেই এখনকার সময়ে ক্রিকেটে থার্ড আম্পায়ার এত গুরুত্বপূর্ণ। থার্ড আম্পায়ার ছাড়া এখন কোন ক্রিকেট ম্যাচ যেন চিন্তাই করা যায় না।

মাঠে মুহূর্তের মধ্যেই নানা ঘটনা ঘটে যায়। চোখের পলকে হয়তো কঠিন কোন এলবিডব্লিউ বা অন্য কোন সিদ্ধান্ত দিতে হয় আম্পায়ারদের। ফলে সবসময় যে সঠিক সিদ্ধান্তই আসবে সেটা আশাও করা যায়না। সেজন্য এখনকার ক্রিকেটে থার্ড আম্পায়ারের গুরুত্ব এতটা। এছাড়া প্রযুক্তির যথাযত ব্যবহার করে ক্রিকেট খেলাটাকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলেন থার্ড আম্পায়াররা। আর এখন ডিআরএস প্রযুক্তি চলে আসায় তৃতীয় আম্পায়াররা নিছক আর দর্শক নন, তাঁরা ক্রিকেটের অপরিহার্য্য অংশ।

তবে ক্রিকেটের একেবারে আদিকাল থেকে নিশ্চই এই থার্ড আম্পায়ারের ব্যবস্থা ছিল না। বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এসেই ক্রিকেটে এই নতুন সংযোজন হয়। কবে প্রথম থার্ড আম্পায়ার ব্যবহার করা হয় এটা নিয়েও অনেকের মনে আছে ব্যাপক কৌতূহল। এছড়া থার্ড আম্পায়ার দিয়ে প্রথম কোন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছিলেন তা নিয়েও আগ্রহের শেষ নেই। এইসব প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যাবে এখানে।

ক্রিকেটে থার্ড আম্পায়ার প্রথম ব্যবহার করা হয় ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে একটি টেস্ট ম্যাচে। ১৯৯২ সালে ডারবানে সেই টেস্টটি অনুষ্ঠিত হয়। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম থার্ড আম্পায়র হিসেবে ছিলেন কার্ল লাইবেনবার্গ। সেই ম্যাচেই তিনি দারুণ একটি রান আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।

তখন মাত্র ১১ রানে ব্যাট করছেন শচীন টেন্ডুলকার। একটা বল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে পাঠিয়ে রান নেয়ার জন্য দৌড় দিলেন। তবে অপর প্রান্ত থেকে রবি শাস্ত্রী তাঁকে ফেরত পাঠালেন। সেই সময় জন্টি রোডসের থারুন এক থ্রোতে উইকেট ভেঙে যায়। তবে রান আউটের সিদ্ধান্ত নেয়াটা বেশ কঠিন ছিল। বেনিফিট অব দ্য ডাউট তখন ব্যাটসম্যানের পক্ষেই যাবার কথা।

তবে সেই সময় নেয়া হলো থার্ড আম্পায়ারের সাহায্য। থার্ড আম্পায়র দেখে শুনে শচীন টেন্ডুলকারকে আউট ঘোষণা করলেন। ফলে থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে প্রথম আউটের স্বীকার হয়েছিলেন ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link