অধিনায়ক হিসেবে তাঁর বিদায় ছিল সন্নিকটে। ব্যাটে রান নেই, অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ। জবাব দেওয়ার জন্য একটা মঞ্চ খুঁজছিলেন শান মাসুদ।
আর সেটা তিনি পেয়ে গেলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুলতান টেস্টে। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। ব্যাট হাতে দু:সময় কাটিয়ে পেলেন নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি।
গত কয়েক বছরে জীবনের বিভিন্ন রূপ দেখেছেন। প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হিসেবে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। আবার সুযোগ কাজে না লাগানোর মূল্য চুকাতে দল থেকে বাদও পড়েছেন। মাঝে নিজের ব্যক্তিগত জীবনেও হয়েছে ওলট-পালট, যার জন্য পাল্টে ফেলেছেন নিজের জীবনদর্শন।
তবু তিনি ফিরে এসেছেন, ঘরোয়া লিগ কিংবা কাউন্টি সবখানেই রান করে নির্বাচকদের বাধ্য করেছেন দলে ডাকতে। টপ অর্ডারে ধীরগতির ব্যাটিং কিংবা মিডল অর্ডারের ফর্মহীনতায় ভোগা পাকিস্তানের এবারের বিশ্বকাপে ট্রাম্পকার্ড হয়ে উঠতে পারেন শান মাসুদ।
জাতীয় দলে আসার আগেই প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে নামডাক ছিল শান মাসুদের। ফলে টেস্ট আর ওয়ানডেতে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক খুব একটা সময় লাগেনি। কিন্তু তরুণ মাসুদ সেসময় ভালো করতে পারেননি, ফলে ছিটকে যান জাতীয় দলের দৌড় থেকে। ঘরোয়া ক্রিকেটেও সে সময়টাতে পুরনো ছন্দ ফিরে পাচ্ছিলেন না। এরমাঝে পরলোকগমন করেন তার বোন।
বোনের মৃত্যুতে শুরুতে ভেঙে পড়েছিলেন শান, পুরো পৃথিবী যেন একাকী হয়ে গিয়েছিল তার জন্য। কিন্তু ধীরে ধীরে ফিরে পেয়েছেন নিজেকে, মানসিকভাবে আরো দৃঢ় হয়েছেন। বুঝতে শিখেছেন জীবনের অর্থ। গত একবছর ধরে ছিলেন নিজের চূড়ান্ত ফর্মে, যে টুর্নামেন্টেই খেলেছেন ছিলেন রান তালিকার শীর্ষে।
ঘরোয়া কায়েদে আজম ট্রফি হোক কিংবা ইংল্যান্ডের কাউন্টি, সবখানেই রান করে গেছেন সমানতালে। আর এখন তো তিনি টেস্ট দলের নেতা। বাজে শুরুর পর এবার ব্যাটটাও হাসতে শুরু করেছেন। শান ছড়াচ্ছে অধিনায়ক মাসুদের ব্যাট!