নতুন অজি কোচের পাঁচ চ্যালেঞ্জ

অস্ট্রেলিয়া তাঁদের নতুন কোচের নাম ঘোষণা করেছে। অজিদের দায়িত্ব নিবেন এবার খানিকটা অপরিচত মুখ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড। এই কোচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারও বেশ সংক্ষিপ্ত। অজিদের হয়ে মাত্র ৪ টি টেস্ট ম্যাচেই থেমে গিয়েছিল তাঁর ক্যারিয়ার।

তবে এই সাবেক অজি অলরাউন্ডার কোচ হিসেবে ইতোমধ্যেই নাম কুড়িয়েছেন। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বোলিং কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। তবে এবার ম্যাকডোনাল্ডের কাঁধে বড় দায়িত্ব। অস্ট্রেলিয়ার কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেয়া ম্যাকডোনাল্ডের সামনে আছে বড় পাঁচটি চ্যালেঞ্জ।

  • টেস্ট দাপট ধরে রাখা

অস্ট্রেলিয়া অ্যাশেজ সিরিজ জিতলো দারুণ ভাবেই। তবুও টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের সেরা সময় পার করছিল না অজিরা। যেটা অস্ট্রেলিয়ার সর্বশেষ কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের বিদায়েরও অন্যতম কারণ ছিল। তবে ম্যাকডোনাল্ডের অধীনে শুরুটা ভালোই করেছে অজিরা।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে এসেছে। ২০১১ সালের পর এটি এশিয়ার মাটিতে প্রথম অস্ট্রেলিয়ার কোন সিরিজ জয়। এছাড়া ২০১৬ সালের পর এই প্রথম বিদেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতলো অজিরা। তবে অজিদের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মাটিতেও টেস্ট জেতা এবং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা।

  • টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ধরে রাখা

একটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের চেয়েও কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে অজি কোচ ম্যাকডোনাল্ডের সামনে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ানদে শিরোপা ধরে রাখাটা নিশ্চিত করতে হবে তাঁকে। তাও সেটা আবার মাত্র ১২ মাসের ব্যবধানেই। এইতো গতবছরই আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলো অজিরা।

এ বছর আবার ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে নামবে অজিরা। যদিও অজিদের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক অ্যারোন ফিঞ্চের ফর্মটা খুব একটা ভালো যাচ্ছেনা। ফলে অজিদের দ্রত সময়ের মধ্যেই বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করার দায়িত্বটা তুলে নিতে হবে অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডকেই।

  • ওয়ানডে ক্রিকেটের ফর্মুলা

জাস্টিন ল্যাঙ্গারের সময় অজিদের সবচেয়ে কম গুরুত্ব দেয়া ফরম্যাটটা ছিল ওয়ানডে ক্রিকেট। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও অজিদের বেশ অগোছালো মনে হয়েছে। যদিও সেমিফাইনাল খেলেছল অস্ট্রেলিয়া। তবে সেমি ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরেই শেষ হয় তাঁদের বিশ্বকাপ মিশন। সব মিলিয়ে অজিদের বিশ্বকাপটা খুব একটা সুখকর ছিল না। যদিও এরপর অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে ফরম্যাটে খুব একটা খারাপ করেনি।

তবে মহামারির পর দ্বিতীয় সারির ক্রিকেটাররা এই ফরম্যাটটায় বেশি খেলেছেন। কেননা অস্ট্রেলিয়ার তারকা ক্রিকেটাররা মূলয় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। তবে এখন পুরো শক্তির দল নিয়ে প্রস্তুত হতে হবে অজিদের। কেননা ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ অজিদের খেলতে হবে ভারতের কঠিন কন্ডিশনে। আর হাতে সময় আছে মাত্র ১৮ মাস।

  • রূপান্তরের সময়

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ কিংবা এর আগেই অস্ট্রেলিয়া দলে বেশ বড় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। তিন ফরম্যাটেই বেশ বড় সড় বদল আসতে চলেছে। কেননা বিশ্বকাপের পর ডেভিড ওয়ার্নার কিংবা অ্যারোন ফিঞ্চদের আর খেলার সম্ভাবনা কম। নাথান লায়ন কিংবা উসমান খাজাদের বয়সও ৩৫ পেরিয়ে যাবে। এছাড়া ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ম্যাথু ওয়েডও অবসর নিয়ে নিতে পারেন। ফলে এখন থেকেই ম্যাকডোনাল্ডকে বিকল্পও তৈরি করে রাখতে হবে।

  • নিজের কাজে চাপ সামাল দেয়া

চার বছরের মেয়াদে জাস্টিন ল্যাঙ্গার ছুটি পেয়েছিলেন মাত্র তিনটি সিরিজে। ওদিকে আগামী ১৮ মাসও অস্ট্রেলিয়া পার করবে ভীষণ ব্যস্ত সময়। তিন ফরম্যাটেই প্রচুর ম্যাচ খেলতে হবে তাঁদের। ফলে সব সিরিজেই ম্যাকডোনাল্ডের থাকা সম্ভব নয়। তিনি কখন কিংবা কোন সিরিজে ছুটি কাটাবেন সেটি নিয়েও পরিকল্পনা করতে হবে তাঁকেই।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link